মইদুলের মৃত্যুতে শরীর অবশ হয়ে যাচ্ছে সরস্বতীর, তাঁর স্বামীও যে পাঁচদিন ধরে নিখোঁজ
গত ১১ ফেব্রুয়ারি বাম ছাত্র যুবদের নবান্ন অভিযানে যোগ দিতে ধর্মতলার পথে রওনা দেন পাঁশকুড়ার বাহারপোঁতার দীপক পাঁজা। এরপর তাঁর আর কোনও খবর নেই।
পূর্ব মেদিনীপুর: সাত সকালে মইদুলের মৃত্যুর খবরটা শুনেই বুকটা ছ্যাৎ করে ওঠে পাঁশকুড়ার সরস্বতী পাঁজার। ঘরের লোকটাও যে পাঁচদিন ধরে নিখোঁজ। সেও যে বাম ছাত্র যুবদের নবান্ন অভিযানেই গিয়েছিল। থানা পুলিশ সবই তো হল। কিন্তু মানুষটার যে কোনও খোঁজই কেউ দিতে পারছে না। কোথায় আছে, কেমন আছে কিচ্ছুটি কেউ জানে না। মইদুলের খবরটা পাওয়ার পর হাত পা যেন অসাড় হয়ে আসছে সরস্বতীর। কথা বলতে গিয়ে গলা বুজে আসছে, দলা পাকিয়ে উঠছে কান্না।
গত ১১ ফেব্রুয়ারি বাম ছাত্র যুবদের নবান্ন অভিযানে যোগ দিতে ধর্মতলার পথে রওনা দেন পাঁশকুড়ার বাহারপোঁতার দীপক পাঁজা। হাওড়া স্টেশনে হয়ে ধর্মতলায় পৌঁছন। পরিবারের অভিযোগ, মিছিলে যোগও দিয়েছিলেন। কিন্তু ডোরিনা ক্রসিংয়ের কাছে পুলিশি বাধার মুখে পড়ে দিকভ্রষ্ট হয়ে যান দীপক। ‘সহজ সরল’ দীপক যে কোথায় ছুট লাগালেন, পাঁচদিন কেটে গেল, কেউ তা বলতে পারছে না।
দীপকের খোঁজে তাঁর স্ত্রী সরস্বতীকে নিয়ে গত শনিবার হাওড়া শিবপুর ও নিউ মার্কেট থানায় গিয়েছিল বাম প্রতিনিধিদল। নিউ মার্কেট থানায় নিখোঁজ সংক্রান্ত অভিযোগও দায়ের করে। কিন্তু এরপরও দু’দিন কেটে গেল। কেউ তো কোনও খোঁজই দিতে পারল না।
একেবারে সাদামাটা চেহারা সরস্বতীর। গলার স্বর এমনিই খাদের দিকে। স্বামী নিখোঁজ হওয়ার পর তা যেন আরও নেমে গিয়েছে। বেড়ার দরমা ঘেরা ঘরে বসে সরস্বতীর আক্ষেপ, “দল বলেছে খুঁজে দিবে, কিন্তু মানুষটা তো এখনও এল না।” এদিন মইদুলের প্রসঙ্গ উঠতে আরও যেন নড়বড়ে হয়ে গেল সরস্বতীর গলা। আপন মনেই বিড়বিড়িয়ে বলে উঠলেন, “দু’জনের সংসার। আর তো কিছু নেই। মানুষটা যে কেন ফিরছে না!”