
কাঠমাণ্ডু: পড়শি দেশ নেপালে দুর্যোগ। নিম্নচাপের জেরে তুমুল বৃষ্টি, আর সেই বৃষ্টিতে নেপালে বিপর্যয়। বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে নেপালের কোশী, গণ্ডক, বাগমতীর মতো একাধিক নদী। এই জলে শুধুমাত্র নেপালের বিপদ নয়। নেপাল থেকে আসা জলে বিহারেও ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিরূপ আবহাওয়া পরিস্থিতিতে নেপালের অন্তর্বর্তী সরকার দুইদিনের ছুটি ঘোষণা করেছে।
ভারী বৃষ্টির জন্য রবিবার ও সোমবার সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। ৬ অক্টোবর পর্যন্ত উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্র সচিব রামেশ্বর দঙ্গল জানিয়েছেন যে সরকারি স্কুল, কলেজ, প্রতিষ্ঠান, অফিস সব বন্ধ থাকবে. তবে দুর্যোগ মোকাবিলার সঙ্গে যে বিভাগগুলি যুক্ত, তাদের কোনও ছুটি নেই।
ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কারকি জানিয়েছেন, আরও দুইদিন বৃষ্টি হওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। লাগাতার বৃষ্টির জেরে ধস, হড়পা বান, জমি ভাঙনের আশঙ্কা রয়েছে। নদীর জলস্তরও বিপদসীমা পার করছে। হু হু করে বাড়ছে জল। দেশের নাগরিকদের আশ্বাস দিয়ে সুশীলা জানান যে প্রশাসন সমস্ত পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে প্রস্তুত। পুলিশ, সেনা, স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে।
Tropical Depression BOB 07/01B is bringing extremely heavy rainfall and flooding across parts of north India, northeast India, and eastern Nepal. Tropical Storm BOB 07 made landfall in Prayagi, Odisha State, India, back on October 2nd ~0900 UTC. Since landfall, BOB 07 has moved… pic.twitter.com/g1FRGWunTe
— Forecast Frontier (@frontierfcst) October 4, 2025
বিগত দু-তিনদিন ধরেই নেপালে ভারী বৃষ্টি হচ্ছে নিম্নচাপের প্রভাবে। নেপালের বাগমতী এবং মাধেশ অঞ্চলের মধ্যে ১০টি স্থানে বৃষ্টিপাতের মাত্রা বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছেছে। শনিবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, রাউতাহাট জেলায় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সেখানে ২৪ ঘন্টায় ২৭০ মিমি এবং গৌড়ে ২৪৩.৬ মিমি বৃষ্টিপাত হয়েছে। পারসার মুডলিতে ২৩১.৮ মিমি, বীরগঞ্জে ২২১.৬ মিমি বৃষ্টি হয়েছে। কালাইয়ায় ২১০.৬ মিমি, নিজগড়ে ১৫৭.৮ মিমি এবং রাউতাহাটের গরুড়ে ১৯১.৮ মিমি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
লাগাতার বৃষ্টির জেরে সোমবার পর্যন্ত কাঠমান্ডুতে আসা-যাওয়া বন্ধ রেখেছে প্রশাসন। কাঠমান্ডু বিমানবন্দর থেকে অন্তর্দেশীয় উড়ানও বন্ধ রাখা হয়েছে। শনিবার সকাল থেকেই বিমান চলাচল বন্ধ ছিল। যাত্রীদের পরবর্তী ফ্লাইট বা টিকিট ফেরতের জন্য বিমানবন্দরে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
ধসে বিপর্যস্ত নেপালের বহু পাহাড়ি রুটও। আটকে পড়েছেন অনেক পর্যটক। তাদের আপাতত হোটেলে থাকার পরামর্শ দিয়েছে প্রশাসন। ইতিমধ্যেই সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে এবং লোকজনকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে।