ঢাকা: চলতি বছরেই বাংলাদেশের নির্বাচন। নির্বাচন যাতে অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে হয়, তার জন্য দেশের ভিতরে বাইরে চাপ রয়েছে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামি লিগ সরকারের উপর। ইতিমধ্যেই গতবারের নির্বাচন একপ্রকার বিরোধীশূন্য অবস্থায় করার জন্য সমালোচিত হাসিনা সরকার। তাই এইবার চার অনেক বেশি। কিন্তু, নির্বাচনের অনেক আগেই বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি-র (খাতায় কলমে না হলেও তারাই যে প্রধান বিরোধী শক্তি তা বলাই বাহুল্য) মাথাকেই নির্বাচনী সমীকরণ থেকে ছেঁটে ফেলল হাসিনা সরকার। নিকর্বচনের কয়েক মাস আগে বৃহষ্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি), বাংলাদেশের সরকার জানিয়ে দিল, আসন্ন নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়া। বাংলাদেশের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সরকারিভাবে এই কথা ঘোষণা করেন। তবে খালেদা জিয়ার রাজনীতি করাতে আইনত কোনও বাধা নেই বলেও জানান তিনি। তবে এই বিষয়ে তাঁর সঙ্গে একমত হননি বাংলাদেশ সরকারের মুখপাত্র তথা তথ্যমন্ত্রী হাসান মাহমুদ।
এদিন, বাংলাদেশের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানান, কারাদণ্ড হওয়ায় কারণেই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার যোগ্যতা হারিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপার্সন তথা বাংলাদেশের তিনবারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। বাংলাদেশের আইনমন্ত্রী বলেন, “যে দুটি শর্তে বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে, সেখানে বলা নেই যে তিনি রাজনীতি করতে পারবেন না।” খালেদা জিয়া দলীয় কার্যালয়ে গেলে বাধা দেওয়া হবে কী না, এই প্রসঙ্গে বাংলাদেশের আইনমন্ত্রী বলেছেন, “উনি কী করবেন আর কী করবেন না, সেটা সম্পূর্ণ তার ব্যাপার।” তবে বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী হাসান মাহমুদের মতে, খালিদা জিয়ার রাজনীতির করারও সুযোগ নেই। তিনি জানিয়েছেন, বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী, কারোর ২ বছর বা তার বেশি সময়ের কারাদণ্ড হলে তিনি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা তো করতে পারেনই না, রাজনীতিতেও অংশ নিতে পারেন না। তথ্যমন্ত্রী বলেন, “তাঁকে (খালেদা জিয়া) শর্তসাপেক্ষে ঘরে থাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তাঁর শারীরিক অবস্থা এবং বয়স বিবেচনা করে তাঁকে শর্তসাপেক্ষে কারাগারের বাইরে বাড়িতে থাকার অনুমতি দিয়েছে সরকার। সেই শর্ত অনুযায়ী তিনি রাজনীতিও করতে পারবেন না।”
বাংলাদেশের গত দুইবারের নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিয়েই প্রশ্ন রয়েছে। সেই প্রেক্ষিতে আগামী নির্বাচন কোনও নিরপেক্ষ সরকারের আওতায় করার দাবি জানিয়েছে বিরোধীরা। নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের চাপও রয়েছে। তবে, এই বিষয়ে আনিসুল হক বলেছেন, “২০১৪ আর ২০১৮ সালের নির্বাচন যাতে সুষ্ঠু না হয় সেই চেষ্টা করেছিল বিএনপি। তবে সংবিধান অনুযায়ী গত নির্বাচনের মতই আগামী নির্বাচন সুষ্ঠুভাবেই হবে। তবে কোনও আন্তর্জাতিক চাপে নয়, বরং গণতন্ত্রের প্রতি অঙ্গীকারের কারণেই সরকার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে বদ্ধপরিকর। এই কারনেই সংবিধান অনুযায়ী সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। সংবিধান থেকে একচুলও বাইরে যাবে না সরকার।”