বাড়ি তো দূর অস্ত, ভাঙা ঘর ঢাকতে ত্রিপলই জোটেনি! পঞ্চায়েতের সামনে নগ্ন হয়ে প্রতিবাদ প্রৌঢ়ের

সৈকত দাস |

Jun 26, 2021 | 5:02 PM

Naked Protest In Front Of Panchayat: আবাস যোজনায় বাড়ি পাওয়া তো দূর, একটা ত্রিপলও পঞ্চায়েত থেকে পাননি ছোটবাবু। তাঁর দাবি, দুর্নীতিতে ডুবে থাকা পঞ্চায়েত থেকে প্রশাসন সব উলঙ্গ হয়ে গেছে। তাই নিজে উলঙ্গ হয়েই এর প্রতিবাদ করেছেন।

বাড়ি তো দূর অস্ত, ভাঙা ঘর ঢাকতে ত্রিপলই জোটেনি! পঞ্চায়েতের সামনে নগ্ন হয়ে প্রতিবাদ প্রৌঢ়ের
নিজস্ব চিত্র

Follow Us

পুরুলিয়া: কাঁচা বাড়ি ভগ্নপ্রায়। ঝড়বৃষ্টিতে প্রাণের ভয় নিয়ে সেখানেই বাস প্রৌঢ়ের। বাংলা আবাস যোজনায় পাকা বাড়ি তো দূরের কথা। বর্ষায় জোটেনি একটা ত্রিপল। বারবার পঞ্চায়েতে ছুটেও একটা ত্রিপল জোটেনি। তাই গ্রাম পঞ্চায়েত দফতরের সামনে সম্পূর্ণ নগ্ন হয়ে প্রতিবাদ জানালেন তিনি। ঘটনার ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়তে তীব্র শোরগোল পুরুলিয়া জেলার ঝালদায়।

জানা গিয়েছে, এদিন পুরুলিয়ার বেগুনকোদর গ্রামপঞ্চায়েতের সামনে সম্পূর্ণ নগ্ন হয়ে প্রতিবাদ জানান এক প্রৌঢ়। নিজের চরম দুরবস্থার কথা বলতে গিয়ে আর ঠিক থাকতে পারেননি তিনি। প্রৌঢ়ের সেই অবস্থার ভিডিয়ো এখন ভাইরাল হয়ে গেছে এলাকায়। এতেই চরম অস্বস্তিতে পড়েছে বেগুনকোদর গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্যরা। ঘটনার তদন্ত শুরু করে Tv9 বাংলার প্রতিনিধি পৌঁছে যান ওই প্রৌঢ়ের বাড়িতে। নিজের ক্ষোভ উগরে দেন পুরুলিয়ার ঝালদা ২ নং ব্লকের অন্তর্গত বেগুনকোদর গ্রামের বুরুজকুলির বাসিন্দা ছোটবাবু রাজোয়াড়।

৫১ বছরের প্রৌঢ়ের আর্থিক অবস্থা খারাপ বললেও কম বলা হয়। দিনমজুরি করে টেনেটুনে চলে সংসার। লকডাউনের বাজারে সেই কাজও জুটছে না। পাঁচটি রেশন কার্ড থাকলেও তাঁর মধ্যে একটি মাত্র কার্ড কার্যকরী। তাতে যেটুকু পাওয়া যায় তাই এই করোনাকালে ভরসা। এমতাবস্থায় বর্ষার মরসুমে সব থেকে বড় সমস্যায় পড়েছেন বাসস্থানটুকু নিয়ে। ছোটবাবু রাজোয়াড়ের অভিযোগ, বাড়ির এমন দুরবস্থা যে তাতে আর থাকা যায় না। বৃষ্টির জল পড়তে থাকে। বাড়ির মহিলা ও শিশুদের অন্যের বাড়িতে পাঠাতে হয় তখন।

তাঁর দাবি, দুর্নীতিতে ডুবে থাকা পঞ্চায়েত থেকে প্রশাসন সব উলঙ্গ হয়ে গিয়েছে। তাই নিজেও উলঙ্গ হয়েই এর প্রতিবাদ করেছেন তিনি। এতে তাঁর কোনও কুণ্ঠা নেই।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে যথেষ্ট অস্বস্তিতে পড়েছে বেগুনকোদর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান থেকে সদস্যরা। পঞ্চায়েতের সদস্য তথা ওই গ্রামেরই বাসিন্দা জানান, আবাস যোজনায় নাম না থাকার কারণে বাড়ি পাননি ছোটবাবু। একই মত প্রধান ফনি চরণ সিং মুড়ারও। তবে কেন ছোটবাবু রাজোয়াড় বাড়ি পাননি তার কোন সদুত্তর দিতে পারেননি তারা। তাছাড়া একটা ত্রিপলও তো দেওয়া যেত! সেটুকুই পেলেন না এই শ্রমিক? উঠছে প্রশ্ন।

আরও পড়ুন: Fake Vaccination: ‘দিলীপ ঘোষরাই ভ্যাকসিন জালিয়াতি করিয়েছেন,’ বিস্ফোরক কল্যাণ

আপাতত ছোটবাবু চান নিজের জন্য একটা মাথা গোঁজার ঠাঁই। যেখানে স্ত্রী এবং নাবালক তিন সন্তানকে নিয়ে একটু নিরাপদে থাকতে পারেন। এটুকুই তাঁর দাবি আবার, আবেদনও বটে।

Next Article