ঢাকা: ২০২২ সালের জনগণনা অনুযায়ী, বাংলাদেশের খ্রিষ্টান জনসংখ্যা মেরেকেটে ৫ লক্ষ। দেশের জনসংখ্যার মাত্র ০.৩০ শতাংশ। এই সামান্য সংখ্যক খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী থাকলেও, বড়দিনে গোটা বিশ্বের মতোই উদযাপনে মাতল বাংলাদেশ। এই উপলক্ষে খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বী-সহ সকল দেশবাসীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান সেই দেশের রাষ্ট্রপতি মহম্মদ সাহাবুদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বড়দিন, খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বী-সহ সকলের জন্য অশেষ আনন্দ ও কল্যাণ নিয়ে আসবে এবং সকলের জীবন সুখ ও সমৃদ্ধিতে ভরে উঠবে বলে কামনা করেছেন।
শেখ হাসিনা তাঁর বার্তায় জানান, “বিশ্বব্যাপী খ্রিষ্ট ধর্মাবলম্বীরা যীশুখ্রিষ্টের জন্মদিনকে যথাযথ মর্যাদা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে ‘বড়দিন’ হিসেবে উদযাপন করেন। খ্রিষ্ট ধর্মানুসারে যীশু ছিলেন সত্যান্বেষী, মানবজাতির মুক্তির দূত এবং আলোর দিশারী। স্রষ্টা ও সৃষ্টির মধ্যে যোগাযোগ স্থাপনের পাশাপাশি পৃথিবীকে শান্তির আবাসভূমিতে পরিণত করতে তিনি সৃষ্টিকর্তার মহিমা ও শান্তির বাণী প্রচার করেছিলেন। এর জন্য তাঁকে অনেক নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছে। তিনি পথভ্রষ্ট মানুষকে সত্য ও ন্যায়ের পথে আসার আহ্বান জানিয়েছিলেন। ভালোবাসা, সেবা, ক্ষমা, মমত্ববোধ, সহানুভূতি, ন্যায় এবং শান্তিপূর্ণ অবস্থানের শিক্ষা দিয়েছিলেন তিনি।”
বাংলাদেশী প্রধানমন্ত্রী আরও জানান, বাংলাদেশ মুসলিম প্রধান দেশ হলেও, এটা একটা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। আবহমানকাল থেকে এই দেশে সকল ধর্মের মানুষ, তাঁদের নিজ নিজ ধর্ম ও আচার-অনুষ্ঠানাদি স্বাধীনভাবে পালন করেছেন। জাতির জনক ‘বঙ্গবন্ধু’ শেখ মুজিবুর রহমান এই অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ারই স্বপ্ন দেখেছিলেন।
বড়দিনে, বাংলাদেশী প্রধানমন্ত্রীর এই দাবি বাস্তবেও লক্ষ্য করা গিয়েছে। বড়দিনের বিশেষ প্রার্থনা উপলক্ষে, ২৪ ডিসেম্বর মধ্যরাতে বিভিন্ন গির্জায় ভিড় জমিয়েছিলেন খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের মানুষ। তবে, শুধু খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের মানুষই নন, অন্যান্য ধর্মেরও বহু মানুষর পা পড়েছিল গির্জায়। অনেকেই জানিয়েছেন, ভিন্ন ধর্মাবলম্বী হলেও, খ্রিষ্টান ধর্মকে জানতেই তাঁরা ক্রিসমাস ইভে গির্জায় এসেছেন। খ্রিষ্টান ধর্মের আচার-অনুষ্ঠানাদি সম্পর্কে জানতে এসেছেন।
মধ্যরাতের অনেক আগে থেকেই গির্জাগুলি সেজে উঠেছিল আলোয় আলোয়। ঘণ্টাধ্বণির মধ্য দিয়ে আসে বড়দিন। সোমবার, ঢাকা-সহ বাংলাদেশের বহু শহরেই দেখা গিয়েছে বড়দিনের পরিচিত মুখ, সান্টা ক্লজকে। দোকানে-বাজারে ছিল স্যান্টাদের উপস্থিতি। শিশুদের উপহার দিয়েছে সে। শিশুদের সঙ্গে তাঁদের বাবা-মায়েরাও সামিল হয়েছিলেন ক্রিসমাস পালনে। বিভিন্ন জায়গায় এই উপলক্ষে পার্টিরও আয়োজন করা হয়েছে। রাস্তায় রাস্তায় যুবক-যুবতীদের দেখা গিয়েছে সান্টা টুপি পরে উৎসবে মেতে উঠতে।