AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Libya floods: মুছে গেল শহরের ২৫ শতাংশ এলাকা, মৃত এখনই ২০০০; সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত লিবিয়া

Libya flood: মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) লিবিয়া সরকার এবং রেড ক্রসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ঝড়-বৃষ্টি ও বন্যার জেরে সারা দেশে অন্তত ১০,০০০ মানুষ নিখোঁজ। গত প্রায় এক দশকেরও বেশি সময় ধরে লিবিয়ায় গৃহযুদ্ধ চলছে। মরার উপর খাঁড়ার ঘায়ের মতো নেমে এসেছে এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়।

Libya floods: মুছে গেল শহরের ২৫ শতাংশ এলাকা, মৃত এখনই ২০০০; সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত লিবিয়া
লিবিয়ায় বন্যার ধ্বংসলীলাImage Credit: AFP
| Edited By: | Updated on: Sep 12, 2023 | 6:53 PM
Share

ত্রিপোলি:  লিবিয়ায় চরম বিপর্যয়। ভূমধ্যসাগরীয় ঝড় ‘ড্যানিয়েল’ এবং তার প্রভাবে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের জেরে ভেঙে গিয়েছে সেই দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের দু-দুটি বাঁধ। প্লাবিত দেশের একটা বিরাট অংশ। বিশেষ করে দেরনা শহরের প্রায় এক চতুর্থাংশ নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত প্রায় ২০০০ মানুষের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। শুধুমাত্র দেরনা শহরেই উদ্ধার করা হয়েছে অন্তত ১,০০০ মৃতদেহ। তবে, মৃতের সংখ্যা আরও অনেক বাড়বে বলে আশঙ্কা করছে স্থানীয় প্রশাসন। মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) লিবিয়া সরকার এবং রেড ক্রসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ঝড়-বৃষ্টি ও বন্যার জেরে সারা দেশে অন্তত ১০,০০০ মানুষ নিখোঁজ। গত প্রায় এক দশকেরও বেশি সময় ধরে লিবিয়ায় গৃহযুদ্ধ চলছে। মরার উপর খাঁড়ার ঘায়ের মতো নেমে এসেছে এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়।

উপকূলীয় শহর দেরনায়, প্রায় ১ লক্ষ ২৫ হাজার মানুষ বাস করেন। রয়টার্সের এক সাংবাদিক জানিয়েছেন, ঝড় ও বন্যায় শহরের এখন লন্ডভন্ড অবস্থা। রাস্তার ধারে পড়ে আছে উল্টে যাওয়া বাস-গাড়ি। জায়গায় জায়গায় গাছ ভেঙে পড়ে বন্ধ হয়ে গিয়েছে রাস্তা। প্লাবিত প্রায় গোটা শহর। লিবিয়ার অসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রী, হিচেম আবু চকিউয়াত জানিয়েছেন, সমুদ্র উপকূল, উপত্যকায়, বহুতল ভবনগুলির নীচে – দেরনা শহরের সর্বত্র মৃতদেহ পড়ে আছে। তিনি আরও জানিয়েছেন, শহরের ২৫ শতাংশ এলাকা একেবারে অদৃশ্য হয়ে গিয়েছে। শহর জুড়ে ভেঙে পড়েছে বহুতল বাড়ি। তাঁর আশঙ্কা সারা দেশে মৃতের সংখ্যা আড়াই হাজার ছাপিয়ে যাবে। কারণ ক্রমে নিখোঁজ মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব দ্য রেড ক্রস অ্যান্ড রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিজ-এর এক প্রতিনিধি দলের প্রধান, তামের রমাদান জানিয়েছেন, ১০,০০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে নিখোঁজ মানুষের সংখ্যা। দেরনায়, নিখোঁজ প্রায় ৬,০০০।

