
শুভজিৎ মিত্র রিপোর্টিং
পূর্ব মেদিনীপুর: দিঘায় এবার নতুন ‘সকাল’? বাঙালির কাছে সমুদ্রসৈকত বলতে একমাত্র ঠিকানা এই দিঘা। আর সেই এলাকারই এবার চরিত্র বদল। অক্ষয় তৃতীয়ার দিনে সেখানে উদ্বোধন হতে চলেছে জগন্নাথ মন্দিরের। এদিন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বিগ্রহের প্রাণ প্রতিষ্ঠা করবেন। ওয়াকিবহাল মহল বলছে, দিঘায় এবার শুরু হবে একটা নতুন অধ্য়ায়।
তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বাড়তি গুরুত্ব পেয়েছে দিঘা। বছর বছর ধরে দিঘা বাঙালির পছন্দের তিন ভ্রমণস্থল দিপুদা-র (দিঘা, পুরী, দার্জিলিং) অন্তর্গত হলেও মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের শাসনকাল থেকে নজরদারি বেড়েছে দিঘায়। হয়েছে ঢালাও উন্নয়ন। সাজগোছের দিক থেকে রাখা হয়নি কোনও খামতি। সেই সূত্র ধরেই আরও বেড়েছে পর্যটন। বেড়েছে রাজ্য়ের আয়ও।
কিন্তু কোন অংশের মানুষের দিঘা যাওয়ার ঝোঁক তুঙ্গে? এই প্রশ্নের উত্তর যে যুগল বা সদ্য বিবাহিত দম্পতিদের দিকেই ইঙ্গিত দেবে, সেই নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কলেজ উত্তীর্ণ তরুণ-তরুণী কিংবা সবে গাঁটছড়া বাঁধা দম্পতি। সস্তায় ও কম সময়ে বাঙালিদের প্রেমের ঠিকানা ছিল এই দিঘা। বালিতে নাম লেখা থেকে বোল্ডার এড়িয়ে জলকেলি, বাঙালির প্রেমের প্রতিটা অধ্য়ায়ের সাক্ষী থেকেছে সৈকত শহর। এমনকি, স্কুলের গন্ডি পেরিয়ে সবে কলেজে ওঠা পড়ুয়াদের মধ্য়েও কিন্তু বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে যাওয়ার প্রাথমিক ঠিকানা দিঘাই। সহজ কথায় বলতে গেলে, বন্ধুদের সঙ্গে ঘুরতে যাওয়া কিংবা বাবা-মার শাসন এড়িয়ে আলগা ছলে মনে ‘হাওয়া লাগানো’, গোটা প্রক্রিয়ার জয়কেই সুনিশ্চিত করে দিঘা ভ্রমণ।
এবার সেই দিঘাতেই হাওয়া বদল। বাঙালির প্রেমের ঠিকানায় আলো পড়েছে আধ্যাত্মিকতার। যে বালিতে এক সময় নাম লিখে যেতেন প্রেমিক-প্রেমিকারা। এবার সেই বালিতে খাঁড়া হয়েছে আস্ত জগন্নাথ মন্দির। যার জেরে প্রেমের ডেস্টিনেশন ধর্মের স্থানে পরিণত হচ্ছে বলেই মত একাংশের। তবে এতে কিন্তু অনেকটাই সুবিধা হবে রাজ্যের বৃদ্ধ জনেদের। অনেকেই বয়সজনীত জড়তার কারণে পুরীর জগন্নাথ মন্দিরে যেতে পারেন না। দূরে যাওয়া তাদের জন্য একটু কষ্টদায়ক হয়। এবার সেই সমস্যার জট কাটাবে রাজ্যের নতুন জগন্নাথ মন্দির।