কুলপি: বাংলাকে বাঁচাতে হলে প্রার্থী নয়, তৃণমূল প্রতীককেই মাথায় রাখতে হবে। বিজেপি বাংলায় এলে, এ রাজ্যের সংস্কৃতিকে নষ্ট করে দেবে। শনিবার কুলপির জনসভা থেকে এভাবেই মূল বিরোধী শক্তিকে নিশানা করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “অমিত শাহের বড় হা। শুধু দাঙ্গা করবে। বলুন একদম হবে না।” কুলপির সভা থেকে মমতা বলেন-
কুলপির সভাতে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কেউ কেউ ব্যক্তিগতভাবে বলতে পারেন, আমাকে পছন্দ নয়, যোগরঞ্জনকে পছন্দ নয় বা মন্টুকে পছন্দ নয়। কিন্তু মনে রাখবেন এটা সে পছন্দের ভোট নয়। আমাকে যদি আপনাদের পছন্দ হয় তা হলে ওদের একটা ভোট দেবেন। কারণ আমি একা তো সরকার গঠন করতে পারব না। তৃণমূলের একটা করে প্রার্থী জিতবে, আমার সংখ্যা বাড়বে। এভাবে ২০০ পার করতে হবে।”
“আমফানে সব মানুষকে ২০ লক্ষ ঘরবাড়ি করে দিয়েছি। আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের টাকা দিয়েছি। যদি কেউ টাকা না পেয়ে থাকেন, সেই ক্ষতিগ্রস্ত নিশ্চয়ই পাবেন। আমফানের দিন আমি যদি নবান্নে বসে সারারাত না পাহারা দিতাম তিনদিন ধরে তাহলে বলুন তো কত লোক মারা যেত। আমি যখন নবান্নে বসে, আমফানের ওই লেজটা নবান্নে, চোখটা চলে এসেছে আপনাদের এখানে। কী অবস্থা! নবান্নটা মনে হচ্ছে থরথর করে কাঁপছে। মনে হচ্ছে এখুনি ভেঙে পড়বে।”
“বলে ডবল ইঞ্জিন বানাবে! গ্যাসের দাম সাড়ে ৯০০ টাকা হয়ে গিয়েছে। আগামিদিন বিনা পয়সার চাল ফোটাবেন ৯০০ টাকার গ্যাস দিয়ে? দেখবেন গ্যাসের দাম ২ হাজার টাকা করবে! সব কিছুর দাম বাড়িয়েছে বিজেপি। মানুষের জীবনের দাম কমেছে শুধু। ডবল ইঞ্জিন! ৬ বছর ধরে দিল্লিতে কী করেছ। সিঙ্গল ইঞ্জিন কোথায় গেল তোমার?”
মমতা বলেন, “সংখ্যালঘুদের ভোট ভাঙাতে হায়দরাবাদ থেকে একজন এসেছে। সঙ্গে ফুরফুরা শরিফের একটা চ্যাংড়াকে নিয়ে এসেছে। সিপিএম-কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বিভাজন করতে চায়। বিজেপির টাকা নিয়ে সংখ্যালঘু ভোট ভাগ করার পরিকল্পনা। একটা ভোটও দেবেন না। সংখ্যালঘু ভোট ভাগ হলে বিজেপির মজা। যে নেতাগুলো এই ভোট ভাগের জন্য টাকা খেয়েছেন, তার তো টাকায় টাকায় বাড়ি উঠবে। আপনার কী লাভ হবে? এই করে বিহার, উত্তর প্রদেশে হারিয়েছে, বাংলায় তা হবে না।” সে কয়েক কোটি টাকা খরচ করে সাম্প্রদায়িক স্লোগান দিচ্ছে। হিন্দু মুসলমানে ভাগাভাগি করার চেষ্টা করছে। মুসলমান ভোটটাকেও ভাগের চেষ্টা করছে।
বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলিতে মেয়েদের উপর অবাধে অত্যাচার হয় বলে এদিন অভিযোগ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, “মাঝে মাঝে আমার নিজের প্রতি ঘৃণা হয়। এ কোন বাংলায় আমি আছি। আমরা কেন গুন্ডাবাজদের মিটিং শুনব। আমাকে ৫০০ টাকা দিল বলে আমি অমিত শাহের মিটিং শুনব। যাদের হাতে রক্তরাঙা, চোখ দুটো দিয়ে রক্ত বেরোচ্ছে। আমার লজ্জা করে না আমি ৫০০ টাকা নিয়ে ওদের মিটিং শুনব? ওদের টাকা নিও না, পাপ হবে।”
“আমি সেদিন দেখলাম ভিডিয়োতে একটা ছেলে বলছে, আমার বউকে ৫০০ টাকা দিয়েছে, আমাকে ২০০ টাকা দিল, একটু মুড়ি দিল, একটু আঙুর আপেল দিল তাই বিজেপিকে ভোটটা দিয়ে এলাম। তোর তো গলায় দড়ি দিয়ে মরা উচিৎ। মুড়ি বাতাসার টাকা নিয়ে ভোট দিয়ে এসে আবার বলছিস। ধরব আমি, ভিডিয়ো রাখা আছে।”
“চোরচোট্টা চিটিংবাজের দলকে একটাও ভোট দেবেন না। কতদিন ধরে ব্যাঙ্ক বন্ধ, স্ট্রাইক চলছে দেখছেন। লোকে ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলতে পারছে না। মনে রাখবেন হঠাৎ একদিন নোটবন্দির মতো বলবে, যাও ব্যাঙ্ক বন্ধ, তোমার টাকা তুমি আর পাবে না। এটাই হচ্ছে বিজেপি।”