ঢাকা: উপকূলে ভেসে এল এক রহস্যময় ট্রলার। ট্রলারটির মধ্য থেকে উদ্ধার হল ১০টি অর্ধগলিত মরদেহ। অধিকাংশ দেহই রয়েছে হাত-পা বাঁধা অবস্থায়। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার (২৩ এপ্রিল), বাংলাদেশের কক্সবাজারের নাজিরারটেক এলাকায়। কক্সবাজার দমকল বিভাগের কর্তা খান খলিলুর রহমান জানিয়েছেন, ট্রলারে মাছ রাখার যে ফ্রিজ বা বিশেষ কক্ষ থাকে, সেখানেই দেহগুলি রাখা ছিল। তাঁদের মতে, এটা কোনও দুর্ঘটনা নয়, পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। হত্যার পরই অজ্ঞাত পরিচয় দুষ্তীরা দেহগুলি ওই বিশেষ কক্ষে ঢুকিয়ে রেখেছিল বলে অনুমান করা হচ্ছে। খান খলিলুর রহমান আরও জানিয়েছেন, মরদেহগুলো বাজে ভাবে পচে-গলে গিয়েছে। তাই এখনও পর্যন্ত মৃতদের শনাক্ত করা যায়নি। উদ্ধারের পর, মরদেহগুলি কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
সূত্রের খবর, কক্সবাজারের স্থানীয় বাসিন্দারা দিন দুয়েক আগেই উপকূল থেকে গভীর সাগরে ওই আধ ডোবা অবস্থায় ট্রলারটি ভাসতে দেখেছিলেন। শনিবার ছিল ইদ-উল-ফিতর। ওই রাতেই তারা ট্রলারটিকে টেনে নাজিরারটেক পয়েন্টে নিয়ে এসেছিলেন। ট্রলারটি উপকূলের কাছে আনার পরই, সেটির ভিতরে পচা-গলা দেহগুলি দেখতে পান তাঁরা। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় পুলিশকে। পরে পুলিশ ও দমকল কর্মীরা মরদেহগুলি উদ্ধার করেন। অর্ধডুবন্ত ট্রলারটিতে আরও দেহ থাকার আশঙ্কা করছেন তাঁরা। দেহগুলির অবস্থা দেখে মনে করা হচ্ছে, অন্তত দিন পনেরো আগে তাদের হত্যা করা হয়েছে।
প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, ট্রলারটির সম্ভবত গভীর সমুদ্রে জলদস্যুদের খপ্পরে পড়েছিল। দস্যুরাই ট্রলারে থাকা মাছ, মাছ ধরার সরঞ্জাম ইত্যাদি লুঠ করে মৎস্যজীবীদের হাত–পা বেঁধে ট্রলারে মাছ ও বরফ সংরক্ষণের কক্ষে ঢুকিয়ে দিয়েছিল। পরে, ট্রলারটিকে সাগরে ডুবিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু, ঢেউয়ের টানে ভাসতে ভাসতে সেগুলি উপকূলে চলে এসেছে।
স্থানীয় থানার ভারপ্রাপ্ত ওসি রফিকুল ইসলাম বলেছেন, “ট্রলারটি এখনও সাগরে অর্ধনিমজ্জিত অবস্থায় রয়েছে। পুলিশ উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে। ট্রলারের ভিতরে থাকা দেহগুলি পচে গিয়েছে। মনে হচ্ছে, বেশ কিছু দিন আগেই নৌকোটিতে হামলা চালানো হয়েছিল।” কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমান জানিয়েছেন, সপ্তাহ দুই আগে কক্সবাজারের মহেশখালী এলাকা থেকে ১৬ জন জেলে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন। এই মরদেহগুলি তাঁদেরও হতে পারে। এই বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।