AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Donald Trump: ডোনাল্ড ট্রাম্প কি আসলে ভেকধারী রুশ গুপ্তচর?

এই বিতর্ক প্রথম উস্কে দেয় জন্যপ্রিয় পত্রিকা 'দ্য গার্ডিয়ান'। প্রাক্তন কেজিবি গুপ্তচর ইউরি শেটস ওই পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ঠিক এই কথাই বলেন কয়েকবছর আগে। তাঁর দাবি তো আরও মারাত্মক। ইউরি ১৯৮০-তে ওয়াশিংটনে মোতায়েন ছিলেন তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের হয়ে।

Donald Trump: ডোনাল্ড ট্রাম্প কি আসলে ভেকধারী রুশ গুপ্তচর?
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Mar 07, 2025 | 4:16 PM

দীপেন্দু পাল

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কি আসলে রুশ গুপ্তচর সংস্থা কেজিবি-র একজন স্পাই বা চর? তাঁকে কি ১৯৮৭-তে নিয়োগ করেছিল মস্কো? ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিকে কার্যত ঘাড়ধাক্কা দিয়ে ওভাল অফিস থেকে বার করে দেওয়ার পর থেকে এই প্রশ্ন ঘিরেই তোলপাড় আন্তর্জাতিক মহল!

এটা ঘটনা যে, ট্রাম্পের আগে কোনও মার্কিন প্রেসিডেন্টই রাশিয়ার প্রতি এতটা ‘সহানুভূতি’ দেখাননি। জেলেনস্কিকে ওভাল অফিসে বসিয়ে ট্রাম্প দৃশ্যতই তাঁকে রাশিয়ার সঙ্গে শান্তিস্থাপনে জোর করেন। ট্রাম্পের ওই আচরণ দেখেও প্রশ্ন উঠে গেছিল, যে আদতে কি মার্কিন প্রেসিডেন্টের মসনদে বসে ভেকধারী এক কেজিবি গুপ্তচর? তার উপর আবার কাজাখাস্তানের গোয়েন্দা দফতরের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান অ্যালনুর মুসায়েভ যে বিস্ফোরক সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট করেছেন সম্প্রতি, সেই পোস্ট এই বিতর্কের আগুনে যেন ঘি ঢেলেছে!

তাঁর দাবি, ১৯৮৭-তে সবান্ধবে মস্কো-য় যান ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই সময়ই কেজিবি-র লোভনীয় প্রস্তাব এড়াতে পারেননি ট্রাম্প। ৪০ বছরের কাছাকাছি সময় ধরে ট্রাম্পকে নাকি কার্যত লালনপালন করে এসেছে রাশিয়া। কারণ, পুতিনের কাছে ট্রাম্প নাকি একজন ‘অ্যাসেট’। এমনিতেই নারী ও সুরার প্রতি ট্রাম্পের যে মোহ রয়েছে, সেই অভিযোগ বারবার তুলেছেন তাঁর একদা সঙ্গীরা। মস্কো নাকি সেই সময় ঠিক ওই নরম জায়গাতেই মোক্ষম আঘাত হানে। রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কাছে নাকি ট্রাম্পের যাবতীয় ফাইল রয়েছে। যদিও অ্যালনুর তাঁর দাবির স্বপক্ষে কোনও নথি বা ভিডিও পেশ করতে পারেননি। কিন্তু ট্রাম্পের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ মোটেও নতুন নয়।

এই বিতর্ক প্রথম উস্কে দেয় জন্যপ্রিয় পত্রিকা ‘দ্য গার্ডিয়ান’। প্রাক্তন কেজিবি গুপ্তচর ইউরি শেটস ওই পত্রিকাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ঠিক এই কথাই বলেন কয়েকবছর আগে। তাঁর দাবি তো আরও মারাত্মক। ইউরি ১৯৮০-তে ওয়াশিংটনে মোতায়েন ছিলেন তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের হয়ে। তিনি বলেন, ‘একেবারে ছাত্রাবস্থা থেকে বাছাই করা কয়েকজনকে রুশ গুপ্তচর সংস্থা কেজিবি বিশেষ প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করে। যাতে, তাঁরা পরবর্তীতে অন্য দেশে বড় পদে বসলে রাশিয়ার সুবিধা হয়। ঠিক যেমনটা হয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষেত্রে।’

