উত্তর দিনাজপুর: কাজে ফাঁকি দিয়ে আর নেই রেহাই। ‘ফাঁকিবাজ’ শিক্ষকদের টাইট দিতে এবার কড়া পদক্ষেপের পথে উত্তর দিনাজপুর জেলা প্রশাসন। বিশেষ অ্যাপ চালু করছে উত্তর দিনাজপুর জেলা প্রশাসন। মোবাইলে থাকবে সেই অ্যাপ। সেখানেই বায়োমেট্রিক পদ্ধতি মেনে হাজিরা দিতে হবে শিক্ষকদের। পুজোর ছুটির পরেই পাকাপাকিভাবে এই ব্যবস্থা চালু হবে বলে জানা যাচ্ছে জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর। হঠাৎ এত কড়া কেন প্রশাসন?
প্রশাসনের দাবি, বিভিন্ন প্রাথমিক স্কুলে সঠিক সময়ে স্কুলে না আসার অভিযোগ আসে অনেক শিক্ষকদের বিরুদ্ধে। যে কারণে প্রায়ই বিভিন্ন স্কুলে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভেও সামিল হতে দেখা যায় পড়ুয়া থেকে শিক্ষকদের। একাধিকবার অভিযোগ জমা পড়েছে জেলা শিক্ষা দফতরের কাছেও। সেই অভিযোগের প্রেক্ষিতেই এই উদ্যোগ বলে জানা যাচ্ছে।
প্রশাসন সূত্রে খবর, ওই বিশেষ অ্যাপ বাধ্যতামূলকভাবে শিক্ষকদের ইনস্টল করতে হবেই। স্কুলে পৌঁছে সেই অ্যাপ খুলে ফিঙ্গারপ্রিন্ট ও ফেসলকের মতো বায়োমেট্রিক সিস্টেমে লগ ইন করে হাজিরা দিতে হবে শিক্ষকদের। অ্যাপের সঙ্গে জুড়ে থাকছে জিপিএস। ফলে শিক্ষকরা স্কুল টাইমে কোথায় যাচ্ছেন, কোথায় থাকছেন সবটাই নজরাধীন থাকবে প্রশাসনের।
জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (প্রাথমিক) জানিয়েছেন, অভিযোগ প্রচুর। স্কুলে না আসা, সময়ে না থাকা, ক্লাস না নিয়ে অন্যকাজে চলে যাওয়া বা প্রশাসনিক কাজে থাকার নামে বাইরে চলে যাওয়ার মতো অনেক অভিযোগ এসেছে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে। সে কারণেই জেলা প্রশাসনের তরফে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এদিকে এ উদ্যোগ নিয়ে চাপানউতোর তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক মহলেও। এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন শাসক-বিরোধী সব পক্ষই। তবে খোঁচা দিতে ছাড়েনি বিরোধী শিবির। তাঁদের দাবি, শাসকদলের ছত্রছায়ায় থাকা শিক্ষকেরাই স্কুলে না গিয়ে রাজনৈতিক কাজে যুক্ত থাকেন। বিশেষত তাঁদের জন্য এই ব্যবস্থা যথেষ্টই উপযুক্ত বলে দাবি বিরোধী শিক্ষক সংগঠনের নেতৃত্বের। অন্যদিকে শিক্ষকদের ফাঁকিবাজি মানতে নারাজ শাসক নেতৃত্ব। তাদের দাবি, অন্যান্য ক্ষেত্রের মতো শিক্ষা ক্ষেত্রেও এই ব্যবস্থা শিক্ষকদের জন্য চালু হওয়া দরকার ছিল। এতে শিক্ষা ব্যবস্থার গুণগত মান বাড়বে বলেই তাদের দাবি। সূত্রের খবর, উত্তর দিনাজপুরে মোট প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ১,৪৬৮ টি। মোট শিক্ষকের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৭ হাজার। শাসক নেতারা সিংহভাগ ক্ষেত্রেই কোনও স্কুলে শূন্যপদ নেই বলে দাবি করলেও বিরোধী নেতৃত্বের দাবি প্রধান শিক্ষকের জন্য ৮৭৯টি ও সহ-শিক্ষক মিলিয়ে প্রায় ১৫০০টি শূন্যপদ এখনও রয়েছে। এখন দেখার পরিস্থিতির বদল কবে হয়।