পশ্চিমবঙ্গ: শুক্রবার তৃণমূলের প্রার্থী তালিকা (TMC Candidate List) প্রকাশের পর একের পর টিকিট না পাওয়া বিদায়ী বিধায়কের অভিমান ও অভিযোগের তালিকা অব্যাহত। কান্নায় ভেঙে পড়ে সাতগাছিয়ার বিদায়ী বিধায়ক সোনালি গুহ (Sonali Guha) বললেন, তিনি বিশ্বাসই করতে পারছেন না। পাশে থাকার এই দাম দিলেন দিদি? বসিরহাটের বিদায়ী বিধায়ক দীপেন্দু বিশ্বাস (Dipendu Biswas)-এর প্রশ্ন, কেন তাঁকে সাইডলাইনে বসিয়ে দিলেন দিদি?
এদিন একঝাঁক নতুন মুখকে প্রার্থী করেছে তৃণমূল (TMC)। ফলত একাধিক বিদায়ী বিধায়ককে এবার টিকিট দেওয়া হচ্ছে না। প্রার্থী তালিকা প্রকাশের সময় তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) পুরনো নেতা -বিধায়কদের বার্তা দিয়েছেন পরে তাঁদের অনেককে বিধান পরিষদে জায়গা করে দেবেন। কিন্তু অভিমান, ক্ষোভ বাধা মানছে না বিদায়ী বিধায়কদের।
সোনালি গুহ: একটা সময়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের খুবই কাছের মানুষ বলে পরিচিত ডায়মন্ড হারবার লোকসভার অন্তর্গত সাতগাছিয়ার বিদায়ী বিধায়ক সোনালি গুহ। সেই তাঁকেই এবার প্রার্থী না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ওই কেন্দ্রে তৃণমূলের নয়া প্রার্থীর নাম মোহনচন্দ্র নস্কর। এই ঘোষণা শুনেই কান্নায় ভেঙে পড়লেন বিদায়ী বিধায়ক। তাঁর কথায়, “আমি তো দিদি ছাড়া কিছুই বুঝি না।” অভিমানী সোনালি যোগ করেন, “দীর্ঘদিন একসঙ্গে থাকার এই দাম দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূল কংগ্রেস! ভালোই সম্মান পেলাম। আমি মমতাদির বাড়ির লোক ছিলাম। মমতাদি এটা করতে পারেন, বিশ্বাস করতে পারছি না।” তারপর কান্নায় ভেঙে পড়েন সোনালি। কাঁদতে কাঁদতেই মমতার উদ্দেশে তাঁর বার্তা, “দিদি যেন এবারও মুখ্যমন্ত্রী হতে পারেন।” তিনি আরও বলেন, দিদিকে ভগবান শুভ বুদ্ধি দিক।
এদিন প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করার সময়ে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, সোনালি-র সুগার হাই আছে। তাই প্রার্থী করা হল না। কিন্তু সাংবাদমাধ্যমের সামনে কান্নায় ভেঙে পড়ে সোনালি বলেন ‘আমার সুগার কখনও হাই থাকে, কখনও লো’। তিনি যোগ করেন দিদি তাঁকে আগে জানাতে পারতেন যে, তাঁকে প্রার্থী করা হচ্ছে না।
দীপেন্দু বিশ্বাস: তৃণমূলের প্রার্থী তালিকায় এবার তারকার মেলা। কিন্তু সেখানে জায়গা হল না বসিরহাট দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক তথা তারকা ফুটবলার দীপেন্দু বিশ্বাসের। যা নিয়ে প্রাক্তন ফুটবলার তথা বিদায়ী বিধায়কের ক্ষোভ, তাঁকে সাইডলাইন করে দিলেন দিদি। ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন, “দীর্ঘ সাড়ে ছয় বছরের রাজনৈতিক লড়াইয়ে একবার বাদে প্রতিবার ভোটের লড়াইয়ে দলকে জিতিয়েছি। মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি সর্বক্ষণ। আমার ব্যবহারে কেউ দুঃখ পেলে ক্ষমা করে দেবেন।”
এরপর সংবাদমাধ্যমকে হতাশ দীপেন্দু জানান, “আমি দলের জন্য যথেষ্ট পরিশ্রম করেছি। বসিরহাটে বিরোধী বলে কিছু নেই। ওখানে আমার বাবা থাকেন। গত ৫ বছর লাগাতার বাড়ি থেকে মানুষকে পরিষেবা দিয়েছি। তাই কেন আমাকে টিকিট দেওয়া হল না তা আমাকে জানাতে পারতো। আমার সঙ্গে সুব্রত বক্সি, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাল সম্পর্ক। এটুকু আশা করেছিলাম।”