নৈহাটি: কংগ্রেস নয়। এবার শরিক দলগুলির সঙ্গে জোট বেঁধে উপনির্বাচনের ভোটের ময়দানে সিপিএম। এক সময়ের বাম দুর্গ হিসাবে পরিচিত নৈহাটি লিবারেশনের হাতে ছেড়ে দিয়েছে বিমানরা। এবার সেখান থেকে প্রার্থী হচ্ছেন সিপিআই(এমএল)লিবারেশন-এর দেবজ্যোতি মজুমদার। কিন্তু কেন এমন সিদ্ধান্ত সিপিএম এর? বাম নেতা পলাশ দাস জানালেন, “বৃহত্তর জোটের কথা ভেবেই নৈহাটির উপভোটে নকশাল প্রার্থী দেওয়া হয়েছে।”
পলাশ দাস বলেন, “লড়াইয়ের ময়দানে থেকে তৃণমূল ও বিজেপিকে হারাতে যারা সম্মত তাঁদেরই একত্রে রেথে এই দুই শক্তিকে হারাতে চাই। আজ গোটা বাংলা জুড়ে তৃণমূলের সঙ্গে বাংলার মানুষের লড়াই হচ্ছে। বাংলার মানুষ এখন বুঝে গিয়েছেন পরোক্ষে বিজেপিই তৃণমূলকে মদত জুগিয়েছে। ওরা সেই সেটিং ফেরাতে চায়। তবে এই দুই শক্তির বিরুদ্ধে জনগণ একত্রিত হয়েছে। আর এই দুই শক্তির বিরুদ্ধে এখন সিপিএম ও সিপিআইএমএল মিলে জনগণের আন্দোলনকে যথার্থভাবে প্রতিফলিত করব।”
গত বুধবার নৈহাটি বিধান সভার উপ নির্বাচনে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন বাম সমর্থিত নকশাল প্রার্থী দেবজ্যোতি মজুমদার। উপ নির্বাচনে তাঁর প্রধান ইস্যু পাট শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা মেটানো,চতুর্থ শ্রেণির মজুরদের সুরাহা করা ও নৈহাটির উন্নয়ন করা। মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় CPIM এর রাজ্য নেতৃত্ব পলাশ দাস,গার্গী চট্টোপাধ্যায় এবং সায়ন দীপ মিত্ররা উপস্থিত ছিলেন। পলাশ দাস বলেন, “২০২৬ এর দিকে তাকিয়ে আমরা এবার নকশাল প্রার্থীকে দিয়েছেন। বাম ঐক্য আরও মজবুত করতে আমরা নৈহাটিতে নকশাল প্রার্থীকে সমর্থন করছি।”
এর আগের একাধিক নির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে হাতে-মিলিয়ে লড়াই করেছে বামেরা। মিলে গিয়েছে ডান-বাম। যদিও ভোটের রেজাল্টে জোটের ফল খুব ভাল মোটেই হয়নি। এমনকী, গত লোকসভা নির্বাচনে একজন সাংসদও পায়নি সিপিএম। সুজন চক্রবর্তী, মহম্মদ সেলিমের মতো তাবড় নেতারা ‘মুখ থুবড়ে’ পড়েছেন ভোটের ময়দানে। এ বাংলায় ফল ভাল হয়নি কংগ্রে হার মেনেছেন পাঁচবারের সাংসদ অধীর চৌধুরীও হেরেছেন। একমাত্র মালদহ উত্তরে ‘মুখ রক্ষা’ করেছেন ইশা খান। এবার ফের ভোট। ছ’জায়গায় উপনির্বাচন। তবে এবার একাই লড়ছে কংগ্রেস। অর্থাৎ বাংলা দেখবে চর্তুমুখী লড়াই। তবে কংগ্রেস না থাকলেও সিপিএম-এর ‘আরও কাছে’ এসেছে লিবারেশন।
অতীতে অর্থাৎ ১৯৭৭ সালে কমিউনিস্ট সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই এই আসন ছিল বামেদের দখলে। রাজ্যের প্রাক্তন দাপুটে মন্ত্রী রঞ্জিত কুন্ডু নৈহাটি থেকে পরপর তিনবার বিধায়ক হিসাবে জিতে এসেছেন। এবার সেই আসন যাচ্ছে লিবারেশনের হাতে।