যত্রতত্র পড়ে দেহ

বিপর্যস্ত লিবিয়ার বেশ কিছু ছবি ও ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। সেগুলিতে দেখা যাচ্ছে বাঁধ ফেটে দেরনা শহরের ঠিক কেন্দ্রস্থল দিয়ে বন্যার জল বইছে। দুই পাশে দাঁড়িয়ে আছে বিভিন্ন বাড়ির ধ্বংসাবশেষ। তবে শুধু দেরনা নয়, স্থানীয় কর্তৃপক্ষের মতে, আশেপাশের এলাকাগুলিও আপাতত বন্যার জলে প্লাবিত। বহু মানুষ এখনও প্লাবিত বাড়িগুলির ভিতরে আটকে আছেন। ধ্বংসস্তূপের নীচেও বহু মানুষের জবিত বা মৃত অবস্থায় আটকে আছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। অনেকে বন্যার জলে সমুদ্রে ভেসে গিয়েছেন বলেও মনে করছে প্রশাসন।” জানা গিয়েছে, বন্যার জলের চাপে দুটি বাঁধ ভেঙে যাওয়াতেই দেরনা শহরের এত বেশি ক্ষতি হয়েছে। তিনটি সেতু, অসংখ্য বহুতল ও আরও বিভিন্ন পরিকাঠামো ভেঙে সমুদ্রে টেনে নিয়ে গিয়েছে বন্যার জল। বহু যানবাহন এবং ভেঙে পড়া বহুতলের উপর দিয়ে আবার বয়ে গিয়েছে কাদামাটির স্রোত। বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে টেলি যোগাযোগ। ফলে উদ্ধার প্রচেষ্টায় জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে।

অদৃশ্য দেরনা শহরের ২৫ শতাংশ এলাকা

প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, আসন্ন ঝড়ের প্রেক্ষিতে সরকারের পক্ষ থেকে যে সকল ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল, তা নেওয়া হয়নি। বিপর্যয়ের মাত্রা অনুমান করতে ব্যর্থ হয়েছে প্রশাসন। আবহাওয়া পরিস্থিতি ভালভাবে অধ্যয়ন করা হয়নি। সমুদ্রের জলের স্তর এবং বৃষ্টিপাতের পরিমান, বাতাসের গতি, ঝড়ের গতিপথ নিয়ে সতর্কতা গ্রহণ করা হয়নি। উপকূলবর্তী পরিবারগুলিকে নিরাপদ এলাকায় সরিয়েও নেওয়া হয়নি। অথচ, এই অতি শক্তিশালী নিম্নচাপ ব্যবস্থার জেরে গত সপ্তাহেই গ্রিসে ভয়ঙ্কর বন্যা দেখা দিয়েছিল। সেই নিম্নচাপ ব্যবস্থাই পরবর্তী সময়ে ক্রান্তীয় ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয় এবং লিবিয়ায় ধ্বংসযজ্ঞ চালায়।

এদিকে, লিবিয়ায় রাজনৈতিক সংঘাতের কারণে এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের উদ্ধার ও ত্রাণের কাজ ব্যাহত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। গত এক দশক ধরে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রশাসনের ক্ষমতার লড়াইয়ের সাক্ষী লিবিয়া। ২০১১ সালের ন্যাটো-সমর্থিত বিদ্রোহের পর পূর্ব-পশ্চিমে বিভক্ত হয়ে গিয়েছে এই দেশ। ভেঙে পড়েছে গণ পরিষেবা ব্যবস্থাগুলি। রাজধানী ত্রিপোলিতে যে সরকার রয়েছে, তাকে স্বীকৃতি দিয়েছে আন্তর্জাতিক মহল। তবে, পূর্বাঞ্চলের এলাকাগুলির উপর কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই এই প্রশাসনের। তবে, এই বিপর্যয়ের প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর মিসরাতা থেকে এক উড়ানে ত্রাণ সামগ্রি পাঠিয়েছে তারা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-সহ বিভিন্ন দেশও লিবিয়ার পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।