বারাকপুর: কোনও অ্যাকশন মুভির প্রেক্ষাপটকেও যেন হার মানাবে। উন্মত্ত প্রাঙ্গন, হাতে পিস্তল, একেবারে সামনের ব্যক্তি তাক করে নিয়েছেন। বন্দুকের নলের সামনে থেকে ছিটকে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন জোট প্রার্থী। আশপাশে দাঁড়িয়ে আরও বেশ কয়েকজন। সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরার ফোকাসে তিনি। কিন্তু তাতে কালো টি শার্ট পরিহিত ব্যক্তির ‘কুছ পরোয়া নেহি’। তিনি গুলি ছুড়লেন। যদি ভিড়ের মাঝে লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়েছে গুলি। নির্দল প্রার্থী ততক্ষণে দৌড়ে পালিয়ে বেঁচেছেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনের সকালে বারাকপুরের মোহনপুরে খুল্লামখুল্লা বন্দুকবাজের দাপট।
এই ছবি শিউরে ওঠার মতো। বাংলার অবস্থায় রীতিমতো চ্যালেঞ্জ করবে যে কোনও অ্যাকশন ওয়েবসিরিজের প্লটকেও। ভোটের সকালের প্রথমার্ধেই খুন হয়ে গিয়েছিলেন ৯ জন। আরেক জন খুন হতে হতে বেঁচেছেন বরাতজোরে। বেঁচে গিয়েছেন বারাকপুরে নির্দল প্রার্থী অরিজিৎ দাস।
বিরোধীদের বরাবরই অভিযোগ, শাসকদলের কর্মীরা তাঁদের বুথের ধারেকাছেই ঘেঁষতে দিচ্ছেন না। কোথাও নেই কোনও পুলিশ, কেন্দ্রীয় বাহিনী। একটা মোটামুটি ফাঁকা জায়গা, সেখানে হাতে গোনা কুড়ি পঁচিশজন। নির্দল প্রার্থী অরিজিৎ দাস সকাল থেকেই সক্রিয় ছিলেন। তিনি অভিযোগ করেন, সকাল থেকে ভোটার আটকে রাখা হচ্ছে। কিন্তু ছাপ্পা ভোট পড়ে যাচ্ছে। প্রতিবাদ করায় সমস্ত আক্রোশ গিয়ে পড়ে তাঁর ওপরে।
অভিযোগ, বুথের অদূরেই তাঁকে লক্ষ্য করে বোমা ছোড়া হয় প্রথমে। তারপরই শুরু হয় পিস্তল উঁচিয়ে তাড়া। পরপর তিন রাউন্ড গুলি ছোড়া হয়। কালো গেঞ্জি পরিহিত এক যুবককে প্রকাশ্যে সকলের সামনেই গুলি চালায়। সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরায় ধরা পড়ে সেই ছবি।
নির্দল প্রার্থী প্রথমে একটি দোকানের শেডের আড়ালে, তারপর দৌড়ে পালান। কোনওভাবে বেঁচে যান। আর টার্গেট ফেল করে পিস্তল হাতে নিয়ে হেঁটেই বেরিয়ে যেতে দেখা যায় বছর পঁচিশের ওই যুবককে। তবে তার অ্যাকশন কার্যত বদলে দিল বাংলার ছবিকে। প্রশ্ন তুলে দিল এ কোন বাংলা?