আশির দশকে ইউরি কেজিবির একজন মেজর পদাধিকারী ছিলেন। ওয়াশিংটনে কাজ করতেন ছদ্ম পরিচয়ে। রুশ সংবাদসংস্থা টাস-এর একজন রিপোর্টার হিসাবে। ১৯৯৩-তে তিনি পাকাপাকি মার্কিনি নাগরিকত্ব পান ও বিশিষ্টজনদের নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসাবে কাজ শুরু করেন। তিনি তাঁর বইতে লিখেছেন, ১৯৭৭-তে ট্রাম্প এক পাকা ব্যবসায়ী হিসাবে প্রথমবার রাশিয়ার নজরে আসে। ট্রাম্প তখন সদ্য বিয়ে করেছেন চেক প্রজাতন্ত্রের মডেল-বান্ধবী ইভানা জেলনিকোভাকে। সেই সময় রুশ ও চেক গুপ্তচর সংস্থা একসঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করত। তখনই প্রথম কেজিবির নজর পরে ট্রাম্পের উপর।

তিন বছর পর, ট্রাম্প যখন গ্র্যান্ড সেন্ট্রাল স্টেশনের কাছে জীবনের প্রথম বড় প্রকল্প ‘দ্য গ্র্যান্ড হায়াত নিউ ইয়র্ক হোটেল’ খোলেন, সেই সময়ই ওই হোটেলের জন্য ট্রাম্প ২০০টি টেলিভিশন সেট কেনেন কিসলিন বলে একজনের কাছ থেকে। যাঁর সঙ্গে আবার কেজিবির পুরনো সম্পর্ক ছিল। ১৯৮৭-তে ট্রাম্প ও ইভানা একসঙ্গে মস্কো ও সেন্ট পিটার্সবার্গে যান। তখনই কেজিবি তাঁকে বোঝায় ট্রাম্পের রাজনীতিতে আসা উচিত। প্রয়োজনে রাশিয়া সবরকমভাবে পাশে দাঁড়াবো বলেও নাকি আশ্বাস দেওয়া হয় কেজিবির তরফে। কেজিবির ট্রাম্পকে বিশেষ পছন্দ ছিল কারণ ট্রাম্পকে বোকা বানিয়ে কাজ হাসিল করাটা যে সহজ সেটা রুশ গুপ্তচরের বুঝতে পেরে গিয়েছিলেন, দাবি শেটসের।

এখন ঘটনা হল, রাশিয়া থেকে ঘুরে আসার পরেই ট্রাম্প রাজনীতিতে উৎসাহ দেখতে শুরু করেন ও নামিদামি কাগজে পাতাজোড়া বিজ্ঞাপন দিতে শুরু করেন। প্রাক্তন কেজিবি গুপ্তচরের দাবি, ২০১৬-তে ট্রাম্প প্রথমবার মার্কিন মসনদে বসার পর নাকি মস্কোয় আতশবাজি ফাটানো হয়। মার্কিন মিডিয়ার একাংশে খবর প্রকাশিত হয়, ট্রাম্পের জন্য নির্বাচনে রুশ হ্যাকাররা নাকি কাজ করেছিল বলে অভিযোগ। যদিও সেই অভিযোগের সত্যতা হোয়াইট হাউস স্বীকার করেনি। কিন্তু এবার ইউক্রেনকে রাশিয়ার সঙ্গে শান্তি চুক্তিতে সই করতে চাপ দেওয়াকে কেন্দ্র করে সেই পুরনো বিতর্কই আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠল।