দুর্গাপুর: অংসগঠিত শ্রমিক নিয়োগের ক্ষেত্রে সুযোগ পান শুধুই নেতাদের আত্মীয়রা। এমন অভিযোগ তুললেন খোদ শাসক দলের বিধায়ক। দলীয় সভায় প্রকাশ্যে মঞ্চে দাঁড়িয়ে জোর গলায় এ কথা বলতে শোনা গিয়েছে পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীকে। তাঁর এই মন্তব্য সামাজিক মাধ্যমে রীতিমতো ভাইরাল। দলকে অস্বস্তিতে ফেলার জন্য যা যথেষ্ট। মূলত দুর্গাপুর স্টিল প্লান্টের কর্মী নিয়োগ নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। তাঁর দাবি, দলের পুরনো কর্মীদের নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনও সুযোগ দেওয়া হয় না। সুযোগ পাননি দুর্গাপুরের বাসিন্দারাও। বৃহস্পতিবার তাঁকে এমন মন্তব্য করতে শোনা যাওয়ার পর শাসক দলকে কটাক্ষ করছে বিরোধী দলগুলি।
বিধায়কের কথায়, “যাঁকেই জিজ্ঞেস করি, সেই বলেন অমুক নেতার শালা, অমুক নেতার ভাইপো, অমুক নেতার ভায়রাভাই। এছাড়া লোক নাই। কেন দুর্গাপুর শহরের ভূমিপুত্ররা দুর্গাপুর ইস্পাত কারখানায় চাকরি পাবেন না? ডিএসপি-তে যাঁরা ঢুকবেন, তাঁরা দুর্গাপুরের হবেন। ডিএসপি দুর্গাপুরের অধিকার।”
শ্রমিক সংগঠনের পদে থাকা নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী কার্যত দলেরই একাংশের বিরুদ্ধে স্বজনপোষণের অভিযোগ তুলেছেন। তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, কেন স্বজনপোষণ হবে এই নিয়োগের ক্ষেত্রে? পশ্চিম বর্ধমানের জেলা তৃণমূল সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর এই বক্তব্য সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই বিড়ম্বনায় পড়েছেন খোদ তৃণমূল নেতারা। সামনে লোকসভার নির্বাচনের পাশাপাশি রয়েছে দুর্গাপুর নগর নিগমের নির্বাচন। তার আগে দলের জেলা সভাপতি এমন প্রশ্ন তোলায় তোলপাড় জেলার রাজনীতি।
দুর্গাপুর শহরের সরকারি ও বেসরকারি কারখানাগুলিতে ঠিকা কর্মী নিয়োগ নিয়ে স্বজনপোষণের অভিযোগ আগেও উঠেছে। সে ক্ষেত্রে মূলত বিরোধীরাই অভিযোগ তুলতেন। আর প্রত্যেকবারই শাসক দলের নেতারা ভিত্তিহীন অভিযোগ বলে বিষয়টিকে উড়িয়ে দিতেন। এবার খোদ বিধায়কের মুখে এমন অভিযোগ শুনে কটাক্ষ করতে ছাড়ছেন না বিরোধীরা।
দুর্গাপুর পশ্চিমের বিজেপি বিধায়ক লক্ষণ চন্দ্র ঘোড়ুই বলেন, “নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে যদি কোনও অসচ্ছতা থাকে তাহলে দলের জেলার অভিভাবক হিসেবে কড়া পদক্ষেপ নিন পাণ্ডবেশ্বরের তৃণমূল বিধায়ক। মুখে এইসব বলে লাভ নেই।” আসলে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নিজের কর্তৃত্ব কায়েম করতে না পেরেই তৃণমূল বিধায়ক এমন মন্তব্য করছেন বলেও দাবি বিজেপি বিধায়কের।