
TV9 বাংলা ডিজিটাল: ১২১ ফুট লম্বা। দীর্ঘ, স্ফীত লেজ নিয়ে পাহাড়ের গায়ে হেলান দিয়ে শুয়ে আছে। গোল গোল চোখের দৃষ্টি যেন অপলক। পেরুতে (Peru) পাহাড়ের গায়ে খোদাই করা ২ হাজার বছর পুরনো এই দানবীয় বিড়ালের ছবিই এখন পৃথিবীর বিস্ময়। সম্প্রতি পেরুর নাজকা লাইনে (Nazca Lines) রাস্তা বানাতে গিয়ে আবিষ্কার হল এই সুপ্রাচীন কারুকার্য।
দক্ষিণ আমেরিকার পেরুর এই নাজকা লাইনের সন্ধান প্রথম পাওয়া যায় ১৯২৭ সালে। ১৯৯৪ সালে ইউনেস্কো (UNESCO) রাজধানী লিমা (Lima) থেকে সাড়ে ৪০০ কিলোমিটার দূরে সাউথ প্যান-আমেরিকান হাইওয়ের পাশেই এই নাজকা লাইনকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ ঘোষণা করে। সেখানেই এবার আবিষ্কৃত হল পাহাড়ার গায়ে খোদাই করা ২ হাজার বছর পুরনো বিড়ালের ছবি। সে দেশের সংস্কৃতি মন্ত্রকের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, পাহাড়ের গায়ে খোদাই করা আউটলাইনগুলো প্রায় ১২ থেকে ১৫ ইঞ্চি পুরু। এই শিল্পকর্ম তৈরি হয়েছে ইচিং পদ্ধতিতে।
নাজকা লাইনের বৈশিষ্ট কী?
পেরুর নাজকা লাইন পৃথিবীখ্যাত তার জিওগ্রাফের জন্য। প্রত্নতাত্ত্বিকদের মতে, ওই অঞ্চলের মানুষ পাহাড়ের গায়ে খোদাই করে সেই সময়ের সংস্কৃতির ছাপ রেখে গিয়েছে। পাথর, কাঠ দিয়েই তৈরি হয়েছে এই শিল্পকর্মগুলো। ছবিগুলোর আকার এতো বিশাল যে আকাশপথ ছাড়া তা পুরোপুরি দেখা সম্ভব নয়। এই শিল্পকর্মের মধ্যে দিয়ে আদিম মানুষ আসলে কী বোঝাতে চেয়েছে তা প্রত্নতত্ত্বে আজও রহস্য হয়েই থেকে গিয়েছে। ২ হাজার বছর আগে আঁকা গাছ ও জীবজন্তুর ছবির রহস্য এখনও অধরা। ত্রিভুজ, চতুর্ভুজের মতো জ্যামিতিক চিহ্ন কী কোনও বিশেষ আকার ইঙ্গিত করছে, নাকি এর মধ্যে রয়েছে জ্যোতির্বিদ্যা, নাজকা লাইন নিয়ে প্রত্নতাত্ত্বিকদের অবিরাম অনুষন্ধান চলছেই।
অতীতে এই নাজকা লাইনেই আবিষ্কৃত হয়েছে আমেরিকার বিশেষ প্রজাতির পাখি পেলিকানসের ৯৩৫ ফুটের ছবি। এছাড়াও আরও পাওয়া গিয়েছে ৩৬০ ফুট বানর, ১৬৫ ফুটের হামিংবার্ডস ও ১৫০ ফুট মাকড়সারও শিল্পকার্য। ভ্রমণ পিপাসুদের কাছে পেরুর এই নাজকা লাইন আগাগোড়াই লোভনীয়। এটি বিখ্যাত পাহাড়ারে গায়ে খোদাই করা ‘লার্জার দ্যান লাইফ’ শিল্পকর্মের জন্য। অনুমান, এই সমস্ত শিল্পই আজ থেকে প্রায় ২ হাজার বছর পুরনো, ৫০০ খ্রিস্টপূর্ব থেকে ২০০ খ্রিস্টাব্দ সময়ের।