দক্ষিণ ২৪ পরগনা: একেবারে ‘লভ, সেক্স অউর ধোকা’। প্রথমে প্রেম, তারপর সহবাস। পরে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি দেখিয়ে ব্ল্যাকমেল। সম্প্রতি প্রেমিকের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ তুললেন বিষ্ণুপুরের এক তরুণী। তাঁর দাবি, বিয়ের আশ্বাস দিয়ে সহবাস করেছিলেন ছেলেটি। পরে পিছু হঠেন। এদিকে ওই তরুণের মা আবার গ্রামপঞ্চায়েতের উপপ্রধান। মেয়েটি আইনি পথে হাঁটবে বলায়, পাল্টা ওই তরুণ শাসিয়ে রেখেছিলেন “আমার মা উপপ্রধান। পুলিস কিছুই করবে না। দু’ একদিনের মধ্যেই জামিন পেয়ে যাব।” যদিও গ্রেফতার হয়ে আপাতত ১৪ দিন জেলা হেফাজতেই থাকতে হচ্ছে অভিযুক্ত ওই তরুণকে।
তরুণীর বাড়ি দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিষ্ণুপুর থানা এলাকায়। নার্সিংয়ের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী তিনি। ২০১৬ সালে তুহিন কুমার আদক নামে ওই তরুণের সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। এই পরিচয়ের সূত্র ছিলেন ওই তরুণীরই এক বন্ধু। এরপর পরিচয় এগোয় বন্ধুত্বে, সেখান থেকে প্রেম। ২০১৮ সালে ওই তরুণীকে কোন্নগরে মামার বাড়ি নিয়ে যান তুহিন। অভিযোগ, সেখানেই বিয়ের প্রস্তাব দেন এবং মেয়েটির সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হন। সে সময়ই বেশ কিছু ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছবি ক্যামেরাবন্দি করেছিলেন তুহিন। বলেছিলেন পরে ডিলিট করে দেবেন। বিএসসি পড়ুয়া তুহিন অবশ্য তেমনটা করেননি।
অভিযোগ, এরইমধ্যে ওই তরুণীকে নার্সিং নিয়ে পড়ার জন্য বলেন তুহিন। প্রাথমিকভাবে কলেজে ভর্তির ২৫ হাজার টাকা মেয়েটির পরিবার তুহিনের হাতেই তুলে দেয়। কথা ছিল, তুহিন সেই টাকা জমা দিয়ে আসবেন। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যে মেয়েটির পরিবার খোঁজ নিয়ে জানতে পারে, একটি টাকাও তুহিন জমা দেননি।
অভিযোগ, এ নিয়ে প্রশ্ন করলে তুহিন মেয়েটির সঙ্গে ফের শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের কথা বলেন। না হলে টাকা ফেরত দেবেন না বলে সাফ জানান। উল্টে মেয়েটিকে অ্যাসিড দগ্ধ করে খুনের হুমকিও দিতে থাকেন বলে অভিযোগ। এরপরই গোটা বিষয়টি বাড়িতে জানান ওই তরুণী। প্রথম দিকে পুলিস কোনও কথা শোনেনি বলেই অভিযোগ মেয়েটির পরিবারের। পরে স্থানীয় নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে গত ১৩ ডিসেম্বর বিষ্ণুপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ওই লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তুহিন কুমার আদককে গ্রেফতার করে পুলিস। ধৃতকে আলিপুর আদালতে তোলা হলে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। যদিও অভিযুক্তের পরিবার এই ঘটনায় মুখ খুলতে চায়নি।