জয়নগর: তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি সইফুদ্দিন লস্কর খুনের পর অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি জয়নগরে। জ্বালিয়ে ফেলা হয়েছে একের পর এক গ্রাম। গোটা গ্রাম কার্যত ঢেকে গিয়েছে ধোঁয়ায়। পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ধানের গোলা। ঘরের ভিতরে থাকা যাবতীয় আসবাব পত্র ফেলে দেওয়া হয়েছে মাটিতে। এই অবস্থায় গ্রামবাসীদের অভিযোগ, এলাকার তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা বেছে বেছে বিরোধীদের বাড়িগুলি জ্বালিয়ে ফেলছে।
এ দিন শেষ সম্বলটুকু বাঁচানোর জন্য মরিয়া চেষ্টা করেন গ্রামের মহিলারা। বালতি নিয়ে পুকুর থেকে জল তুলে বাড়িতে ঢেলে আগুন নেভানোর চেষ্টা করছেন তাঁরা। শুধু মহিলা নয়, ছোট-ছোট শিশুরাও বালতি নিয়ে গিয়ে জল তুলে আগুন নেভানোর চেষ্টা করছে। এলাকারই এক মহিলা বললেন, “আমাদের বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে তৃণমূলের লোকেরা। যেহেতু আমরা সিপিএম করি সেই কারণে। এদের মধ্যে আবদুল করিম, গাপ্পাকে চিনতে পেরেছি। যে খুন হয়েছে তাঁর সঙ্গে আমাদের গ্রামের কেউ জড়িত নয়। অথচ গ্রামে এসে বলছে সইফুদ্দিনকে আর কেউ খুন করবে না এরাই খুন করেছে।” অর্থাৎ নিতান্তই সন্দেহর বশেই একের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। গ্রামের আরও এক মহিলা বলেন, “আমরা খেটে খাওয়া মানুষ। কোনও রাজনীতি করি না। তারপরও ঘরদোর পুড়িয়ে ছাই করেছএ। কোথায় থাকব এখন? একটা হাড়ি পর্যন্ত নেই খাবার রান্না করার।” গ্রামের আরও এক পুরুষ বলেন, “আমরা আগুন নেভাতে গেলে মারছে। দমকল এসেছে ১১টার সময়।”
উল্লেখ্য, সইফুদ্দিন লস্কর খুনের পর তৃণমূলের তরফে দাবি করা হয় সিপিএম-বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তাঁকে খুন করেছে। নেতা শওকত মোল্লাও একই কথা বলেন। তিনি বলেছেন, “সিপিএম-বিজেপি আশ্রিত সমাজ বিরোধীরা সইফুদ্দিনকে খুব কাছ থেকে গুলি করে খুন করে। এর একটাই কারণ যাতে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় একটা সন্ত্রাসের বাতাবরণ তৈরি হয়। পুলিশকে বলব যত দ্রুত গ্রেফতার করা হোক।” অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী। তিনি বলেছেন, “কারোর ঘাড়ে দোষ না চাপিয়ে যত দ্রুত সম্ভব খুনিকে খুঁজে বের করা হোক। যথাযথ তদন্ত হোক।”