Chopra: তালিবানি কায়দায় ‘বাংলার মেয়েকে’ পেটাচ্ছে তৃণমূলের জেসিবি, কে এই বাহুবলী?

Chopra: এক মহিলার বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগে রাস্তায় ফেলে তালিবানি কায়দায় বেধড়ক মারধরে অভিযুক্ত জেসিবি। ভাইরাল ভিডিয়োতেও দেখা যাচ্ছে, তিনি যখন লাঠি হাতে মারধর করছেন, তখনও আশপাশের মানুষ কার্যত দাঁড়িয়ে দেখেছেন। তাঁকে আটকানোর মতো ক্ষমতা কারোর নেই।

Chopra: তালিবানি কায়দায় 'বাংলার মেয়েকে' পেটাচ্ছে তৃণমূলের জেসিবি, কে এই বাহুবলী?
জেসিবি আটক।Image Credit source: TV9 Bangla
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 30, 2024 | 5:48 PM

চোপড়া: যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একসময়ে বার্তা ছিল ‘বাংলা নিজের মেয়েকেই চায়’, সেই ‘বাংলার মেয়েকে’ রাস্তায় ফেলে প্রকাশ্যে নৃশংসভাবে অত্যাচার করা হচ্ছে। এক ঝলকে দেখলে মনে হবে তালিবান দেশের একটি দৃশ্য। এক ষণ্ডা মার্কা চেহারার যুবক ছিপছিপে লাঠির গোছা নিয়ে পেটাচ্ছে যুবক-যুবতীকে। ‘অপরাধ’ বিবাহ বর্হিভূত সম্পর্ক তাঁদের। উপুড় করে যুবতীর পশ্চাতদেশে মারছেন, হাত তুলে মারছেন বগলে। যুবতীর পাশেই রাস্তায় বসে থাকা যুবককেও একই কায়দায় মারধর করছে ওই ব্যক্তি। দাঁড়িয়ে দেখছেন সকলেই, কিন্তু তাঁকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেননি কেউই। এমন দৃশ্য আফগানিস্তানে দেখতে অভ্যস্ত গোটা বিশ্ব। কিন্তু এই দৃশ্য বাংলায়। চোপড়ায় এই গোটা ঘটনার একটি ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এসেছে, যার সত্যতা যাচাই করেনি TV9 বাংলা। আর তালিবানি কায়দায় যে যুবককে মারতে দেখা যাচ্ছে, আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এখন তিনি। নাম জেসিবি? কে এই জেসিবি?

জানা যাচ্ছে, জেসিবি চোপড়ার বেশ প্রভাবশালী তৃণমূল নেতা। নাম তাজেমুল। তিনি বিধায়ক হামিদুর রহমানের ঘনিষ্ঠ। সূত্রের খবর, বিধায়ক ঘনিষ্ঠ হওয়ার সুবাদে উত্তর দিনাজপুর জেলার চোপড়া ব্লকের লক্ষ্মীপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সর্বেসর্বা। স্থানীয় বাসিন্দারা কেউই তাঁর সম্পর্কে ক্যামেরার সামনে মুখ খুলতে চান না। ভয়ে সিঁটিয়ে থাকেন সকলেই। এলাকায় যেন তিনিই প্রশাসক! তাঁর কথাতেই এলাকায় সকলের ওঠাবসা। এমনকি তাঁর ভয়ে পুলিশ প্রশাসন তো দূরের কথা, সংবাদমাধ্যমের সামনেও মুখ খুলতে চান না স্থানীয় বাসিন্দারা। পুলিশ সূত্রে খবর, জেসিবি-র বিরুদ্ধে একাধিক খুনের মামলা রয়েছে।

এক মহিলার বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের অভিযোগে রাস্তায় ফেলে তালিবানি কায়দায় বেধড়ক মারধরে অভিযুক্ত জেসিবি। ভাইরাল ভিডিয়োতেও দেখা যাচ্ছে, তিনি যখন লাঠি হাতে মারধর করছেন, তখনও আশপাশের মানুষ কার্যত দাঁড়িয়ে দেখেছেন। তাঁকে আটকানোর মতো ক্ষমতা কারোর নেই। জানা যাচ্ছে, এক ব্যক্তি লুকিয়ে মোবাইলে ভিডিয়োটা করেছিলেন। সেই ব্যক্তি এখন ভয়ে গ্রাম ছাড়া বলে জানা যাচ্ছে। আর চোপড়ার অনেকেই ভিডিয়ো নিজের সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করেছিলেন। অভিযোগ, চাপের মুখে প্রত্যেকেই তাঁরা সেই পোস্ট ডিলিট করেছেন।

এমনকি এই ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসার পর, গোটা বাংলায় যখন নিন্দার ঝড়, চোপড়ার বিধায়ক হামিদুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল TV9 বাংলা। বিধায়কের বক্তব্য, “আমি হোয়াটসঅ্যাপে এই ভিডিয়ো দেখেছি। ১ ঘণ্টা আগে ভিডিয়োটা দেখেছিলাম।” তাহলে এই ভিডিয়ো দেখার পরও কী পদক্ষেপ করেছেন তিনি? প্রশ্ন করতে তিনি বলেন, “আমি জেসিবি-দের ডেকে পাঠিয়েছি। শুনতে হবে কী হয়েছিল আসলে। সবাই তৃণমূলের।” জেসিবি-র নাম উঠতেই কার্যত তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠেন বিধায়ক। পাল্টা সংবাদমাধ্যমকেই প্রশ্ন করেন, “এটা নিয়ে তিলকে তাল করছেন কেন?”

বিজেপি সাংসদ শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “বাংলায় এ ধরনের অজস্র ঘটনা ঘটে। কিন্তু অপরাধগুলোকে চেপে দেওয়া হয়। বারাসতের একটি ছেলে বিয়ে করেছিল ভিন ধর্মের মেয়েকে। সে যখন এক বছরের শিশুপুত্রকে দেখতে শ্বশুরবাড়িতে গেল, তাঁকে জীবন্ত পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। ভ্যানচালক তাঁকে তুলি নিয়ে গিয়ে নার্সিংহোমে ভর্তি করান। এখন হাইকোর্টে মামলা চলছে। এই ধরনের ঘটনা ঘটছেই। বিধায়ক তাঁকে চিনবেই। ব্যক্তিগত মানসিকতার কারণে হয়নি।”