Razzak Molla: বাম আমলের মন্ত্রী থেকে তৃণমূলের বিধায়ক, প্রয়াত ‘চাষার ব্যাটা’ রেজ্জাক

Razzak Molla: বাম আমলে ভূমি ও ভূমি সংস্কার মন্ত্রী ছিলেন তিনি। ২০১৬ সালে ভাঙড়ে তৃণমূলের টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন তিনি। জেতেনও। তবে পাঁচ বছর পর আর তৃণমূলের টিকিট পাননি তিনি।

Razzak Molla: বাম আমলের মন্ত্রী থেকে তৃণমূলের বিধায়ক, প্রয়াত চাষার ব্যাটা রেজ্জাক
রেজ্জাক মোল্লাImage Credit source: TV9 Bangla

| Edited By: সঞ্জয় পাইকার

Apr 11, 2025 | 1:45 PM

ভাঙড়: প্রয়াত হলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী রেজ্জাক মোল্লা। দীর্ঘদিন বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। শুক্রবার ভাঙড়ের বাঁকড়ি গ্রামে বাড়িতে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। বয়স হয়েছিল ৮১ বছর।

গলায় গামছা তাঁর ট্রেড মার্ক ছিল। নিজেকে চাষার ব্যাটা বলতেন। কৃষক আন্দোলন করেই যে তিনি রাজনীতিতে এসেছেন সেকথাও প্রায়ই বলতেন। রেজ্জাক মোল্লার জন্ম ১৯৪৪ সালের ৩১ জুলাই। ১৯৭৭ সালে বামফ্রন্ট সরকার রাজ্যে ক্ষমতায় আসার সময় ক্যানিং পূর্ব থেকে জেতেন তিনি। ৩৪ বছর রাজ্যে ক্ষমতায় ছিল বামেরা। এই ৩৪ বছর ক্যানিং পূর্ব থেকে প্রতিবার জেতেন রেজ্জাক। ১৯৯১ সাল থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত রাজ্যের ভূমি ও ভূমি সংস্কার মন্ত্রী ছিলেন তিনি।

২০১১ সালে রাজ্যে পালাবদল হয়। সেইসময় সিপিএমের বেশিরভাগ হেভিওয়েট নেতা-মন্ত্রী হেরে যান। তবে জিতেছিলেন রেজ্জাক। বামেদের হারের পর সিঙ্গুর, নন্দীগ্রামের ঘটনা নিয়ে নিজের দলের সমালোচনা করেন তিনি। এমনকি, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে কটাক্ষ করে তিনি বলেছিলেন, “হেলে ধরতে পারে না, কেউটে ধরতে এসেছে।” দলবিরোধী কার্যকলাপের জন্য তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করে সিপিএম।

২০১৪ সালের ১৮ অক্টোবর ভারতীয় ন্যায়বিচার পার্টি নামে একটি দল গঠন করেন তিনি। কিন্তু, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা বাড়ায় সেখান থেকেও বহিষ্কৃত হন তিনি। এরপর যোগ দেন তৃণমূলে।

২০১৬ সালে ভাঙড়ে তৃণমূলের টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন রেজ্জাক। জেতেনও। খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দফতরের মন্ত্রীও হন। তবে পাঁচ বছর পর আর তৃণমূলের টিকিট পাননি তিনি। রেজ্জাক অবশ্য পরে জানান, “সেইসময় আমার শরীরটা ভাল ছিল না বলে দাঁড়াতে চাইনি। আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখেও সে কথা জানিয়ে দিয়েছিলাম। কোনও অভিমান আমার নেই। এখন আমি শুধু তৃণমূলের সমর্থক। সদস্য নই। সদস্য হতে গেলে যে অ্যাক্টিভিটি রাখতে হয়, সেটা আমার নেই।”

একুশের নির্বাচনের পর থেকে রাজ্যের শাসকদলের সঙ্গে তাঁর দূরত্বও বাড়তে থাকে। দীর্ঘদিন বার্ধক্যজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। বাড়িতেই দিন কাটছিল তাঁর। এদিন বাড়িতেই শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করলেন চাষার ব্যাটা।

প্রাক্তন মন্ত্রীর প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক শোকবার্তায় তিনি বলেন, “আমার সহকর্মী, আব্দুর রেজ্জাক মোল্লা’র প্রয়াণে আমি শোকাহত ও মর্মাহত। তিনি রাজ্য মন্ত্রিসভায় আমার সহকর্মী ছিলেন। তাঁকে আমি শ্রদ্ধা করতাম, সম্মান করতাম। বাংলার গ্রামজীবন, কৃষি-অর্থনীতি ও ভূমি-সংস্কার বিষয়ে তাঁর জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা ছিল সুবিদিত। তাই একসময় অন্য ধারার রাজনীতি করলেও, মা-মাটি-মানুষের সরকারে তাঁর মিলিত হয়ে যাওয়া ছিল সহজ ও স্বাভাবিক। তাঁর প্রয়াণে বাংলার রাজনৈতিক জীবনে অপূরণীয় শূন্যতার সৃষ্টি হল।” প্রাক্তন মন্ত্রীর প্রয়াণে এদিন অর্ধ দিবস ছুটি ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার।