Russia: রাগের ঠেলায় একের পর এক পরমাণু অস্ত্র প্রস্তুত করছেন পুতিন, স্যাটান থেকে ওরেশনিক
Russia: কয়েকদিন আগেই আমেরিকা আর ব্রিটেনের কাছ থেকে লং রেঞ্জ মিসাইল পেয়ে রাশিয়ায় দেগে দিয়েছেন জেলেনস্কি। তারই পাল্টা জবাবে এখন আর শুধু সীমান্ত এলাকা নয়, একদম কিভ লক্ষ্য করে মিসাইলের বন্যা বইয়ে দিচ্ছেন পুতিন।
মস্কো: ইউক্রেন যুদ্ধটা বোধহয় ট্রাম্প থামিয়েই দেবেন। অনেকেই এ কথা বলতে শুরু করেছেন। যুক্তি সহজ। ট্রাম্প ব্যবসা বোঝেন। তিনি যুদ্ধ জিইয়ে রাখবেন না। আর পুতিনের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক বেশ ভাল। খোদ পুতিনকেই বলতে শোনা গিয়েছে যে, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্প বিচক্ষণ মানুষ। আশা করি তিনি সঠিক পদক্ষেপ করবেন।’ পুতিনের বন্ধু বেলারুশের প্রেসিডেন্ট লুকাশেঙ্কো আবার এক পা এগিয়ে বলেছেন, যুদ্ধ থামাতে পারলে তিনি নোবেল কমিটির কাছে ট্রাম্পের নাম শান্তি পুরস্কারের জন্য সুপারিশ করবেন।
তবে, পরিস্থিতি যা দেখা যাচ্ছে, তাতে মনে হচ্ছে, নোবেলটা বোধহয় ফস্কে গেল। বাইডেনের বয়স হয়ে যাওয়া, হোঁচট খাওয়া, কথার খেই হারিয়ে ফেলা, সবার মাঝে ঘুমিয়ে পড়া। এ সব নিয়ে ট্রাম্প আর তাঁর সঙ্গীরা তো কম বিদ্রুপ করেননি। এখন যাওয়ার আগে বাইডেন, ট্রাম্পের রাস্তায় গুছিয়ে কাঁটা সাজিয়ে দিয়ে যাচ্ছেন। আর, তাঁদের ঝগড়ায় বিপদ বাড়ছে দুনিয়ার। পরমাণু যুদ্ধের বিপদ।
ইউক্রেনের হাতে পরমাণু অস্ত্র নেই। সোভিয়েত যখন ছিল, তখন সীমান্তের কাছে ইউক্রেনে ক্রেমলিনের শাসকরা নিউক্লিয়ার আর্মস মজুত করে রাখতেন, ইউরোপকে ভয় দেখানোর জন্য। সোভিয়েত ভাঙার পরে ইউক্রেনে থাকা পরমাণু অস্ত্রগুলো কৃষ্ণ সাগর আর বাল্টিক সাগরে ডুবিয়ে দেওয়া হয়। নিউইয়র্ক টাইমস নাম না করে তাদের হোয়াইট হাউসের সূত্রকে উল্লেখ করে জানিয়েছে যে বাইডেন যাওয়ার আগে জেলেনস্কিকে নিউক্লিয়ার আর্মস দিয়ে যাবেন বলে ঠিক করে ফেলেছেন। যাতে পরে ট্রাম্পকে তার ঠেলা সামলাতে হয়।
কয়েকদিন আগেই আমেরিকা আর ব্রিটেনের কাছ থেকে লং রেঞ্জ মিসাইল পেয়ে রাশিয়ায় দেগে দিয়েছেন জেলেনস্কি। তারই পাল্টা জবাবে এখন আর শুধু সীমান্ত এলাকা নয়, একদম কিভ লক্ষ্য করে মিসাইলের বন্যা বইয়ে দিচ্ছেন পুতিন। মিসাইল হানায় বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় প্রবল ঠাণ্ডায় বিনা ইলেকট্রিসিতে রাত কাটাচ্ছেন প্রায় ১০ লক্ষ ইউক্রেনবাসী। পুতিন বলেছেন, এবার কিভের বিভিন্ন সরকারি দফতরেও তিনি আগুনের ফুলকি ছোটাবেন।
আমেরিকা ইউক্রেনকে পরমাণু অস্ত্র দিচ্ছে, এ কথা সামনে আসার পর, পুতিনের রাগ আরও বেড়ে গিয়েছে। তিনি বলেছেন, ইউক্রেনকে শিক্ষা তো দেবই, ওদের ওয়েস্টার্ন পার্টনারদেরও ছাড়ব না। আর এরপর তিনি যে সমস্ত পদক্ষেপ করা শুরু করেছেন, তা সারা দুনিয়াকে চিন্তায় ফেলে দিয়েছে। একেবারে জোড়া ফলা নিয়ে তৈরি হচ্ছেন রুশ প্রেসিডেন্ট। নিউক্লিয়ার ওয়ারহেড-যুক্ত স্যাটান-২ আর ওরেশনিক মিসাইল। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের মতে স্যাটান-২ সারা দুনিয়ার অন্যতম শক্তিশালী ইন্টার-কন্টিনেন্টাল ব্যালিস্টিক মিসাইল, যা কিনা বিশ্বের যে কোনও এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমকে ফাঁকি দিতে সক্ষম।
বোঝাই যাচ্ছে, পড়শি দেশ ইউক্রেনের জন্যই শুধু নয়, পুতিন তাঁর আইসিবিএম তৈরি রাখছেন দূরের শত্রুদের জন্যও। চিন্তা তো সেখানেই। একবার, নানা পক্ষের মধ্যে বড় যুদ্ধ বেঁধে গেলে থামাবে কে! রুশ প্রেসিডেন্ট তাঁর দেশের ডিফেন্স ম্যানুফ্যাকচারারদের নির্দেশ দিয়েছেন স্যাটান-২-এর উৎপাদন বাড়াতে হবে।
দিনকয়েক আগেই, ইউক্রেনে ওরেশনিক ছুড়ে ট্রেলার দেখিয়েছেন পুতিন। ইউক্রেন এখন আমেরিকার তৈরি, প্যাট্রিয়ট এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম ব্যবহার করে। প্যাট্রিয়ট ওরেশনিককে আটকাতে পারেনি। মাঝারি পাল্লার এই ক্ষেপণাস্ত্রের গতি শব্দের চেয়ে ১১ গুণ বেশি। অর্থাৎ এটি হাইপারসনিক মিসাইল। এর ৬টা ওয়ারহেড রয়েছে। তাই, প্রিশিসন অ্যাটাকে কোনও ভুলচুক হলেও ওরেশনিক মেন টার্গেট ছাড়াও আশাপাশের সবকিছু গুঁড়িয়ে দেবে। সহজভাবে বলা যেতে পারে, রাশিয়ার এই মিসাইলের আওতায় আছে গোটা ইউরোপ। পুতিন নিজেই সে কথা মনে করিয়ে দিয়েছে। আর যার ফলে ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে চিন্তা বাড়ছে। রুশ প্রেসিডেন্টের তুণীরে আর কী কী তির আছে, সেটা নিয়ে আতঙ্কে আমেরিকাও।