TMC: ‘আমাকে মারার জন্য MLA চক্রান্ত করছে’, তৃণমূল বিধায়কের বিরুদ্ধে ফেসবুক লাইভে তোপ দলেরই নেতার
Purbasthali: পূর্বস্থলী উত্তরের বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায়ের অবশ্য বক্তব্য, "ও এক সময় বিজেপি করত। আবার বিজেপিতে যাবে।"
পূর্ব বর্ধমান: পূর্বস্থলীর তৃণমূল (Trinamool) উপপ্রধান বনাম তৃণমূল বিধায়কের (TMC MLA) লড়াই যেন কিছুতেই থামছে না। ‘নাম নিতে ঘেন্না করে’, কিছুদিন আগেই বিধায়কের উদ্দেশে বলেছিলেন পূর্বস্থলী পঞ্চায়েতের উপপ্রধান পঙ্কজ গঙ্গোপাধ্যায়। পাল্টা পূর্বস্থলী উত্তরের বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায়ও তাঁকে ‘চার আনারও নয়’ বলে খোঁচা দেন। এবার একেবারে ভরা বাজারে দলীয় কোন্দলকে টেনে আনলেন উপপ্রধান। ফেসবুক লাইভ করে একের পর এক বোমা ফাটালেন পঙ্কজ। বিধায়কের অবশ্য বক্তব্য, পঙ্কজ বিজেপিতে যাবেন। তাই এখন এসব বলছেন। পাল্টা পঙ্কজ বলেন, শেষ অবধি তিনি সবটা দেখবেন। তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরই অনুগামী। তবে এই ঘটনাকে সামনে রেখে পঞ্চায়েত ভোটের আগে পারদ পড়ছে পূর্বস্থলীতে।
পূর্বস্থলী-২ ব্লকের পূর্বস্থলী পঞ্চায়েতের উপপ্রধান তথা প্রাক্তন অঞ্চল সভাপতি পঙ্কজ গঙ্গোপাধ্যায়। রবিবার তিনি ফেসবুক লাইভে এসে দাবি করেন, ‘ওনাকে বিধায়ক বলতে গেলে বিধায়কদের অপমান করা হয়। ওনার যা কার্যকলাপ তাতে ওনাকে বিধায়ক বলা থেকে আমার পাঁকে ডুবে মরে যাওয়া ভাল। দু’দিন আগে শুনলাম উনি নাকি বলেছেন, পূর্বস্থলীর প্রধান অশিক্ষিত। তার মাথায় নুন রেখে কুল খাচ্ছি আমি। এটা যদি সত্যি হয়, আমার প্রশ্ন তাহলে কেন আমাকে চার চারবার পঞ্চায়েতের টিকিট দেওয়া হল? আর আপনি তো বর্তমান সভাপতির মাথায় নুনের সঙ্গে লঙ্কা দিয়ে আয়েশ করে কুল খাচ্ছেন।’
পঙ্কজের অভিযোগ, বিধায়ক কর্মীদের গাঁজা কেসের হুঁশিয়ারি দেন। বিধায়ক দোগাছিয়া-জাননগরের প্রধানকে চোর বলেছিলেন বলেও ফেসবুক লাইভে দাবি করেন পঞ্চায়েতের উপপ্রধান। অথচ দল সেইসব বুথে জিতেছিল। পঙ্কজ গঙ্গোপাধ্যায়ের অভিযোগ, ‘এই বিধানসভা নির্বাচনে এখন যিনি সভাপতি তিনি তাঁর বুথে হেরেছেন। এর জবাব কে দেবে?’ একইসঙ্গে বিস্ফোরক পঙ্কজ বলেন, বিধায়কের সঙ্গে কারও বনিবনা না হলেই তাঁকে পদ থেকে সরিয়ে দেন। এমনকী এই ফেসবুক লাইভ করার জন্য তাঁর ক্ষতি করতে পারেন বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেন পঙ্কজ গঙ্গোপাধ্যায়।
এতদিন নিরাপত্তা পেতেন উপপ্রধান। এখন তা তুলে নেওয়া হয়েছে। পঙ্কজের অভিযোগ, “সাত বছর সরকার আমাকে সিকিওরিটি দিয়েছিল। ২ মাস হল বিধায়ক অভিযোগ করে করে তা তুলে নিয়েছে। আমার তো মনে হচ্ছে হয়ত আমাকে মারার জন্যই বিধায়ক চক্রান্ত করে সিকিওরিটি তুলে নিল। হয়তো আমাকে গাঁজার কেস দিয়েও ভরে দিতে পারে। মিথ্যা অপবাদ দিয়ে, গন্ডগোলের মধ্যে জড়িয়ে দিয়ে কেস দিতে পারে। বিধায়ক পারে না এমন কোনও কাজ নেই।”
টিভি নাইন বাংলাকে পূর্বস্থলীর উপপ্রধান পঙ্কজ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “দলকে জানিয়েও তো কাজ হয়নি। তাই তো ফেসবুক লাইভে বলতে হয়েছে। জেলা সভাপতি জানেন, তার আগে যিনি জেলা সভাপতি ছিলেন তিনি জানেন। আমার নিরাপত্তারক্ষী ছিল সাত বছরের, সেটা তুলে নিয়েছে। দল জানে। দল যদি জানার পরও কোনও ব্যবস্থা না নেয় কী করা যাবে। আমাদের তো অন্য ব্যবস্থা করতেই হতো, বাধ্য হয়েছি। এখনও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভালবাসি, তাই রয়েছি। শেষ অবধি থাকব, দেখবও কতদিনে দল ব্যবস্থা নেয়।”
পূর্বস্থলী উত্তরের বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায়ের অবশ্য বক্তব্য, “ও এক সময় বিজেপি করত। আবার বিজেপিতে যাবে। তাই এরকম করছে। বাদ দিন ওর কথা। ওর যা মন চায় করুক। আমি শীর্ষ নেতৃত্বকে জানিয়েছি। আমি আইসিকেও জানিয়েছি। মানহানির কেস করব।” তবে মানহানির হামলা প্রসঙ্গে পাল্টা ঝাঁঝ বাড়িয়েছেন উপপ্রধানও। বলেন, “ওনার মান থাকলে মানহানির মামলা করবেন। আমিও সেই কেস করতে পারি।”