ভাঙড়: বিডিও অফিসের সামনেই বোমার গর্জন। চলেছে ‘গুলি’ও। লাঠি, বাঁশ নিয়ে চলল বেধড়ক মারধর। হল ইটবৃষ্টি, ছোড়া হল টিয়ার গ্যাসের সেল। মনোনয়ন ঘিরে উত্তপ্ত ভাঙড় (Bhangar)। কোথায় ১৪৪ ধারা? কোথায় নিরাপত্তা? কী-ই বা করছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন? ভাঙড়ে মনোনয়ন ঘিরে অশান্তিতে উঠছে একাধিক প্রশ্ন। মঙ্গলবার সকালে আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকির নেতৃত্বে ভাঙড়ে মনোনয়ন জমা দিতে যান আইএসএফ কর্মীরা। অভিযোগ, বিডিও অফিসের সামনেই তৃণমূল কর্মীরা জমায়েত করে ছিলেন। আইএসএফ কর্মীরা আসতেই ব্যাপক বোমাবাজি শুরু হয় বলে অভিযোগ। মুড়িমুড়কির মতো বিডিও অফিসের সামনে চলতে থাকে বোমাবাজি।
এমনিতেই মনোনয়ন কেন্দ্রের একশো মিটার রেডিয়াসের মধ্যে জারি রয়েছে ১৪৪ ধারা। কিন্তু নিষেধাজ্ঞাকে নস্যাৎ করেই সেখানে তৃণমূল কর্মীরা বাঁশ হাতে ‘প্রহরা’য় ছিলেন বলে অভিযোগ। আর আইএসএফ এসে পৌঁছতেই শুরু হয়ে যায় ধস্তাধস্তি। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। ক্যামেরায় ধরা পড়ে, এক আইএসএফ কর্মীকে ধরে টেনে সরিয়ে নিয়ে যায় পুলিশ। তিনি ক্যামেরার সামনে হাউ হাউ করে কাঁদতে থাকেন। তাঁর বক্তব্য, তিনি আইএসএফ কর্মী। মনোনয়ন জমা দিতে এসেছিলেন। কিন্তু তাঁর সামনেই বোমা ফেলে তৃণমূল। তাঁর কথায়, ” টিএমসি-রা আমায় গুলি করছে স্যর, আমার ক্যান্ডিডেটকে মারছে স্যর। আমি আর কী করব! টিএমসি-রা প্রচণ্ড বম্ব-গুলি চালাচ্ছে । আরাবুল-সওকতের নেতৃত্বেই এই হামলা।”
এতটাই বোমাবাজি হয়, বিডিও অফিসের সামনে কার্যত কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায়। এলাকায় ব্যাপক বাহিনী, তবুও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রীতিমতো হিমশিম খায় পুলিশ। এসবের মাঝেই আইএসএফ কর্মী চ্যালেঞ্জের সুরে সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “আপনারাই চলুন, দেখবেন বিডিও অফিসের সিঁড়িতে কারা বসে রয়েছেন? এটা আপনাদেরই দেখিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব।”
আইএসএফ বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকি বলেন, “আইন লঙ্ঘন হোক, এরকম কোনও কাজ আমরা করব না। কিন্তু যারা অশান্তি করছে, মনোনয়ন জমা দিতে দিচ্ছে না, তার বিরুদ্ধে প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে। এটাই আশা করছি। তৃণমূল তো বোমা-গুলি-পিস্তল নিয়ে তৈরি, যাতে আমরা এলেই হামলা চালায়।” এককথায় ভাঙড় কার্যত রণক্ষেত্র। পরিস্থিতি সামলাতে পুলিশ টিয়ার গ্যাস ছোড়ে। যদিও তৃণমূল নেতৃত্বের তরফে দাবি করা হচ্ছে, সব অভিযোগই ভিত্তিহীন।