
বজবজ: ঘনঘন মামাবাড়িতে যাতায়াত। মামির সঙ্গে ফোনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কথা। শেষপর্যন্ত মামি ও ভাগ্নের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হল দুটি বাড়ি থেকে। ফোনে কথা বলার সময়ই তাঁরা আত্মঘাতী হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন বলে প্রাথমিকভাবে মনে করছে পুলিশ। তাদের অনুমান, মামি ও ভাগ্নের মধ্যে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। ঘটনাটি দক্ষিণ ২৪ পরগনার বজবজ থানার উত্তর রায়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের পাইকপাড়ার।
কয়েক বছর আগে প্রেম করে বিয়ে করেছিলেন মৃত যুবতী। তাঁর আড়াই বছরের সন্তান রয়েছে। মৃত যুবতীর স্বামীর একটি বাইক সারানোর গ্যারেজ রয়েছে। আর তাঁর শাশুড়ি লোকের বাড়িতে কাজ করেন। কোনওরকমে দিন গুজরান হয় তাঁদের। বছর একুশের ওই যুবতীর সঙ্গে তাঁর স্বামীর পিসতুতো দিদির ছেলের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, সর্বদাই হাসিখুশি থাকতেন ওই যুবতী। তাঁর স্বামীর পিসতুতো দিদির ছেলে একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ করতেন। মামাবাড়ি থেকে কিছুটা দূরেই বছর ছাব্বিশের ওই যুবকের বাড়ি। মামাবাড়িতে ঘনঘন যাতায়াত করতেন। তখন যুবতী তাঁকে খাইয়েও দিতেন। বাড়ির লোকের অবশ্য তাতে কোনও সন্দেহ হয়নি। এমনকি, মামি-ভাগ্নে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ফোনে কথা বলতেন।
ওই যুবকের পরিবারের অভিযোগ, আয়ের বেশিরভাগ টাকাই মামির জন্য খরচ করতেন যুবক। গত দুই মাস আর কাজে যাচ্ছিলেন না ওই যুবক। বেশিরভাগ সময় থাকতেন মামাবাড়িতেই। সোমবার রাতে নিজের নিজের বাড়িতে ছিলেন। তবে ফোনে কথা বলছিলেন তাঁরা। তারপরই গলায় দড়ি দেন। ওই যুবতীকে উদ্ধার করে বজবজ পৌর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। জানা গিয়েছে, মৃত মামি ও ভাগ্নের দুটো মোবাইলই বজবজ থানার পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেছে। দেহ দুটিকে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। দুই পরিবারই শোকে মুহ্যমান। মৃত যুবতীর স্বামী বলেন, “আমাদের কখনও কোনও সন্দেহ হয়নি। কখনও যদি বলতাম, এত ফোন ঘাঁটছো কেন? বউ বলত, আমায় কি সন্দেহ করছো? আমার আড়াই বছরের ছেলে রয়েছে। এখন কী করব, কিছুই বুঝতে পারছি না। সব তো চলেই গেল।”