উত্তর দিনাজপুর: কালিয়াগঞ্জকাণ্ড (Kaliagang) নিয়ে এবার সিবিআই তদন্তের দাবি জানালেন ভারত সেবাশ্রম সংঘের প্রবীন সন্ন্যাসীরাও। শনিবার দুপুরে কালিয়াগঞ্জের সাহেবঘাটায় যান সংঘের একদল সন্ন্যাসী। ৫০ জন আসার কথা থাকলেও এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি থাকায় পুলিশি নিষেধাজ্ঞায় হাতে গোনা কয়েকজন সন্ন্যাসী প্রথমে সাহেবঘাটায় নিহত নাবালিকার বাড়িতে যান। পরে তারা রাধিকাপুরে নিহত মৃত্যুঞ্জয় বর্মনের বাড়িতেও যান। এলাকার শান্তি বজায় রাখার বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি দুই ঘটনাতেই সিবিআই তদন্তের দাবি তুলেছেন তাঁরা। পাশাপাশি নিহত মৃত্যুঞ্জয়ের শিশুর লেখাপড়ার দায়িত্ব নেওয়া হবে বলে জানান তারা। সেবাশ্রম সংঘের পরিচালন সমিতির সদস্য স্বামী প্রদীপ্তানন্দজী মহারাজ বলেন, “সমাজের দুর্দিনে আমরা ঘরে বসে থাকতে পারি না। সত্য উদঘাটন হওয়া দরকার। তদন্ত হওয়া দরকার। সিবিআই তদন্ত দরকার। আজকে বাংলার বুকে যেটাই সিবিআই তদন্ত হচ্ছে সত্য বেরিয়ে আসছে।” অন্যদিকে নিহত মৃত্যুঞ্জয় বর্মনের পরিবারের বাড়িতে না থাকার বিষয়েও সরব হন ভারত সেবাশ্রম সংঘের সন্ন্যাসীরা। বলেন, “যে বাচ্চাটি যাতে লেখাপড়া থেকে সমস্ত সুযোগ সুবিধা ভারত সেবাশ্রম গ্রহণ করবে। যতদূর পড়তে চায় সব সহযোগিতা করব।”
গত মাসে দ্বাদশ শ্রেণির এক ছাত্রীর রহস্যমৃত্যু ঘটে কালিয়াগঞ্জের সাহেবঘাটায়। সকালে বাড়ির অদূরে একটি পুকুরের ধারে ওই কিশোরীর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন এলাকার লোকজন। বাড়ি থেকে কাজের জন্য বেরিয়েছিল সে। তারপর আর ফেরেনি। স্থানীয় বাসিন্দারাই পুকুরের ধারে ওই ছাত্রীকে পড়ে থাকতে দেখে। ছাত্রীর পরিবার, এলাকার লোকজন এবং বিজেপির তরফে দাবি করা হয়, ওই ছাত্রীকে শারীরিক নির্যাতন করে খুন করা হয়েছে। এই ঘটনায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দফায় দফায় উত্তপ্ত হয় এলাকা।
এদিন ভারত সেবাশ্রম সংঘের পরিচালন সমিতির সদস্য স্বামী প্রদীপ্তানন্দজী মহারাজ বলেন, “ভারত সেবাশ্রমের প্রধান কার্যালয়ের প্রধান সম্পাদক আমাদের পাঠিয়েছেন। ভারত সেবাশ্রম সংঘের যিনি প্রতিষ্ঠাতা আচার্য শ্রী প্রণবানন্দজী মহারাজ তাঁর প্রথম জীবনেই আদিবাসী, বনবাসী, রাজবংশী সমাজে কাজ করেছেন। আমাদের দিনাজপুরে যত আশ্রম আছে, সমস্ত আশ্রমের মহারাজরা আজ এসেছি। আমাদের আশ্রমে রাজবংশী, আদিবাসী সম্প্রদায়ের প্রায় হাজার দু’য়েক ছেলেমেয়ে পড়াশোনা করে। আমাদের যিনি সম্পাদক এই ঘটনা সংবাদপত্রে পড়ার পরই নির্দেশ দেন এখানে আসতে। আজ এসেছি। আরও অনেক সন্ন্যাসী এসেছেন। যেহেতু এখানে ১৪৪ ধারা জারি, তাই আইসি আবেদন করেন মিটিং মিছিল করতে না। আমরা সেটা মেনে নিয়েছি। সকলেই জানে ভারত সেবাশ্রম জাতি ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে রাজনৈতিক দলমত নির্বিশেষে মানুষের পাশে দাঁড়াই। আমরাও এই ঘটনায় ব্যথিত।”