ভাঙড়: একটা গোটা চিত্রপট। মনোনয়ন ঘিরে ব্যাপক বোমাবাজি, গুলি, পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটবৃষ্টি, পরিস্থিতি সামলাতে টিয়ার গ্যাসের সেল, আক্রান্ত পুলিশ, বিপর্যয়ের সামনে পিছু হটতে বাধ্য প্রশাসন, দোকানের ত্রিপলের আড়ালে লুকোনার প্রয়াস -অগ্নিগর্ভ ভাঙড়ে প্রথমার্ধের দৃশ্যটা ছিল খানিকটা এরকম। দ্বিতীয়ার্ধে দৃশ্যটা পুরোই আলাদা। এবার পুলিশ আবারও নিজ ফর্মে। একেবারে মনোনয়ন কেন্দ্রের ভিতরেই ঢুকে পড়ে পুলিশ। মনোনয়ন জমা দিতে আসা আইএসএফ কর্মীদের একেবারে জামার কলার ধরে টেনে হিঁচড়ে গাড়িতে তোলার অভিযোগ। আইএসএফ কর্মীদের অভিযোগ, তাঁরা কাগজ দেখানোর চেষ্টা করেছেন। কিন্তু কোনও কথাই শুনতে চায়নি পুলিশ। গলা ফাটিয়ে চেঁচিয়েছেন তাঁরা, কিন্তু অভিযোগ, পুলিশ ঘাড় ধাক্কা দিয়েই গাড়িতে তুলেছে। মনোনয়ন ঘিরে গোটা দিনের চিত্রপট খানিকটা এরকম।
বিডিও অফিসের ভিতর থেকে আইএসএফ কর্মীদের আটক করে গাড়িতে তোলা হচ্ছে বলে অভিযোগ। এক মহিলা আইএসএফ কর্মী বলেন, “আমি প্রার্থী… আমি আইএসএফের দেওয়া প্রার্থী, ডিসিআর জেরক্স করতে গিয়েছি, আমাকেই পুলিশ টেনে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে, জানি না।” সংবাদমাধ্য়মের ক্যামেরায় ধরা পড়ে, ওই মহিলাকে যখন টেনে হিঁচড়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল, তখন কোনও মহিলা পুলিশকর্মী ছিলেন না। মহিলার হাতে তখনও কাগজ, তাঁর দুটো হাত চেপে ধরে নিয়ে যাচ্ছিল পুলিশ। ক্যামেরায় ধরা পড়েছে সেই ছবি।
আইএসএফ বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকি বলেন, “প্রথমে তৃণমূলী দুষ্কৃতীরা আমাদের আটকানোর চেষ্টা করেছে। যখন ব্যর্থ হয়েছে, তখন পুলিশকে কাজে লাগিয়েছে। তবে আমাদের প্রার্থীদের আটকেছে, আমরা আইনি পথে লড়াই করব।”
ক্যামেরায় এক ‘প্যানে’ যখন এই দৃশ্য, ঠিক তখনই অন্যদিকে, মুহুর্মুহু বোমাবাজি। ক্যামেরাতেই ধরা পড়ল, এক হাতে লাঠি আর বাঁ হাতে তাজা বোমা এক যুবকের। কিছু বুঝে ওঠার আগেই বাড়ির সামনে তাজা বোমা ছুড়ল সে। পিছনে থাকা আরও কয়েকজন আরও কয়েকটা… আবারও বোমার শব্দে কেঁপে উঠল গোটা এলাকা, আর ধোঁয়ায় আবছা হল লেন্স… পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে ভাঙড় প্রমাণ হল, ভাঙড় রয়েছে ভাঙড়েই।