
দুর্গাপুর: মানসিক ভাবে ঠিক নেই। শরীরেও রয়েছে আঘাতের ছাপ। ওই ভয়াবহ মুহুর্তের স্মৃতি এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি সে। শনিবার দুর্গাপুরের নির্যাতিতা ডাক্তারি পড়ুয়ার সঙ্গে দেখা করে এই কথাই সাংবাদিকদের জানালেন জাতীয় মহিলা কমিশনের সদস্য অর্চনা মজুমদার।
এদিন তিনি বলেন, ‘এখন তো প্রায় সবটাই জানা। শুনলাম জঙ্গলের দিকে পালাতে গিয়েই ওই ঘটনাটি ঘটেছে। সবাই তো এক সঙ্গে পড়াশোনা করে। বাবা-মাকে ছাড়া হস্টেলে থাকে। সুতরাং সেখানে বিশ্বাস করাটাই ধর্ম। সব থেকে ভয়াবহ বিষয়, কলেজের কাছে এমন একটা ঘটনা ঘটেছে। যা পশ্চিমবঙ্গে আগে কোনও দিন শুনিনি।’
ইতিমধ্যেই নির্যাতিতার সহপাঠীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে পরিবার। বারংবার, সেই সহপাঠীর ভূমিকা নিয়েই উঠছে প্রশ্ন। এমনকি, ওই তরুণীকে যখন অভিযুক্তরা ঘিরে ফেলে, সেই সময় তাঁকে সেখানে রেখেই পালিয়ে যায় ওই সহপাঠী। শনিবার মহিলা কমিশনের সদস্য অর্চনা মজুমদারকে নির্যাতিতা জানিয়েছেন, ওই বন্ধুই তাঁকে বাইরে যেতে বাধ্য় করেছিলেন। বলে রাখা প্রয়োজন, ইতিমধ্য়েই ওই সহপাঠীকে আটক করেছে পুলিশ। চলছে জিজ্ঞাসাবাদ।
মেডিক্যাল কলেজ সংলগ্ন এলাকার পরিকাঠামো নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। প্রশাসনকে গোটা পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত করেছেন বলেও জানান অর্চনা। তাঁর কথায়, ‘পাঁচটা ব্যাচে কমপক্ষে ৩০০ জন মেয়ে রয়েছে। নার্সিং স্টাফ ৫০০-র উপরে। এছাড়াও ফ্য়াকাল্টির সদস্যরাও রয়েছেন। কিন্তু তারপরেও পরিকাঠামো ঠিকঠাক নয়। আলো নেই, জঙ্গলের ভিতর দিয়ে এসেছি। একটাও সিসিটিভি ক্য়ামেরা নেই। খেতে যাওয়ার জন্য জঙ্গলের মধ্য়ে প্রবেশ করতে হচ্ছে। এগুলো নিয়ে শুধুই কলেজ কর্তৃপক্ষ নয়, এখানকার প্রশাসন যেন কোনও ব্যবস্থা নেয়। আমার পুলিশ, প্রশাসন, অধ্য়ক্ষ সবার সঙ্গে কথা হয়েছে।’
তবে এদিনের ঘটনায় সম্পূর্ণ ভাবে রাজ্য়ের দিকে তিনি দায় ঠেলে দিয়েছেন এমনটা নয়। মহিলা কমিশনের ওই সদস্যের কথায়, ‘ওই তরুণীর সম্মানে যে আঘাত হয়েছে, তা সেই কোনও দিন পূরণ করা সম্ভব নয়। এই পরিস্থিতিতে দায়ী কে? রাজ্যের পুলিশ? কলেজ কর্তৃপক্ষ? কেউ একা দায়ী নয়। এটা যৌথ দায়। কেন সিসিটিভি নেই? কেন মেয়েটিকে খাবার খেতে বাইরে যেতে হয়েছিল? সব দিকটাই দেখতে হবে।’