Indian Village: এই একটি গ্রামের জন্য পাকিস্তানকে ১২ খানা গ্রাম দিয়ে দিয়েছিল ভারত, কী আছে হুসেনিওয়ালায়?
Indian Village: ফিরোজপুর জেলার অফিসিয়াল ওয়েবসাইট অনুসারে, ১৯৬২ সালে, ভারত সরকার সিদ্ধান্ত নেয় যে তারা ফাজিলকা জেলার ১২টি গ্রাম দিয়ে দেবে এবং হুসেনিওয়ালা গ্রাম নিয়ে নেবে পাকিস্তানের কাছ থেকে। এই বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে চুক্তি হয়।
নয়া দিল্লি: ভারত-পাকিস্তান সীমান্তের কাছেই আছে ফিরোজপুর শহরের অংশ হুসাইনিওয়ালা গ্রাম। ১৯৬২ সাল পর্যন্ত এই গ্রাম পাকিস্তানের অংশ ছিল। ১৯৬২ সালে দুই দেশের মধ্যে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল, যাতে ভারত সরকার ১২ খানা গ্রাম দিয়ে দিয়েছিল পাকিস্তানকে। জানা যায়, শুধুমাত্র হুসেনিওয়ালা গ্রাম অধিগ্রহণের জন্য পাকিস্তানকে ১২ টি গ্রাম দিতেও তারা দ্বিধাবোধ করেনি।
হুসেনিওয়ালা গ্রামের কী বিশেষত্ব আছে?
ব্রিটিশ সরকার বছরের পর বছর ভারতকে শুধু লুঠ করেছিল, তাই নয়, সেই সঙ্গে ভারতকে দু টুকরো করে দিয়েছিল। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান ও ভারত বিভক্ত হয়। এই বিভাজনে হোসেনিওয়ালা গ্রাম পাকিস্তানের অংশে চলে যায়। কিন্তু এই গ্রাম ভারতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আসলে, এই গ্রামে একই জায়গা রয়েছে স্বাধীনতা সংগ্রামী ভগত সিং, রাজগুরু এবং সুখ দেবের সমাধি।
হোসেনিওয়ালা জাতীয় শহীদ স্মৃতিসৌধ
১৯৬৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় হোসেনিওয়ালা জাতীয় শহীদ স্মৃতিসৌধ। ভগৎ সিং, সুখদেব এবং রাজগুরু ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন। এরপর তাঁকে গ্রেফতার করে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। ব্রিটিশরা ছিল আতঙ্কিত। তাই ব্রিটিশ সরকার নির্ধারিত তারিখের একদিন আগে ২৩ মার্চ লাহোর জেলে তিনজনকেই ফাঁসি দেয়। রাতের অন্ধকারে কারাগারের দেওয়াল ভেঙে গোপনে লাশগুলো নিয়ে যাওয়া হয় শহর থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে হোসেনিওয়ালা গ্রামে।
সেখানে সতলুজ নদীর কাছে কোনও রীতি ছাড়াই মৃতদেহগুলোকে পুড়িয়ে ফেলা হয় এবং তাদের দেহাবশেষ নদীতেই ফেলে দেওয়া হয়।
যতদিন হোসেনিওয়ালা গ্রাম প্রতিবেশী দেশের নিয়ন্ত্রণে ছিল, পাকিস্তান সরকার কখনই এই বীরদের স্মৃতিসৌধ নির্মাণের জন্য মাথা ঘামায়নি। ফিরোজপুর জেলার অফিসিয়াল ওয়েবসাইট অনুসারে, ১৯৬২ সালে, ভারত সরকার সিদ্ধান্ত নেয় যে তারা ফাজিলকা জেলার ১২টি গ্রাম দিয়ে দেবে এবং হুসেনিওয়ালা গ্রাম নিয়ে নেবে পাকিস্তানের কাছ থেকে। এই বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে চুক্তি হয়।
পরে ১৯৬৮ সালে সুতলুজ নদীর তীরে হোসেনিওয়ালা জাতীয় শহিদ স্মৃতিসৌধ প্রতিষ্ঠা করে। তবে চুক্তির পরও ১৯৭১ সালের যুদ্ধে পাকিস্তান আবারও এই জায়গা দখলের চেষ্টা করে। সেবারও তাদের উদ্দেশ্য ব্যর্থ হয়, কিন্তু পাকিস্তানি আর্মি যুদ্ধের সময় এই শহীদদের মূর্তিগুলো কেড়ে নেয়। ফিরোজপুরের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, আজ পর্যন্ত পাকিস্তান এই মূর্তিগুলো ফেরত দেয়নি।
হোসেনিওয়ালা গ্রামে এই বীরদের একটি সমাধিও রয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা বটুকেশ্বর দত্তের সমাধিও রয়েছে এই গ্রামে। বটুকেশ্বর দত্তও 1929 সালে ভগৎ সিং-এর সাথে কেন্দ্রীয় পরিষদে বোমা ফাটাতে জড়িত ছিলেন। বটুকেশ্বর দত্তের শেষ ইচ্ছা ছিল পাঞ্জাবের একই গ্রামে যেখানে তার কমরেড ভগত সিং, রাজগুরু এবং সুখদেবের সমাধি রয়েছে সেখানে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হয়। শহীদ ভগৎ সিং-এর মা বিদ্যাবতীকেও তাঁর ইচ্ছানুযায়ী এই জায়গায় দাহ করা হয়েছিল।