ভাঙড়: ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন আজ বৃহস্পতিবার। প্রথম দিন থেকে দফায় দফায় যে উত্তেজনার ছবি দেখা গিয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ে। এদিন যেন ক্লাইম্যাক্সে পৌঁছল সেই হিংসা, সন্ত্রাস। ভাঙড়ের বিজয়গঞ্জ বাজারে জ্বালানো হয়েছে গাড়ি। লাগাতার বোমা পড়ছে এলাকায়। চলছে গুলি। আইএসএফ কর্মীদের দাবি, গুলির লড়াইয়ে তাঁদের একাধিক কর্মীর মৃত্যু পর্যন্ত হয়েছে। অত্যন্ত উদ্বেগের চিত্র ভাঙড়ে। এদিন দুপুর থেকে তুমুল বোমাবাজি শুরু হয় বিজয়গঞ্জ বাজার এলাকায়। হাতে বন্দুক, লাঠি, দা, বোমা নিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে দুষ্কৃতীর দল। আইএসএফের দাবি, এরা সকলেই তৃণমূলের লোক। পাল্টা অভিযোগ, আইএসএফই সন্ত্রাস করছে ভাঙড়ে। রাজনীতির লড়াইয়ে টিকে থাকতে একে অপরকে দুষে দায় ঝাড়ার চেষ্টা করলেও ভাঙড়ের এমন ভয়াবহ দৃশ্য কাঁপন ধরাচ্ছে সাধারণ মানুষের বুকে। এরইমধ্যে আইএসএফ কর্মী বিডিও অফিসের সামনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। দাবি একটাই, মনোনয়ন পত্র দাখিল না করে তাঁরা এখান থেকে যাবেন না। প্রয়োজনে রাতভর বসে থাকবেন।
এক আইএসএফ কর্মী এদিন ভাঙড়-২ বিডিও অফিসের সামনে এসেছিলেন মনোনয়ন জমা দিতে। অভিযোগ করেন, সেই মনোনয়ন তিনি জমা দিতে পারেননি। বিডিও অফিসের বাইরে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তবে মনোনয়ন না দিয়ে তিনি যাবেন না বলে দাবি করেছেন। ওই আইএসএফ কর্মী একা নন, একই দাবি মনোনয়ন পত্র দাখিল করতে আসা আইএসএফ কর্মীদের।
আরেক আইএসএফ কর্মী ভুমরু থেকে এসেছেন। তিনি বলেন, “আমরা মনোনয়ন পত্র জমা দেবোই। সকাল ১০টায় বাড়ি থেকে বেরিয়েছি। গোলাগুলি চলছে। ১৫-২০ জন হাসপাতালে ভর্তি। আমাদের তিনটে ছেলে মারা গিয়েছে। পুলিশ গুলি করেছে। ওরা আইএসএফের কর্মী। তৃণমূলের লোকজন এসব করছে।”
রক্তে ভাসছে গা-মাথা। তিনিও দাবি করেছেন আইএসএফ করেন তিনি। বলছেন, “আমাদের গুলি নাকের পাশ দিয়ে বেরিয়ে গেল। তবে আমরা সারারাত এখানে থাকব। যতক্ষণ মনোনয়ন জমা না দিতে পারব, যাব না। আমাদের জীবন চলে যায় যাক। আমরা নড়ব না এখান থেকে।” আরেক আইএসএফ কর্মী বলেন, “আমরা বাড়ি ফিরবই বা কী করে? আমাদের তো প্রাণ চলে যাবে। বাড়ি গেলেও মারবে। রাস্তায়ও মারবে। হয় আমাদের নমিনেশন করতে দিক না হলে গুলি করে মেরে দিক।”