
সোনারপুর: তৃণমূল-বিজেপি বিরোধী জোট গঠনে আগ্রহী সিপিআইএম। ভাঙড়ে এসে সে কথায় স্পষ্ট করে জানালেন বামফ্রন্ট নেতা সুজন চক্রবর্তী। ২০২৪-এর লোকসভা ভোটে বামফ্রন্টের সঙ্গে জোট ভেঙে আইএসএফ ভোটের ময়দানে স্বতন্ত্র লড়াই করেছে। ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনের আবহে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুকে চিঠি দিয়েছেন ভাঙড় বিধানসভার বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী। চিঠির উত্তর আসার আগেই সুজন চক্রবর্তীর এই মন্তব্য রাজনৈতিক ভাবে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলে মত রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।
ভাঙড়ের পোলেরহাটে উত্তরবঙ্গ বিপর্যয়ে বিধস্তদের জন্য ত্রাণ সংগ্রহে এসে জোট প্রসঙ্গে সুজন চক্রবর্তী বলেন, “আমরা তৃণমূল বিজেপি বিরোধী জোট করতে আগ্রহী। কিন্তু কংগ্রেস তাঁদের মত চলছে। আইএসএফ নিজেদের মত চলছে। ডায়মন্ডহারবারে প্রার্থী হবে বলে হয়নি। কংগ্রেস-আইএসএফ কী করে সেটাও দেখা দরকার।”
দক্ষিণ ২৪ পরগনার গ্রামীণ জনপদ ভাঙড়ের নাম বাংলার রাজনীতিতে বার বার উচ্চারিত হয়েছে। প্রথমে এর দখল ছিল কংগ্রেসের হাতে। তার পরে বামেদের দাপট। গত বিধানসভা নির্বাচনে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার একমাত্র আসন যেখানে বিরোধীপক্ষ জিতেছে। যুযুধান প্রতিপক্ষ বিজেপি নয়, বরং গত বিধানসভা নির্বাচনে সদ্য জন্ম নেওয়া আইএসএফ জেতে, তরুণ নেতা নওশাদ সিদ্দিকির হাত ধরে। ভাঙড়ের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বারবার তপ্ত হয়েছে নওশাদ বনাম শওকতের লড়াইয়ে। এবার ময়দানে ‘রিএন্ট্রি’ নিচ্ছেন নওশাদের দাদা আব্বাস। অন্তত রাজনৈতিক মহলে তেমনটাই খবর।
গত অগাস্ট মাসেই বিমান বসুকে চিঠি দিয়েছেন নওশাদ। সূত্রের খবর, চিঠির বিষয়বস্তু ছিল জোটের জন্য আর সময় নষ্ট না করে প্রক্রিয়া শুরু করা হোক।
২০২১ সালে বাম, কংগ্রেস ও আইএসএফের জোট হয়েছিল, নেতৃত্ব দিয়েছিলেন বিমান বসু। । তার পোশাকি নাম ছিল সংযুক্ত মোর্চা। এবারও সেই একইভাবে তৃণমূল ও বিজেপি বিরোধী জোট তৈরির কথা বলেছেন নওশাদ। সেই জোটে এবার আরও কিছু সামাজিক সংগঠনের অন্তর্ভুক্তির কথা উল্লেখ করেছেন নওশাদ। কিন্তু সেই চিঠির প্রত্যুত্তর এখনও মেলেনি। তার আগেই সুজন চক্রবর্তীর এহেন মন্তব্যে স্বাভাবিকভাবেই ভাঙড়ে মাটিতে নতুন জল্পনা তৈরি করেছে।
এদিকে, সুজন চক্রবর্তীর মন্তব্য প্রসঙ্গে ক্যানিং পূর্বের বিধায়ক তথা ভাঙড় বিধানসভার পর্যবেক্ষক সওকাত মোল্লা বলেন, “সিপিআইএম ডুবন্ত জাহাজ, আইএসএফ তরী। আইএফএস সিপিআইএমকে কোন সম্মান দেয়নি। জোট করলে সিপিআইএমঅকে মানুষ ছুটি দিয়ে দেবে।”