
ঢাকা: কে, কত বড় ভারত বিরোধী, বাংলাদেশে এখন তার অদৃশ্য প্রতিযোগিতা। রয়েছে অন্তবর্তী প্রশাসন, তাঁদের সহকারি জামাত সকাল থেকে রাত! ভারতবিরোধীতাই এখন তাদের একমাত্র অভিপ্রায়। আর এই ফাঁকেই দেশের একটা বড় অংশ কার্যত বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার জোগাড়।
বাংলাদেশের ভিতরে একটা নতুন দেশ। বাংলাদেশ- মায়ানমার সীমান্তে নেকনাফ জেলার একটা অংশ এখন আরাকান আর্মির দখলে। কিছুক্ষণ আগে নর্থইস্ট নিউজের কাছে সেই দাবি করলেন আরাকান আর্মির গ্রুপ কমান্ডার। ওই কমান্ডারের দাবি, টেকনাফের একটা অংশ পুরোপুরি আরাকান আর্মির কন্ট্রোলে। আমরা এখানে ঘাঁটি তৈরি করে মায়ানমারে অপারেট করব। এই দাবি যদি সত্যি হয়, তা হলে কিন্তু বলতেই হচ্ছে, বাংলাদেশের বড় বিপদ। ঘোর সঙ্কট। আরাকান আর্মির ওই কমান্ডার যা দাবি করছেন, তার মানে দাঁড়াচ্ছে দুটো। এক, বাংলাদেশের জমি আরাকান আর্মির দখলে চলে গিয়েছে। দুই, বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী বা বিজিবি নিজের দেশের সীমান্ত রক্ষায় ব্যর্থ। টেকনাফে বাংলাদেশের চেক-পোস্টগুলিও তাঁদের হাতছাড়া হয়েছে। বা সেখান থেকে বিজিবিকে মেরে তাড়িয়েছে আরাকান আর্মি।
অবশ্য, আরাকান আর্মি কমান্ডারের দাবি কতটা সত্যি, বা আদৌ সত্যি কিনা তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। আমি শুধু বলতে পারি, এখন ওই এলাকায় যা পরিস্থিতি, তাতে একে ফাঁকা আওয়াজ ভাবার কারণ নেই। অবস্থা খারাপ বলেই না এদিন ইউনূস মিশরে পৌঁছে আবদেল এল-সিসির কাছে হস্তক্ষেপের অনুরোধ করেছেন বাংলাদেশের অন্তবর্তী সরকারের প্রধান মহম্মদ ইউনুস। শিশি একটু পাত্তা দেননি বলেই খবর। আবার মায়ানমার নিয়ে থাইল্যান্ডে ক্রাইসিস মিটিংয়েও আন্তর্জাতিক সাহায্যের আবেদন করেছেন অন্তবর্তী সরকারের বিদেশ বিষয়ক উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। মায়ানমার নিয়ে এদিন থেকে ব্যাঙ্ককে শুরু হয়েছে ৬ দেশের ক্রাইমিস মিটিং। বাংলাদেশ, মায়ানমার ছাড়াও বৈঠকে যোগ দিয়েছে ভারত, চিন, লাওস, কম্বোডিয়া। সূত্রের খবর, বাংলাদেশ চাইছে, মায়ানমারে বিদ্রোহীদের আলোচনায় বসাতে উদ্যোগী হোক অন্য দেশগুলো। ভারত ও চিন সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছে। আসলে চিন নিজেই মায়ানমারে বিদ্রোহীদের সঙ্গে কথাবার্তা চালাচ্ছে। এই অবস্থায় তাঁরা কিছুতেই হঠকারি কিছু করবে না।
এক কথায়, মায়ানমার নিয়ে বাংলাদেশ চাপে। প্রবল চাপে। গত ৯ ডিসেম্বর আরাকান আর্মি দাবি করেছিল, বাংলাদেশ-মায়ানমার সীমান্তে মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশ তাঁদের দখলে এসেছে। তখনই আশঙ্কা করা হয়েছিল, বাংলাদেশে অচলাবস্থার সুযোগে আরাকান আর্মি হয়তো বাংলাদেশেও ঢোকার চেষ্টা করবে। কেননা, মায়ানমারের মতো বাংলাদেশের সীমান্ত এলাকাতেও সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ। আর সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগকে সামনে রেখেই মায়ানমারে জুন্টা সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই চালাচ্ছে আরাকান আর্মি। তার থেকেও বড় কথা, বাংলাদেশের জমিতে ঘাঁটি তৈরি করতে পারলে আরাকান আর্মির কৌশলগত অবস্থান মজবুত হয়। সেনাঘাঁটি তৈরি, অস্ত্র সরবরাহের বিকল্প রুট, অস্ত্র মজুত – রয়েছে একাধিক। বিদেশের একদল লোক এসে জমি দখল করে নিচ্ছে। যা নিয়ে এবার ক্রমশ চিন্তা বাড়ছে বাংলাদেশের। ভারতবিরোধীতায় মন দিতে গিয়ে নিজেই গেরোয় পড়েছে ইউনূস সরকার, মত ওয়াকিবহাল মহলের।