
ভাঙড়: বাসে আলাপ জমিয়েছিলেন। তারপর সঙ্গে সঙ্গে যান ফুলবাগান শিশু হাসপাতালেও। সেখান থেকেই ৬ মাসের শিশুকে চুরির অভিযোগ ওঠে এক মহিলার বিরুদ্ধে। সোমবার সকালে এই ঘটনাকে ঘিরে শোরগোল পড়ে যায়। তবে কয়েকঘণ্টার মধ্যে কামাল দেখাল ফুলবাগান থানা। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছিল ওই শিশুকে নিয়ে পালাচ্ছেন এক মহিলা। সন্ধের আগেই সেই শিশুকে উদ্ধার করল পুলিশ। উত্তর কাশীপুর থানার সহযোগিতায় ভাঙড়ের নিবুন্ধিয়া গ্রাম থেকে ওই দুধের শিশুকে উদ্ধার করা হয়েছে। এই ঘটনায় শ্যামলী মণ্ডল নামে অভিযুক্ত মহিলাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ভাঙড়ের ছেলেগোয়ালিয়া গ্রামের বাসিন্দা মনিরুল মোল্লা ও মঞ্জিলা বিবির একমাত্র সন্তান মাহির মোল্লা। বেশ কিছুদিন ধরে জ্বর, সর্দি, কাশীতে ভুগছিল মাহির। তাই সোমবার সকালে মঞ্জিলা একটি বাসে করে ছেলেকে হাসাপাতালে নিয়ে যান। ওই বাসেই আলাপ হয় নিবুন্ধিয়ার গৃহবধূ শ্যমলী মণ্ডলের সঙ্গে। শ্যামলী নিজেকে ফুলবাগানের নার্স বলে পরিচয় দেন এবং শিশুকে নিজের কোলে বসান। হাসপাতালে চিকিৎসক কিছু ওষুধ লিখে দেন। মঞ্জিলা যখন সেই ওষুধ কিনতে যান, তখন শ্যামলী বলেন শিশুটিকে তাঁর কাছে রেখে দেওয়ার জন্য। মিনিট পাঁচেক পরে মঞ্জিলা ফিরে দেখেন তাঁর পুত্র সন্তান এবং ওই মহিলা দু’জনেই সেখানে নেই। শিশুটির মা ফুলবাগান থানায় শিশু চুরির অভিযোগ দায়ের করেন।
ঘটনার তদন্তে নেমে ফুলবাগান থানার পুলিশ একাধিক সিসিটিভি ফুটেজ বিভিন্ন থানায় পাঠায়। উত্তর কাশীপুর থানার পুলিশ সিসিটিভির ফুটেজ এলাকার সব গ্রামে ছড়িয়ে দেয়। পুলিশ জানতে পারে শ্যমলী একটি শিশুকে নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। পুলিশ গোটা বাড়িটা ঘিরে ফেলে ওই শিশুকে উদ্ধার করে এবং অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। পুলিশ জানতে পারে, অভিযুক্ত মহিলার নাম সাবিনা বিবি।
কয়েক ঘণ্টায় কীভাবে শিশুকে উদ্ধার করল পুলিশ?
জানা গিয়েছে, কাপড়ের ছোট ব্যাগের সূত্র ধরেই কয়েক ঘণ্টার মধ্যে শিশু চুরির কিনারা করে পুলিশ। ফুলবাগান হাসপাতালে শিশু চুরি যাওয়ার তদন্তে নেমে সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখেন তদন্তকারীরা। সেখানে দেখা যায়, অভিযুক্তের হাতে একটি কাপড়ের ছোট ব্যাগ রয়েছে। কাপড়ের ব্যাগে কাশীপুর থানা ও নিবুন্দিয়া গ্রামের নাম লক্ষ্য করে পুলিশ। তারপর ভাঙড়ের উত্তর কাশীপুর থানার পুলিশের সঙ্গে কথা বলে মহিলার বর্ণনা আদানপ্রদান করেন তদন্তকারীরা। আর সেই সূত্রেই শ্যামলী মণ্ডল ওরফে সাবিনা বিবির হদিশ পায় তদন্তকারী টিম। কয়েকঘণ্টার মধ্যে শিশুকে ফিরে পেয়ে যারপরনাই খুশি পরিবার। পুলিশকে ধন্যবাদ জানান শিশুর মা ও পরিজনরা।