
আসানসোল: ওড়না দিয়ে হাত বাঁধা। কান্নাকাটি করছে কিশোরী। হোয়াটসঅ্যাপে ভিডিয়ো কলে পরিবারকে জানাল, তাকে অপহরণ করা হয়েছে। ভয় পেয়ে গেল পরিবার। অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নামল পুলিশ। পশ্চিম বর্ধমানের সালানপুর থেকে ‘অপহৃত’ ওই কিশোরীকে মহারাষ্ট্রের নাসিক থেকে উদ্ধার করল পুলিশ। তারপরই সামনে এল সত্য। জানা গিয়েছে, দশম শ্রেণির ওই ছাত্রী বাড়ি থেকে পালিয়ে নিজেই অপহরণের নাটক সাজিয়েছিল। হোয়াটসঅ্যাপ মারফত মুক্তিপণের দাবি জানিয়েছিল পরিবারের কাছে। শুক্রবার রাতে তাকে উদ্ধারের পর বাংলায় নিয়ে আসার তোড়জোড় করছে সালানপুর থানার পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নাসিকের একটি বস্তি থেকে শুক্রবার তাকে উদ্ধার করা হয়। শনিবার নাসিকের আদালতে তাকে হাজির করার পর পশ্চিমবঙ্গে ফিরিয়ে আনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে আসানসোলের শিশু সুরক্ষা কমিটির কাছে তাকে হস্তান্তর করা হবে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।
সালানপুর ব্লকের বনজেমারি এলাকার এক ইসিএল কর্মচারীর মেয়ে ওই ছাত্রী। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পারিবারিক কলহের জেরে গত ১৯ জুলাই সে নিজের ইচ্ছায় বাড়ি ছেড়ে আসানসোল স্টেশন থেকে ট্রেনে ওঠে। বিহার হয়ে গুজরাট ও মহারাষ্ট্রে পৌঁছায়। অপহরণের নাটককে বাস্তব রূপ দিতে মেয়েটি নিজেই বাড়িতে মেসেজ পাঠিয়ে তিন লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। এমনকি ভিডিয়ো কলে কান্নাকাটি করে এবং নিজের ওড়না দিয়ে হাত বাঁধা অবস্থায় নিজেকে অপহৃত দেখানোর নাটকও করে। অপহরণের নাটক করতে ছাত্রী কয়েকজনের সাহায্য নিয়েছিল বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।
সালানপুর থানার পুলিশ অপহরণের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে উত্তরপ্রদেশ-সহ বিভিন্ন রাজ্যে তদন্তকারী দল পাঠায়। কিশোরীর মোবাইলের টাওয়ার লোকেশন ট্র্যাক করে পুলিশ নিশ্চিত হয় যে সে নাসিকে রয়েছে। স্থানীয় পুলিশের সহায়তায় নাসিকের একটি বস্তিতে তাকে পাওয়া যায়। বিহারের কয়েকজন যুবক ওই বাড়ি ভাড়া নিয়েছিল। সেখান থেকেই তাকে উদ্ধার করা হয়। বিহারের ওই যুবকদের সঙ্গে তার কী করে পরিচয় হল, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দশম শ্রেণির ওই ছাত্রী ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামের মতো সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ সক্রিয়। এবং সেখানে বিভিন্ন বাইরের লোকজনের সঙ্গে তার যোগাযোগ গড়ে উঠেছিল। তবে উদ্ধারের সময় নাসিকে তার সঙ্গে অন্য কাউকে পাওয়া যায়নি। এদিকে, মেয়েকে উদ্ধারের খবর পেয়ে স্বস্তি পেয়েছে ছাত্রীর পরিবার।