উত্তর দিনাজপুর: সরকারি স্কুলের পোশাক বিতর্ক এবার শিরোনামে। ইউনিফর্ম বিতরণ প্রকল্পে কোটি কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ। সেই ঘটনায় জেলাশাসককে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। উত্তর দিনাজপুর জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি এবং রাজ্যের মন্ত্রী গোলাম রব্বানির ভাই গোলাম রসুল ওরফে মণির বিরুদ্ধে টাকা তছরুপের অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন গোয়ালপোখরের এক ব্যক্তি। তাতেই আদালতের এই নির্দেশ।
প্রথম শ্রেণি থেকে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত সরকারি স্কুলের ছাত্র ছাত্রীদের বিনামূল্যে স্কুলের পোশাক দিতে রাজ্য সরকারের প্রকল্প রয়েছে। অভিযোগ, গোয়ালপোখর-১ ব্লকে এই প্রকল্পে সাড়ে ৮ কোটিরও বেশি টাকা নয়ছয় হয়েছে। অভিযোগকারী জইনুল হক বলেন, সরকারি স্কুলের পড়ুয়াদের ইউনিফর্ম বিতরণ সংক্রান্ত সরকারের প্রকল্পে এই ব্লকে দায়িত্ব নেয় মিলনমেলা মহাসংঘ স্বনির্ভর গোষ্ঠী। এরপরই টাকা নয়ছয় হয়েছে। জেলা পরিষদের সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত সহসভাধিপতি গোলাম রসুলও যুক্ত বলে দাবি জইনুল হকের।
মামলাকারী বলেন, প্রকল্পে বরাদ্দ টাকা এমন লোককে দেওয়া হয়েছে, যিনি পোশাক তৈরি বা সে সংক্রান্ত কোনও কিছুর সঙ্গে যুক্তই নন। শুধু তাই নয়, ওই স্বনির্ভর গোষ্ঠী কোনও পোশাক সরবরাহও করেনি বলে দাবি তাঁর। কোর্টে মামলাকারী জানান, জেলাশাসক, বিডিও, সার্কেল ইন্সপেক্টর, ডিস্ট্রিক্ট এডুকেশন অফিসার-সহ একাধিক পদাধিকারীকে বলেছিলেন। তারপরও মেলেনি সুরাহা।
জইনুল হক বলেন, “এটাকে রাজনৈতিক বলে কেউ ধরে নিলে হবে না। আমি দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব হয়েছি। ওরা দুর্নীতি করেছে। প্রমাণ হাতে নিয়ে তার প্রতিবাদ করছি মাত্র। যে মহাসংঘকে টাকা দিয়েছে, সেই টাকা তৃণমূলের নেতাদের অ্যাকাউন্টে ঢুকেছে।” অন্যদিকে গোলাম রসুলের বক্তব্য, “ইউনিফর্মের ব্যাপারে আমি কিছুই বলতে পারব না। প্রতি ব্লকেই মহাসংঘ হয়। গোয়ালপোখরেও আছে। এজেন্সি মহাসংঘকে পোশাক দেয়। তারা স্কুলে স্কুলে পৌঁছয়। শুনেছি প্রধান শিক্ষকের কাছে রসিদও নিয়েছে মহাসংঘ। এর বেশি আমার পক্ষে বলা সম্ভবই নয়।” মন্ত্রী গোলাম রব্বানির কথায়, “দুর্নীতির কোনও প্রশ্নই নেই। আমরা দুর্নীতিতে থাকি না। জেলাশাসক তদন্ত করবেন। আইন আইনের মতোই চলুক।”