আসানসোল: অপহরণ করা হয়েছে তাঁকে। নিখোঁজ নার্সিং ছাত্রী নিজের ফোন থেকেই বাড়ির লোককে দিল বার্তা। কয়েক ঘণ্টা পর আবারও একই ফোন থেকে ওই ছাত্রীর বক্তব্য, “অপহরণকারীরা পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করছে। দু’দিনের মধ্যে তাদের দিতে হবে ওই টাকা।” ঘটনায় ভয় পেয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হন নিখোঁজ ছাত্রীর পরিবার। তারপরই বেরিয়ে আসে আসল সত্য।
রানিগঞ্জের বেসরকারি হাসপাতালের নার্সিং ছাত্রী বছর একুশের ওই যুবতী। বাড়ি আসানসোলের দিলদার নগরে। সোমবার সকালে বাড়ি থেকে হাসপাতালের জন্য বেরিয়ে গেলেও সময়মতো সেখানে পৌঁছাননি। সন্ধ্যা নাগাদ যুবতীর ফোন থেকে বাড়িতে ফোন আসে। যুবতী বলেন, তাঁকে অপহরণ করা হয়েছে। কাঁদো কাঁদো গলায় তিনি কথা বলেন তাঁর বাবার সঙ্গে। বাড়ির লোক উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। তার কয়েক ঘণ্টা পর আবারও ফোন। এবার পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ চাওয়া হয়। এদিকে যুবতীর বাবা সামান্য টোটো চালান। বড় এই মেয়ে ছাড়াও রয়েছে আরও দুই মেয়ে এবং এক ছেলে। কষ্টের সংসার। এত টাকা কোথায় তিনি পাবেন। এরপর আসানসোল দক্ষিণ থানায় তিনি অভিযোগ দায়ের করেন। যদিও অভিযোগে মিসিং ডায়েরি করা হয়। এরপর তদন্তে নামে পুলিশ। আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ বারো ঘণ্টার মধ্যে নিখোঁজ যুবতীকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে কলকাতা থেকে। উদ্ধারের পর মঙ্গলবার আসানসোল আদালতে পাঠানো হয় গোপন জবানবন্দী নেওয়ার জন্য।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই ছাত্রীর মোবাইল ট্র্যাক করে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। কলকাতার একটি হোটেল থেকে ওই ছাত্রী এবং তাঁর বিশেষ বন্ধুকে পাওয়া যায়। আসল রহস্য কী ? অপহরণ নাকি অন্য কিছু ? প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের দাবি, ওই ছাত্রী জানিয়েছে, বাড়ির লোকজন তাঁকে স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে দিচ্ছিল না। হাসপাতালে যে নার্সিংয়ের কাজ করেন, সেই কাজে বাধা দিচ্ছিল। তাঁর বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছিল। তাই বিশেষ বন্ধুর সাহায্য নিয়ে তিনি নিজেই পালিয়ে যান এবং অপহরণের নাটক করেন। ওই বিশেষ বন্ধুর বাড়ি বীরভূমে। দুর্গাপুরে গাড়ি চালান তিনি। একসময় ওই ছাত্রীর বাড়িতেই ভাড়া থাকতেন। সেখান থেকে তাঁদের দু’জনের পরিচয়। ওই বিশেষ বন্ধুকেও জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।