
বাদুড়িয়া: বেছে বেছে হিন্দুদের টার্গেট করে খুন। নাম বলতেই গুলিতে ঝাঁঝরা একের পর এক হিন্দু পর্যটক। পহেলগাঁওয়ে পাক মদতপুষ্ট জঙ্গিগোষ্ঠীর হাড়হিম করা হত্যাকাণ্ড দেখে শিউরে উঠেছে গোটা দেশ। ক্ষোভের সঞ্চার নাগরিক মহলে। এবার বড় সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেন বাদুড়িয়ার শিক্ষক সাবির হোসেন। কাশ্মীরে জঙ্গি হামলার প্রতিবাদে ইসলাম ধর্ম ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললেন। নিজেই জানালেন সে কথা। তবে এখনও আইনি রাস্তায় না হাঁটলেও অচিরেই আইনিভাবে ‘ধর্মহীন’ হতে চলেছেন তিনি। সাবিরের সাফ বক্তব্য, “আমরা সবসময় বলি জঙ্গিদের কোনও ধর্ম হয় না। কিন্তু এই জঙ্গিরা ধর্মীয় দৃষ্টিকোণটা ব্যবহার করেছে। ধর্ম জিজ্ঞেস করে করে মানুষকে হত্যা করেছে।”
একইসঙ্গে সাবির আরও বলছেন, “আমি কোনও ধর্মকে ছোট করছি না। কাউকে আঘাত করার বিন্দুমাত্র ইচ্ছা আমার নেই। এটা সম্পূর্ণভাবে আমার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। আমি ছোটবেলা থেকে যে পরিবেশে মানুষ হয়েছি সেখানে বরাবরই বিধর্মীদের প্রতি একটা বিদ্বেষ লক্ষ্য করেছি। আমরা সবসময় বলি জঙ্গিদের কোনও ধর্ম হয় না। কিন্তু এই জঙ্গিরা ধর্মীয় দৃষ্টিকোণটা ব্যবহার করেছে। ধর্ম জিজ্ঞেস করে করে মানুষকে হত্যা করেছি। ওরা ধর্মকেই হাতিয়ার করেছে। আমরা আগেও মুম্বই হামলা থেকে বিভিন্ন জঙ্গি হামলার ক্ষেত্রে একটি বিশেষ ধর্মের মানুষও জড়িত। আমিও সেই ধর্মীয় গোষ্ঠীর। আমি সত্যি এতে লজ্জিত বোধ করছি।”
সাবিরের দাবি, তিনি যেখানেই যান সেখানেই বারবার ধর্মের কারণে তাঁকে নানা প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়। তাঁর কথায়, “আমি কেবল মাত্র এই দায় থেকে নিজেকে সরিয়ে নিচ্ছি। আমি একজন শিক্ষক। আমি যেখানেই যাই সেখানেই আমাকে এই ধরনের প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়। কিন্তু, যে দায় আমার নয়, তা আমি কেন মাথা পেতে নেব! সেই আত্মগ্লানি থেকে আমি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আগামী দিনে সরকারিভাবে আমি নিজেকে ধর্মহীন ঘোষণা করতে চাই।”
প্রসঙ্গত, পহেলগাঁওয়ের ঘটনার পর থেকে বদলার রব উঠেছে গোটা দেশেই। রণহুঙ্কার দিয়েছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। মোদীর স্পষ্ট কথা, ‘এমন জবাব দেব কল্পনাও করতে পারবে না’। অন্যদিকে পাকিস্তানকে চাপে ফেলে ইতিমধ্যেই একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে নয়া দিল্লি। আপাতত ওয়াঘা বর্ডার আপাতত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, সিন্ধু জলবণ্টন চুক্তিও আপাতত রদ করা হচ্ছে। একইসঙ্গে পাকিস্তানিদের সমস্ত ভিসা দেওয়াও সাময়িকভাবে বন্ধ থাকছে। পাশাপাশি ভারতে থাকা পাকিস্তানিদের দ্রুত ভারত ছাড়তে বলা হয়েছে।