পুরুলিয়া: থামছেই না বিক্ষোভ, ফের আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছে কুড়মি সমাজ। তৃণমূল কংগ্রেস নেতা অজিত মাইতি কুড়মি জাতি সম্পর্কে যে অসম্মানসূচক মন্তব্য করেছেন, তা তিনি পরিহার না করলে পুরুলিয়ার বিভিন্ন এলাকায় কুশপুতুল দাহ করে অবরোধ কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে আদিবাসী কুড়মি সমাজ। তার মধ্যেই অজিত মাইতি প্রসঙ্গে বিস্ফোরক কুড়মি নেতা অজিত প্রসাদ মাহাতো। তিনি বলেন, ” মুখ্যমন্ত্রী আমাদের দাবি ও আন্দোলনকে গুরুত্ব দেয়নি। অথচ দলে কী এমন গুরুত্ব রয়েছে অজিত মাইতির, যে জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে ক্ষমা চাইতে হল।” কুড়মিদের একটাই দাবি, যতদিন পর্যন্ত না কুড়মিদের এসটি সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য রাজ্য সিআরআই রিপোর্টের কন্টেট ও জাস্টিফিকেশনের কপি কেন্দ্রকে পাঠাতে হবে। দীর্ঘদিন ধরেই তাঁদের দাবি না মানায় আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসকে কোনওভাবেই তাঁরা সমর্থন করবেন না বলে জানিয়ে দেন অজিত মাহাতো। এমনকি কুড়মিদের বাড়ির দেওয়াল রাজনৈতিক প্রচারেও ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দেন।
তারপরই এক অনুষ্ঠানে বলতে গিয়ে অজিত মাইতি বলেছিলেন, “কিছু কুড়মি নেতা স্বঘোষিত খালিস্তানির নেতার মতো আচরণ করছেন। এখানে নোংরা খেলা চলছে। সরকারকে টেনে নামানোর চেষ্টা যাঁরা করছেন তাঁদের কোনওভাবেই সমর্থন নয়।” বিষয়টি নিয়ে চরম ক্ষোভ বাড়তে থাকে কুড়মি সমাজে। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছয় অজিত মাইতির হয়ে ক্ষমা চান খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “আমার বক্তব্যের একটা কথায় আমাদের কুড়মি ভাইবোনেরা কিছুটা আঘাত পেয়েছেন বলে শুনেছি। আমার রাজনৈতিক জীবনে আমি আদিবাসী ভাইবোন, সাঁওতাল, কুড়মি ভাইবোনদের নিয়ে কাজ করেছি। কোনওদিন ভুল বোঝাবুঝি হয়নি। আজ ওনাদের আঘাত করব, এমনটা আমি নই। যাঁদের সঙ্গে আমার ওঠাবসা, তারা দুঃখ পেলে আমিও দুঃখ পাই। তাই আমি অনুতাপ প্রকাশ করছি, অনুশোচনা প্রকাশ করছি। ক্ষমা চাইছি। আমার কথায় কেউ ভুল বুঝবেন না।” পরে এই বিষয়টি নিয়ে অজিত মাইতিও ক্ষমা চান। তাঁর যুক্তি ছিল, তিনি ‘খালিস্তানিদের মতো’ বলেছিলেন, ‘খালিস্তানি’ নয়। কিন্তু কেউ বা কারা তাঁর বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করেছেন। সেই ইস্যুকেই হাতিয়ার করে অজিতকে বিঁধলেন আরেক অজিত।