
ঢাকা : বাংলাকে (Bangla) পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক ভাষা করার প্রথম আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব আসে গণ আজাদি লীগের পক্ষ থেকে ১৯৪৭ সালের জুলাই মাসে। বাংলাকে পূর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় ভাষা করার লক্ষ্যে অধ্যাপক আবুল কাশেম, আবু রহমত, কাজি মোতাহর হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত হয় নতুন সংগঠন হিসাবে উঠে আসে তমদ্দুন মজলিস।
ভাষা সৈনিক চেমন আরা বলেন, “তমদ্দুন মজলিসের পক্ষ থেকে আমরা যে আন্দোলনটা করলাম সেটা ১৯৪৭ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকে শুরু হল। আমরা পোস্টার লিখতাম। দেওয়াল লিখতাম। এতলোক চারদিক থেকে আসত আমাদের থাকার জায়গা দেখে মনে হত সৈনিকের তাঁবু। একাধিক সংগঠনের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ও আন্দোলনের পুরোভাগে ছিল।” যখন উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তখন তার তাৎক্ষণিক প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্য়ালয় প্রাঙ্গনে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্ররা এসে জড়ো হয়। সেখানে অনুষ্ঠিত সভায় বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা এবং পূর্ব পাকিস্তানের শিক্ষার মাধ্যম ও সরকারি ভাষা হিসাবে নির্ধারণ করার দাবি জানানো হয়।
কিছুদিনের মধ্যে তৈরি হয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ। পরিষদের প্রথম প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক ছিলেন নুরুল হক ভুঁইয়া। অন্যান্য প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে ছিলেন শামসুল আলম, আবুল খয়ের, আব্দুল ওয়াহেদ চৌধুরী এবং ওলি আহাদ। পরবর্তীতে এই কমিটি ধারে-ভারে আরও বাড়ে। ১৯৪৮ সালের জানুয়ারি মাসে রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ও কলা অনুষদের সঙ্গে এক বৈঠকে দেশব্যাপী বাংলাকে আরও গুরুত্ব দেওয়ার কথা আলোচনা করা হয়। এর মাঝে শুরু হয় ছাত্রদের হরতাল আর গণগ্রেফতার। হরতাল চলার সময় গ্রেফতার হন ওলি আহাদ, শেখ মুজিবর রহমান সহ প্রায় ৬৯ জন। আন্দোলনের আগুনে আঁচে মিলেমিশে একাকার হয়ে যায় তরুণ ও প্রবীণ প্রজন্ম। একযোগে উঠতে থাকে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি।