পশ্চিমবঙ্গ: তিনি রাজ্যের প্রাক্তন স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তা প্রদীপ মিত্র (Pradip Mitra)। স্বাস্থ্য দফতরের অন্দরে অবশ্য তাঁর আরও একটি নাম রয়েছে- ‘আশ্চর্য প্রদীপ’। ২০১৯ সালে জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলন হোক কিংবা করোনা পরিস্থিতি। স্বাস্থ্য দফতর যখনই বেকায়দায় পড়েছে তাঁকে দেখা গিয়েছে মুশকিল আসানের ভূমিকায়। তাই অবসরের পরও করোনা মোকাবিলায় বিশেষ পদ তৈরি করে তাঁকে স্বাস্থ্য ভবনে আনা হয়েছিল তাঁকে। সেই ‘আশ্চর্য প্রদীপ’কে কিছুদিন আগে দেখা গিয়েছিল বিজেপি’র ডক্টর্স সেলের আলোচনা সভায়। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধনের সভায় তাঁর উপস্থিতির পরই আচমকা রাজ্যের কোভিড ম্যানেজমেন্ট কো-অর্ডিনেটরের পদ থেকে সরানো হল প্রদীপ মিত্রকে।
১৫ ফেব্রুয়ারি এক নির্দেশিকায় স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে গত বছরের ৪ এপ্রিল থেকে কোভিড ম্যানেজমেন্ট কো-অর্ডিনেটরের দায়িত্বে থাকা প্রাক্তন স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তা প্রদীপ মিত্রকে সংশ্লিষ্ট ভূমিকা থেকে সরানো হল। তাঁর জায়গায় আনা হচ্ছে প্রোফেসর ডঃ গোপালকৃষ্ণ ঢালিকে। কিন্তু কী কারণে প্রদীপবাবুকে সংশ্লিষ্ট ভূমিকা থেকে সরানো হল তার কোনও কারণ দর্শানো হয়নি সংশ্লিষ্ট নির্দেশিকায়। এ নিয়ে কী প্রতিক্রিয়া প্রদীপবাবুর?
আরও পড়ুন: বিতর্ক এড়াতে সমাবর্তন অনুষ্ঠানে আগেই মুখ্যমন্ত্রীকে আমন্ত্রণ বিশ্বভারতীর!
প্রদীপ মিত্রের মন্তব্য, ‘প্রত্যাশিত তবে দুর্ভাগ্যজনক।’ তিনি বলেন, একজন প্রাক্তন স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তা হিসেবে বিজেপি’র ডক্টর্স সেলের আলোচনা সভায় গিয়ে কোনও ভুল করিনি। যেখানে স্বয়ং কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী উপস্থিত রয়েছেন সেই সভায় থাকার মধ্যে কেনই বা ভুল থাকবে, প্রশ্ন তোলেন প্রদীপবাবু। তবে তাঁকে সংশ্লিষ্ট পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া নিয়ে প্রদীপবাবুর প্রতিক্রিয়া, ‘যদি করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে বলে আমাকে এই পদ থেকে সরানো হত তাহলে কোনও প্রশ্ন ছিল না। কিন্তু আমার জায়গায় আর একজনকে দায়িত্ব দিয়ে বোঝানো হল যে ওই পদের দরকার রয়েছে।’
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালে এনআরএসে ডাক্তার নিগ্রহকাণ্ডে জট কাটাতে প্রদীপ মিত্রের মাধ্যমে জুনিয়র ডাক্তারদের চার প্রতিনিধিকে নবান্নে ডেকে আলোচনা করতে চেয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু তাঁর ভূমিকায় ‘অখুশি’ ছিল রাজ্য সরকার। সেসময় স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিকর্তার পদ থেকে প্রদীপ মিত্রকে সরিয়ে দেবাশিস ভট্টাচার্যকে আনা হয়। তবে করোনা পরিস্থিতিতে প্রাক্তন স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তাকে ফের কোভিড ম্যানেজমেন্ট কো-অর্ডিনেটরের পদে আনে রাজ্য সরকার। এবার এই পদ থেকেও তাঁকে অপসারণের প্রেক্ষিতে প্রদীপবাবুর মন্তব্য, ‘বহুবার আমার সঙ্গে এটা করা হয়েছে। নতুন কিছু নয়।’
এবার কি বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন? এই প্রশ্নের উত্তরে অবশ্য কোনও পরিষ্কার উত্তর দেননি প্রদীপ মিত্র। তাঁর কথায়, ‘সামগ্রিক উন্নয়নের প্রশ্ন থাকলে যে কোনও জায়গায় আমি থাকব। স্বাস্থ্য সম্পর্কিত কোনও ভূমিকায় আমাকে যে কেউ আমন্ত্রণ করলে তাতে সাড়া দেব।’