ঢাকা: ‘সাত তারিখ ভোট দিতে যায়েন, নৌকা মার্কায়।’ তারপর হাতে থাকা লিফলেটের ছবিটা দেখিয়ে বলছেন, ‘এই যে ছেলেটা এইডা আমি। আপনি চেনেন আমারে?’ বক্তা, বাংলাদেশের ক্রিকেট দলের অধিনায়ক, বিশ্বের এক নম্বর অল রাউন্ডার সাকিব আল হাসান। আসন্ন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে, মাগুড়া ১ আসনে আওয়ামি লিগের প্রার্থী হয়েছেন তিনি। ভোর থেকে দুপুর, সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত – ভোটের ময়দানে ক্লান্তিহীনভাবে ছুটে চলেছেন তিনি। আর যেখানেই যাচ্ছেন, তাঁকে কেন্দ্র করে জমে যাচ্ছে মানুষের ভিড়। এতদিন যাঁকে টিভিতে খেলতে দেখেছেন, একের পর এক ম্যাচ জেতাতে দেখেছেন, তাঁকে হাতের কাছে পেলে যা হয় আর কি! আর তাঁর এই বিপুল জনপ্রিয়তা দেখে স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, এই ভোট যেন সাকিবের কাছে ফ্রি-হিট। আউট হওয়ার সুযোগই নেই। তাঁর রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীরা কেউ ধোপেই টিকবেন না।
এতদিন, মন-প্রাণ ঢেলে দিয়েছেন ২২ গজে। রাজনীতির মাঠে সাকিবের পথ চলা সবে শুরু হয়েছে। আর শুরুতেই তিনি সুপারহিট। টিভির পর্দার নায়ক এখন মাগুরা ১ এলাকার মানুষেরঘরের লোক হয়ে উঠেছেন। দিনভর হাসিমুখে ভোটারদের সঙ্গে মিশে যাচ্ছেন বাংলাদেশি ক্রিকেট অধিনায়ক। দীর্ঘদিন ধরে জমে বিভিন্ন সমস্যার কথা শুনছেন মন দিয়ে। শুনছেন, সুবিধা বঞ্চিতদের আশা-আকাঙ্খা-আবদার। পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন সাকিব। এবার একটা কিছু বদল হবে ভেবে, তাঁকে ঘিরে বুক বাঁধছেন স্থানীয় মানুষ। সারাটা দিন কেটে যাচ্ছে, বিভিন্ন কর্মসূচি, অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদদের সঙ্গে কৌশল নিয়ে আলোচনা, জনসভা করার মতো বিভিন্ন কাজে। রাজনীতির ময়দানের পরিশ্রমটা যে ক্রিকেট মাঠের থেকে কম কিছু নয়, এই কয়েকদিনেই টের পেয়ে গিয়েছেন সাকিব।
রবিবার, বাংলাদেশের শাসক জোটের ১৪টি দলের মতবিনিময় সভা ছিষ সেখানেও অংশ নিয়েছিলেন সাকিব। যেখানে কিছুটা চুপচাপই ছিলেন বিশ্বের সেরা অলরাউন্ডার। রাজনীতিতে তিনি নতুন, তাই ,সম্ভবত অভিজ্ঞদের বক্তব্য থেকে শিখতে চেয়েছিলেন। তারপর তিনি যান, মাগুড়ার শাহপাড়ার হাটে। ভরা হাটে প্রত্যেকের সঙ্গে হাত মেলান তিনি। নিজে হাতে লিফলেট বিলোতে দেখা যায় তাঁকে। বিনা দ্বিধায় দোকানে দোকানে ঢুকে পড়েন সাকিব। অচেনা-অপরিচিত মানুষগুলোকে চাচা-চাচির মতো সম্বোধনে টেনে নিয়েছেন কাছে। আর ভোটারদের মন জিতে নিয়েই বাকি প্রতিদ্বন্দ্বিদের অনেকটাই পিছনে ফেলে দিয়েছেন তিনি। তাহলে কি ২২ গজের পর, এবার বাংলাদেশি সংসদেও ব্যাট ঘোড়ানোটা সাকিবের জন্য স্রেফ সময়ের অপেক্ষা?