দুর্গাপুর : ‘WE QUIT! আমরা ৪ জন এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যাচ্ছি। আমাদের মৃত্যুর জন্য ২ জন দায়ী।’ মৃত্যুর খানিক আগে পরিচিতদের হোয়াটসঅ্যাপে (Whatsapp) পাঠিয়েছিলেন এই মেসেজ। মেসেজ দেখে কেউ কেউ তড়িঘড়ি যোগাযোগও করার চেষ্টা করেন কিন্তু, ততক্ষণে সব শেষ। দুর্গাপুরে (Durgapur) দুই সন্তান-সহ দম্পতির রহস্যমৃত্যু জোর শোরগোল গোটা শহরে। রবিবার ভোরে ঘর থেকে উদ্ধার যুবকের ঝুলন্ত দেহ। মেঝেতে পড়ে দুই সন্তাহ সহ স্ত্রীর দেহ। সূত্রের খবর, মৃত্যুর আগে পরিবারের কয়েকজনকে মোবাইল ফোনের হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে একটি বার্তাও দেন। তা নিয়েও দানা বাঁধছে রহস্য।
রবিবার ভোরে মিলনপল্লির বাসিন্দা অমিত মণ্ডলের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয় ঘর থেকে। তার স্ত্রী, সাত বছরের এক ছেলে ও দেড় বছরের একটি মেয়ের দেহ ঘরের মেঝেতে পড়েছিল বলে জানা যাচ্ছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে য়ায় দুর্গাপুর থানার পুলিশ। ততক্ষণে বাড়ির বাইরে ভিড় জমতে শুরু করেছে কৌতূহলী জনতার। সকলের চোখেই ঘুরছে নানা প্রশ্ন। তবে তদন্তের স্বার্থে কাউকে বাড়িতে ভিতরে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। ঘটনাস্থলে আসছেন পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। খুন না আত্মহত্যা তা নিয়ে দানা বাঁধছে রহস্য। স্থানীয় বাসিন্দদের মধ্যে আবার কেউ কেউ বলছেন এটা আত্মহত্যা নয়, খুন।
তাঁদের অভিযোগ সম্পত্তির জেরেই করা হয়েছে খুন। মৃত্যুর আগের হোয়াটঅ্যাপ মেসেজ নিয়ে বাড়ছে চাপানউতর। ওই মেসেজই আবার ফেসবুকেও পোস্ট করেছেন অমিত। স্থানীয় বাসিন্দা তপন পাল বলেন, “ছেলেটির মায়ের সঙ্গে প্রায়শই সম্পত্তি নিয়ে ঝামেল হতো। যে অবস্থায় দেহ উদ্ধার হয়েছে তা দেখে মনে হচ্ছে এটা কোনওভাবেই আত্মহত্যা নয়, এটা খুন। আগে খুন করে তারপর ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।” আর এক বাসিন্দা দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “গলায় দড়ি থাকলেও মাটিতে পা ঠেকে ছিল। হাতে দড়ি বাঁধা। ওই অবস্থাতেই ও পড়ে ছিল। কোন চক্রান্তের যে ওরা শিকার হয়েছে তা আমরা বুঝতে পারছি না। আমরা চাই পুলিশ এর নিরপেক্ষ তদন্ত হোক। প্রয়োজনে সিবিআই তদন্ত হোক। যাঁরা ওদের এত বড় সর্বনাশ করল তাঁদের যেন সাজা হয়।”
মৃত্যু হয়েছে অমিত মণ্ডল (৩৬), তাঁর স্ত্রী রূপা মণ্ডল (২৭) ও দুই সন্তান নিমিত মণ্ডল (৭) ও নিশিতা মণ্ডলের (১)। এদিকে অমিতের হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ নিয়ে শোরগোল শুরু হয়েছে তাতে লেখা, “WE QUIT! আমরা ৪ জন এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যাচ্ছি। আমাদের মৃত্যুর পিছানে ২ জন দায়ী। আমার মা আর বর্ষা। মা, বর্ষা আর কৃষ্ণর যে এতো কেনও হিংসা আমাদের উপর আজও বুঝতে পারলাম না। আমরা তো তোমাদের কোনও ক্ষতি করিনি, বাবার মৃত্যুর পর থেকে আমিই সব করেছি তোমাদের জন্য। এবার তোমরা বুঝতে পারবে আমরা না থাকলে তোমাদের কি হয়! তুমি থাকো মা তোমার ভাই-ভাইপোদের নিয়ে এবার শান্তিতে, আমরা চললাম, আমাদের কোনও দরকার নেই তোমার।” ইতিমধ্যেই অমিত মণ্ডলের মাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।