
কলকাতা: স্থানীয় লোকেরা বলেন, রাজায় রাজায় ভাবটা আগের থেকে কিছুটা বেড়েছে। তবে বীরভূমের অন্দরে ঠান্ডা লড়াইটা যে এখনও স্পষ্ট, তা নিয়ে কোনও মতবিরোধ রাখেন না রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
বীরভূমের রাজা কে? এই প্রশ্ন যদি ওঠে তবে এক দল চিৎকার করে বলবে কেষ্ট। অন্য দল গুণগান গাইবে কাজল শেখের। কেষ্টর জেলযাত্রার পরেই বীরভূমে ‘বিনা মুকুটে’ রাজা হয়ে উঠেছিলেন কাজল শেখ। তবে এখন পরিস্থিতি বদলেছে। জেলমুক্ত হয়েছেন কেষ্ট মণ্ডল। কিন্তু তারপরেও কি থেমেছে তাদের ঠান্ডা লড়াই? প্রশ্নের উত্তরটা এখনও অধরা। তবে বিশ্লেষকদের ইঙ্গিত এই যুদ্ধ এখনই থামার নয়।
এদিন সেই ‘যুদ্ধের’ ফলাফল আবার নতুন করে ভুগল বীরভূম, এমনটাই অভিযোগ। ভরদুপুরে একের পর এক বোমায় রীতিমতো ধোঁয়া ধোঁয়া হয়ে গেল চারপাশ। বিকট শব্দ। চোখে দেখা যাচ্ছে না কিছুই। বীরভূমে যেন বেজেছে রণডঙ্কা। এই কামান নিয়ে যুযুধান হল বলে দুই পক্ষ।
মঙ্গলবার কাঁকরতলা থানা এলাকার জামালপুরে বোমাবাজিকে কেন্দ্র করে ছড়াল উত্তেজনা। স্থানীয় সূত্রে খবর, বালির টাকা ভাগাভাগি নিয়ে যুযুধান হয়ে ওঠে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠী। তারপরই চলে বোমাবাজি। এলাকাজুড়ে তৈরি হয় রণক্ষেত্র পরিস্থিতি।
কাদের এই দুই গোষ্ঠী?
সূত্রের খবর, কাজল শেখ গোষ্ঠীর স্বপন সেন ও অনুব্রত মণ্ডল গোষ্ঠীর কোর কমিটির উজ্জ্বল হক কাদেরীর লোকজনের জেরেই চলে এই বোমাবাজির ঘটনা। জানা গিয়েছে, ঘটনায় ইতিমধ্যে জখম হয়েছেন একজন। বোমার আঘাতে পা উড়েছে এক তৃণমূল কর্মীর।
তবে বীরভূমের অন্দরে কোনও গোষ্ঠী ভাগাভাগি চলছে না বলেই মত তৃণমূল জেলা সভাপতি কাজল শেখের। তাঁর কথায়, ‘বীরভূম জেলায় তৃণমূল কংগ্রেসের একটাই গোষ্ঠী, সেটা হল মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় নেতৃত্বাধীন গোষ্ঠী। আমরা সকলেই তৃণমূল করি।’
এরপরই দলের অন্য এক নেতার দিকে দায় ঠেলে কাজল বলেন, ‘লোকসভার সময় বীরভূম জেলাকে একাধিক ভাগে ভাগ করে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ঘটনা যে এলাকায় ঘটেছে সেখানকার দায়িত্ব রয়েছে কোর কমিটির সদস্য সুদীপ্ত ঘোষ। উনিই একমাত্র বলতে পারবেন ঠিক কী ঘটেছে।’ তবে যাদের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ উঠছে, কাজল শেখের দাবি, সেই দুই নেতাকেই চেনেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘এদের প্রত্যেককেই আমি চিনি। আমরা প্রত্যেকেই হাতে হাত মিলিয়ে লোকসভায় কাজ করেছি।’