Paschim Medinipur: ‘ক্লাস রুমকে বেড রুম বানিয়ে ফেলেছেন হেড স্যর, রাতেই চলে কেলেঙ্কারি’, প্রধান শিক্ষকের কীর্তি ফাঁস করলেন শিক্ষকরাই
Paschim Medinipur: ছাত্রছাত্রীদের বক্তব্য, দীর্ঘদিন ধরেই স্কুলে এ ধরনের অরাজকতা চলছে। কিন্তু সম্প্রতি একটি ঘটনায় তা অত্যন্ত নজরে আসে। স্কুলের এক ছাত্র মাঝে মাঝে স্কুল শিক্ষকের বাইকে বাড়ি যায়। এতেই নাকি ওই স্কুল শিক্ষকের ওপর চড়াও হতে যান স্কুলের প্রধান শিক্ষক।
পশ্চিম মেদিনীপুর: স্কুলের ক্লাসরুম হয়েছে প্রধান শিক্ষকের বেডরুম আর স্কুলের স্টোর রুম হয়েছে ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাস রুম। এই অভিযোগ তুলে স্কুলে বিক্ষোভ দেখালেন শিক্ষকরা। বিক্ষোভে সামিল হয় পড়ুায়ারাও। ঘটনা পশ্চিম মেদনীপুর জেলার ঝাঁকরা উচ্চ বিদ্যালয়ের।
স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। শিক্ষকদের দাবি, প্রধান শিক্ষক আস্ত একটি স্কুল রুম দখল করে রাত্রী যাপন করেন। সেই স্কুল রুমে রয়েছে দুটি বেড, রয়েছে টিভি , মেঝেতে আবার বেছানো রয়েছে কার্পেট। স্কুল রুম দখল করে রাজকীয়ভাবে থাকেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক। আর ক্লাস হয় স্টোর রুমে। শুধু তাই নয়, অভিযোগ, প্রধান শিক্ষক তাঁর ঘনিষ্ঠ ছাত্র-ছাত্রীদেরকে অন্য ছাত্রছাত্রীদের মারার নিদান দেন। এমনকি স্কুলের শিক্ষকদের দাবি, প্রধান শিক্ষক অন্যান্য শিক্ষকদের কাছ থেকে জোর করে টাকা আদায় করে।
ছাত্রছাত্রীদের বক্তব্য, দীর্ঘদিন ধরেই স্কুলে এ ধরনের অরাজকতা চলছে। কিন্তু সম্প্রতি একটি ঘটনায় তা অত্যন্ত নজরে আসে। স্কুলের এক ছাত্র মাঝে মাঝে স্কুল শিক্ষকের বাইকে বাড়ি যায়। এতেই নাকি ওই স্কুল শিক্ষকের ওপর চড়াও হতে যান স্কুলের প্রধান শিক্ষক।
স্কুলের শিক্ষক থেকে শুরু করে ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগ, প্রধান শিক্ষকের হয়ে স্কুলের যাবতীয় সিদ্ধান্ত নেন গ্রুপ ডি স্টাফ সঞ্জীব দণ্ডপাট। এই সঞ্জীব দণ্ডপাটের বিরুদ্ধে ধর্ষণেরও অভিযোগ রয়েছে। তিনি জেলও খেটেছেন বলে দাবি স্কুল শিক্ষক থেকে পড়ুয়াদের।
তবে সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুকুমার মণ্ডল। তিনি বলেন “ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে অন্যান্য শিক্ষকরা নোংরামি করছেন, কয়েকজন শিক্ষক ছাত্র-ছাত্রীদের ভুল বুঝিয়ে এগুলো করাচ্ছেন।”
যদিও আন্দোলনকারী স্কুল শিক্ষক শিব কালী রায় বলেন “প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ রয়েছে। ওঁ জোর করে আমাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করেন, আমাকে মারতে আসেন।” স্কুলের এক শিক্ষক বলেন, “হেড স্যরের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। জোর করে আমাদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করতেন, মিড ডে মিল কেলেঙ্কারি। এক ছাত্র আমার সঙ্গে বাইকে যায়, তাতে প্রধান শিক্ষকের বক্তব্য, ওই ছাত্রের চরিত্র কলঙ্কিত হচ্ছে। আমি প্রতিবাদ করতে গেলে আমাকে মারতেও আসেন প্রধান শিক্ষক। ৩৬ বছরের কর্মজীবনে এটাও দেখার ছিল আমার। এর আগেও ডিএম অফিসে, বিকাশভবনে অভিযোগ করেছি। হেড স্যর স্কুলের ক্লাস রুম দখল করে থাকেন। ডিআই মানা করে দেওয়ার পরও থাকেন। ওঁ থাকেন, আরেকজন নন টিচিং স্টাফ থাকেন। রাতে রাতে যে যে কেলেঙ্কারি চলে, তারই প্রতিবাদ করতে গিয়েছিলাম।” ঘটনাকে ঘিরে উত্তাল রয়েছে স্কুলের পরিস্থিতি।