
রায়গঞ্জ: তিনি শাসকদলের বিধায়ক। রায়গঞ্জ পৌরসভাও তৃণমূলের দখলে। সেই রায়গঞ্জ পৌরসভার বিরুদ্ধে সরব হলেন তৃণমূল বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী। পৌরসভার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে পুজো কার্নিভালে অংশ না নেওয়ার কথা জানালেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর এই পোস্ট ঘিরে রাজনৈতিক মহলে শোরগোল পড়েছে। আর কয়েকমাস পর রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে কৃষ্ণ কল্যাণীর দলবদলের জল্পনা শুরু হয়েছে।
শনিবার সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি লেখেন, “শহরের বর্তমান পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। রায়গঞ্জ পৌরসভা ও প্রশাসনের চরম অবহেলার কারণে শহরের পরিচ্ছন্নতা ও পরিকাঠামো উন্নয়ন সম্পূর্ণভাবে থমকে গেছে। জলাবদ্ধতা, নোংরা রাস্তাঘাট, অপর্যাপ্ত বর্জ্য ব্যবস্থাপনার দুরবস্থা আজ আমাদের সকলের চোখে পড়ছে।”
সরকার টাকা দিলেও পৌরসভা যে ‘ব্যর্থ’, সেকথাই উল্লেখ করেন রায়গঞ্জের তৃণমূল এই বিধায়ক। সাধারণ মানুষ যে এই নিয়ে ক্ষিপ্ত, সেকথাও তিনি মেনে নিয়েছেন। পৌরসভার বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ তোলেন তিনি। এরপরই তিনি লেখেন, “এই অবস্থায় শহরের উন্নয়ন ও নাগরিক সুরক্ষাকে উপেক্ষা করে শুধুমাত্র উৎসবের নামে প্রদর্শনীতে সামিল হওয়া অনুচিত।” তাই, তিনি পুজো কার্নিভালে উপস্থিত থাকছেন না বলে জানান।
তাঁর এই পোস্ট ঘিরে রাজনৈতিক মহলে শোরগোল শুরু হয়েছে। কৃষ্ণ কল্যাণীর পোস্ট নিয়ে রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, “ভোট যত এগিয়ে আসবে, তত পাঁচিলে ওঠা তৃণমূল নেতা, গাছে ওঠা তৃণমূল নেতার সংখ্যা বাড়বে। নানা ধরনের মন্তব্য আসবে। নানা ধরনের কাজ সামনে আসবে। আর একজন পাঁচিলে ওঠার চেষ্টা করছেন বলে আমার মনে হয়।” প্রসঙ্গত, মুর্শিদাবাদের বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার বাড়িতে কিছুদিন আগে ইডি অভিযান চালালে বিধায়ক পাঁচিলে উঠে পড়েছিলেন। রাজনীতির কারবারিরা বলছেন, সেকথা টেনেই কৃষ্ণ কল্যাণীকে খোঁচা দিলেন সুকান্ত।
বিধানসভা নির্বাচনের মাস সাতেক আগে কৃষ্ণ কল্যাণীর এমন পোস্টে তাঁর দলবদলের সম্ভাবনা নিয়েও আলোচনা শুরু হয়েছে। একুশের বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। রায়গঞ্জ আসন থেকে বিজেপির টিকিটে জেতেনও। কয়েকমাস যেতে না যেতেই তৃণমূলে যোগ দেন তিনি। চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনে রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের টিকিটে প্রার্থী হন। তার আগে বিধায়ক পদে ইস্তফা দিয়েছিলেন। তবে লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি প্রার্থী কার্তিকচন্দ্র পালের কাছে হেরে যান। এরপর রায়গঞ্জ বিধানসভার উপনির্বাচনে তৃণমূলের টিকিটে জয়ী হন তিনি। কিন্তু, পুজো কার্নিভালে যোগ না দেওয়ার কারণ নিয়ে তাঁর পোস্টে দলবদলের জল্পনা বেড়েছে। এই পোস্ট নিয়ে যোগাযোগ করা হলে কৃষ্ণ কল্যাণী বলেন, যা বলার সোশ্যাল মিডিয়াতে বলেছেন। অন্য কিছু আর বলার নেই তাঁর।