গোয়ালপোখর: কম্বলের তলা থেকে বন্দুক বের করে পুলিশকে যেভাবে আক্রমণ করা হয়েছে, তা চমকে দেওয়ার মতো। মাফিয়া-ডনদের নিয়ে তৈরি সিনেমার স্ক্রিপ্ট যেন বাস্তবের মাটিতে। গোয়ালপোখর কাণ্ডে নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ প্রশাসন। জেলায় গিয়ে বৈঠক করেছেন খোদ রাজ্য পুলিশের ডিজি রাজীব কুমার। তবে এবার সামনে আসছে রীতিমতো চমকে দেওয়ার মতো তথ্য। সেদিন অভিযুক্ত সজ্জাক আলমের হাতে অস্ত্রটা দিয়েছিল বাংলাদেশি যুবক! এমনটাই দাবি করেছেন সরকারি আইনজীবী।
গত বুধবার উত্তর দিনাজপুরের গোয়ালপোখরের ওই ঘটনা রীতিমতো নাড়িয়ে দিয়েছে পুলিশ প্রশাসনকে। দিনের আলোয় পুলিশকে গুলি চালাতে যদি দুষ্কৃতীর হাত না কাঁপে, তাহলে সাধারণ মানুষের তো বাড়ির বাইরে বেরনোই দায়। আর এবার সরকারি আইনজীবী যা দাবি করলেন, তাতে নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
ঘটনার তিনদিন পরও অধরা সাজ্জাক। এই পরিস্থিতিতে সরকারি আইনজীবী মোক্তার আহমেদ দাবি করলেন, সজ্জাককে অস্ত্র দিয়েছিলেন আব্দুল হোসেন ওরফ আবাল নামে এক ব্যক্তি। পুলিশ প্রাথমিকভাবে এটাই মনে করছে। আর সেই আব্দুল ওরফে আবাল নাকি বাংলাদেশের বাসিন্দা।
আইনজীবী জানান, ২০১৯-এ একটি মামলায় গ্রেফতার হয়েছিলেন আব্দুল। অস্ত্র আইনে গ্রেফতার করা হয়েছিল তাঁকে। তাঁর ৮০ হাজার টাকা জরিমানা ধার্য করা হয়। পরে বাংলাদেশি নাগরিক বলে তাঁকে পুশব্যাক করা হয়। অর্থাৎ বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। মূল অভিযুক্ত সজ্জাকও ওই সময় গ্রেফতার হয়েছিলেন। আইনজীবীর দাবি, সেই ঘটনার চার বছর পরও সে দিন কোর্টে দেখা যায় আব্দুলকে। প্রশ্ন উঠছে, তবে কি আব্দুলের সঙ্গে জেল থেকেই যোগাযোগ রেখেছিলেন সজ্জাক?
এই ঘটনায় হতবাক পুলিশ প্রশাসন থেকে রাজনৈতিক নেতারা। প্রাক্তন পুলিশকর্তা অরিন্দম আচার্য বলেন, “কীভাবে ইন্টারলিঙ্ক রয়েছে দেখুন। জেলে থাকাকালীন বাংলাদেশ থেকে যোগাযোগ করতে পারে কীভাবে? বাংলাদেশি উগ্রপন্থীরা কোথায় পৌঁছেছে!” তাঁর দাবি, এ দেশে আইন আছে অনেক কিন্তু প্রয়োগ নেই।
বিজেপি নেতা সজল ঘোষও দাবি করেন, বিএসএফ ও পুলিশ উভয়েরই উচিত বিষয়টা দেখা। তিনি বলেন, “এখন আর বাংলাদেশ থেকে সোনা হেরোইন আসছে না। অস্ত্রও আসছে। একে অপরকে দোষ না দিয়ে পুলিশ ও বিএসএফ-কে সচেষ্ট হতে হবে।”