রায়গঞ্জ: কন্যাশিশুকে অচৈতন্য অবস্থায় নিয়ে রায়গঞ্জ মেডিক্যাল কলেজের জরুরি বিভাগে আসেন এক ব্যক্তি। চিকিৎসকরা শিশুকন্যাটিকে পরীক্ষা করে দেখেন, সে মারা গিয়েছে। এরপর মেয়ের মৃতদেহ নিয়ে বাবা চলে যেতে চাইলে বাধা দেন স্বাস্থ্য কর্মীরা। খবর দেন পুলিশ। আর পুলিশ এসে বাবাকে জিজ্ঞাসা করতেই জানা গেল আসল ঘটনা। পাঁচ বছরের ওই শিশুকন্যাকে খুন করেছে তার বাবা-ই। ঘটনাটি রায়গঞ্জের সুদর্শনপুরের। মৃত শিশুকন্যার বাবা একজন ব্যবসায়ী।
পুলিশ জানিয়েছে, রায়গঞ্জ হাসপাতালের কাছ থেকে খবর পেয়েই তারা হাসপাতালে যায়। এরপর ওই ব্যক্তির বাড়িতে যায় পুলিশ। সেখানকার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে। সেখানে দেখা যায়, ওই শিশুকন্যাকে নিয়ে তার বাবা নিজের অফিসরুমে ঢোকেন। কিছুক্ষণ পর মেয়ের নিথর দেহ নিয়ে বেরিয়ে আসেন।
এরপরই পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে ভেঙে পড়েন ওই ব্যক্তি। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদে নিজের মেয়েকে খুনের কথা স্বীকার করেন ওই ব্যক্তি। মেয়েকে গলায় দড়ি দিয়ে খুন করেন। তারপর নিজেও আত্মঘাতী হওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। কিন্তু, তার আগে তাঁর বড় ছেলে ওই অফিসরুমে চলে আসে। তখন আর আত্মঘাতী হতে পারেননি ওই ব্যক্তি। মেয়েকে নিয়ে হাসপাতালে আসেন।
পুলিশ জানিয়েছে, এই শিশুকন্যা ছাড়াও ওই ব্যবসায়ীর দুই পুত্র রয়েছে। রয়েছেন তাঁর স্ত্রী। বাজারে ব্যবসায়ীর অনেক ঋণ রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এই খুনের কারণ হিসাবে ওই ব্যক্তি পুলিশকে জানিয়েছেন, কিছুদিন থেকেই তাঁর মনে হচ্ছিল, তিনি মারা গেলে তাঁর কন্যাকে কেউ সঠিকভাবে দেখভাল করবে না। সেই ভয় থেকেই তিনি তাঁর শিশুকন্যাকে খুন করেছেন। তদন্তের স্বার্থে পুলিশের তরফে এর থেকে বেশি তথ্য জানানো হয়নি। ওই ব্যবসায়ীর নাম প্রকাশও করতে চায়নি পুলিশ।
রায়গঞ্জ পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার মহম্মদ সানা আখতার বলেন, “ওই ব্যক্তি নিজের শিশুকন্যাকে খুনের কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন। তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। সবদিক খতিয়ে দেখে তদন্ত করা হচ্ছে।” বুধবার অভিযুক্তকে রায়গঞ্জ আদালতে পেশ করা হবে।