বীরভূম: একুশের নির্বাচনের প্রার্থী তালিকা ঘোষণা প্রায় শেষ। ঘোষিত হয়েছে জোড়াফুলের (TMC) ইস্তাহারও। কিন্তু, নির্বাচিত প্রার্থীকে নিয়ে দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে ছেদ পড়েনি। শুক্রবার, দুবরাজপুরে তৃণমূলের প্রার্থী বদলের জেরে স্পষ্ট হল, ‘শেষ হয়েও হইল না শেষ।’
একুশের নির্বাচনে তৃণমূলের (TMC) তরফে দুবরাজপুরে প্রার্থী হয়েছিলেন খয়রাশোল পঞ্চায়েতের নেত্রী অসীমা ধীবর। কিন্তু, দলের একাংশ প্রার্থী হিসেবে তাঁকে মেনে নিতে পারেননি। সূত্রের খবর, খোদ বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের অপছন্দের তালিকায় ছিলেন অসীমা। তাই ‘দলের কথা’ ভেবেই দিদির কাছে প্রার্থী বদলের আবেদন করেন কেষ্ট (Anubrata Mondal)।
শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠক করে অসীমা ধীবরের পরিবর্তে দেবব্রত সাহাকে নিজের পাশে বসিয়ে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেন অনুব্রত। এ দিন অনুব্রত বলেন, “দেবব্রত ভাল ছেলে। সিউড়ি বিদ্যাসাগর কলেজের অধ্যাপক। দুবরাজপুর ভাল প্রার্থী পেল। ও ভাল ছেলে, ভাল কাজ করবে।” তাহলে কি অসীমা ভাল প্রার্থী ছিলেন না? এ প্রসঙ্গে অনুব্রত জানান, “অসীমার জন্যই নতুন প্রার্থী নিতে হল। কারণ অসীমাই বিধায়ক পদে লড়তে চাননি। তাই তাঁকে দলের অন্য কাজে বিশেষ নজর দিতে বলা হয়েছে।”
যদিও অসীমার অভিযোগ ছিল, তাঁকে দলের পক্ষ থেকে প্রচার করতে মানা করা হয়। কোনও জেলা নেতৃত্বই তাঁর জন্য প্রচার করেননি। দলের এই আচরণে কার্যত ক্ষুব্ধ ও অপমানিত বোধ করছেন তিনি। এমনটাই স্পষ্ট করে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন অসীমা। কিন্তু শুক্রবার প্রার্থী বদল নিয়ে সম্পূর্ণ অন্য বিধান দিলেন অনুব্রত। প্রার্থী তালিকা থেকে নাম বাদ যাওয়ার পর অসীমার থেকে অবশ্য কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, কেষ্টর সঙ্গে আগাগোড়াই আদায়-কাঁচকলায় সম্পর্ক অসীমার। কিছুদিন আগেই অসীমার হয়ে নির্বাচনী প্রচারে অংশ নিয়েছিলেন অনুব্রত। কেননা, সরাসরি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee) বা পিকে-র টিমের বিরোধিতা করতেও চাননি কেষ্ট। তাই দলের কর্মীদের ক্ষোভকে ঢাল করে সেফসাইডে খেললেন অনুব্রত। জেলার রাজনৈতিক মহল বলছে, বিধায়ক বা সাংসদ না হয়েও বীরভূমের একচ্ছত্র নায়ক যে অনুব্রতই, তা এই ঘটনায় আবার প্রমাণিত হল।
আরও পড়ুন: ‘মুকুল রায় হেভিওয়েট হলে কি আমি লাইট ওয়েট’! তোপ কৌশানীর, নীরব ‘চাণক্য’