Crime: ‘দিনের পর দিন আমার সঙ্গে…’ সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেরই ভিডিয়ো দেখে থানায় নালিশ যুবতীর!
Habra: সোশ্যাল মিডিয়ায় আসিফের সঙ্গে কাটানো নিজের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ভাইরাল হতে দেখেন নির্যাতিতা। সঙ্গে সঙ্গে তিনি আসিফের বিরুদ্ধে হাবরা থানায় এসে অভিযোগ দায়ের করেন।
উত্তর ২৪ পরগনা: বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে দীর্ঘ কয়েকবছর ধরে সহবাস করার (Live in) পরেও প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের অভিযোগে এক যুবককে গ্রেফতার করল হাবরা থানার পুলিশ। অভিযোগ, শুধু প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ নয়, নিজের প্রেমিকার সঙ্গে কাটানো ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করে দেন ওই যুবক। তারপরেই প্রেমিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়ে থানায় যান যুবতী।
নির্যাতিতা মহিলার অভিযোগ, হাবরার বারুইহাটি গ্রামের বাসিন্দা শেখ আসিফউদ্দিন আহমেদ নামে এক যুবকের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল। দীর্ঘবছর সম্পর্কে থেকে তাঁরা সহবাসও করেছেন। অভিযোগ, আসিফ ওই মহিলাকে প্রতিশ্রুতি দেন তিনি শীঘ্রই বিয়ে করবেন। কিন্তু, সম্প্রতি বিয়ের প্রসঙ্গ এড়িয়ে যাচ্ছিলেন আসিফ। বারবার বলা সত্ত্বেও যোগাযোগ করছিলেন না। এমনকী, জোরাজুরি করলে ফল ভাল হবে না বলে হুমকিও দেন আসিফ।
এরপরেই, একদিন সকালে সোশ্যাল মিডিয়ায় আসিফের সঙ্গে কাটানো নিজের অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ভাইরাল হতে দেখেন নির্যাতিতা। সঙ্গে সঙ্গে তিনি আসিফের বিরুদ্ধে হাবরা থানায় এসে অভিযোগ দায়ের করেন। বুধবার রাতে, অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
নির্যাতিতার কথায়, “আমায় বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। আসিফ বলেছিল বিয়ে করবে। সেইজন্যই আমি রাজি হই সম্পর্ক রাখতে। কিন্তু দিনের পর দিন ও আমার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করত। পরে যখন আমি বিয়ের জন্য চাপ দিই তখন ধীরে ধীরে সরে আসে। এমনকী যোগাযোগও বন্ধ করে দেয়। আমাকে হুমকিও দেয়। পরে একদিন সকালে দেখি সোশ্যাল মিডিয়ায় ওর-আমার সমস্ত ব্যক্তিগত ছবি ভিডিয়ো ভাইরাল করে দিয়েছে। তারপরেই থানায় আসি।”
হাবরা থানার পুলিশ জানিয়েছে, পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তকে বারাসাত আদালতে পাঠানো হয়েছে। ওই যুবকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা ও অনুমতি ছাড়াই ব্যক্তিগত তথ্য পাচার-সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার ধৃতকে বারাসাত আদালতে সাতদিনের জন্য পুলিশি হেফাজতে রাখতে চেয়ে আবেদন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৫ ধারা বলছে, ভুল বুঝিয়ে সহবাস করা ধর্ষণেরই সামিল, তাই ধর্ষণের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য ৩৭৬ ধারাতেই সাজা হবে এমনটাই নির্দেশিত ছিল। তবে পরবর্তীকালে এ বিষয়ে স্পষ্ট করে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের ডিভিশন বেঞ্চ। আইনটিকে ব্যাখ্যা করে সুপ্রিম কোর্ট জানায়, এ ধরনের মামলায় প্রতিটি ক্ষেত্রে কোনও ব্যক্তির প্রতিশ্রুতি মিথ্যা বলে ধরে নেওয়া যায় না। প্রতিশ্রুতি দিয়ে পরে কোনও কারণে কোনও ব্যক্তি বিয়ে করতে অস্বীকার করতেই পারেন। অভিযুক্ত ব্যক্তি যদি ভবিষ্যতে প্রতারণার পরিকল্পনা নিয়েই মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাসের সম্মতি আদায় করেন, তবেই সেটা অপরাধ। কিন্তু বিয়ের পরিকল্পনা নিয়েও পরে কোনও কারণে সেই প্রতিশ্রুতিতে না পূরণ করতে পারলে সেটি অপরাধ নয়।
এ প্রসঙ্গে, ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৫ নম্বর ধারার ব্য়াখ্যা করে বলা হয়, কোন পরিস্থিতিতে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে তা গুরুত্বপূর্ণ। যিনি অভিযোগ করছেন তিনিই বা কেন সম্মতি দিয়েছেন তা প্রমাণ-সহ আদালতের কাছে দুই পক্ষকে পেশ করতে হবে এমনটাই নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের।
আরও পড়ুন: ‘আমার চুলের মুঠি ধরে…’, ‘ভুল’ চিকিত্সা, আহত নার্স-চিকিত্সক!