
১ ফেব্রুয়ারি ২০২২ এ অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন সংসদে দেশের সাধারণ বাজেট পেশ করবেন। কিন্তু আপনারা কি জানেন বহু বছর আগে পর্যন্ত ফেব্রুয়ারির প্রথমদিন নয়, বরং শেষদিন বাজেট পেশ করা হত। অর্থাৎ ২৮ ফেব্রুয়ারি অথবা ২৯ ফেব্রুয়ারি তারিখে। এই পরম্পরা স্যার বেসিল ব্ল্যাকেট ১৯২৪ সালে শুরু করেছিলেন যা ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত বজায় ছিল।

২৮-২৯ তারিখ বিকেল ৫টাতেই কেন বাজেট পেশ?১৯২৪ থেকে ১৯৯৯ পর্যন্ত ফেব্রুয়ারি মাসের শেষদিন বিকেল পাঁচটায় কেন্দ্রীয় বাজেট পেশ করা হত। এর পেছনে কারণ হল, সারা রাত জেগে অর্থনৈতিক লেখাজোখা তৈরি করা আধিকারীকদের বিশ্রাম দেওয়া। ২৮ বা ২৯ ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ কাজের দিন হত। এর পরের দিন আধিকারীকরা বিশ্রাম করতেন।

কেন্দ্রীয় বাজেট ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ কর্ম দিবসে বিকেল ৫টায় ঘোষণা করার এই অভ্যাস ঔপনিবেশিক সময়কাল থেকেই ভারত উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছিল। আসলে ব্রিটিশ সংসদে বাজেট দুপুরে পেশ করা হত, কিন্তু ভারতে বিকেলে বাজেট পেশ করা হত। এর পেছনে সময়ের যোগ রয়েছে।

ব্রিটিশ যোগাযোগ: ইংরেজদের সুবিধার জন্য বিকেলবেলা বাজেট পেশ করা হত। আসলে ভারতে যখন ৫টা বাজত সেই সময় ব্রিটেনের রাজধানী লন্ডনের সময় হত সকাল ১১.৩০ মিনিট। লন্ডনের হাউজ অব লর্ডস আর হাউজ অব কমন্সে বসে সাংসদরা ভারতের বাজেট ভাষণ শুনতেন।

লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জও (LSE) সেই সময়ই খুলত। এই অবস্থায় ভারতে ব্যবসা করা কোম্পানিদের স্বার্থ এই বাজেট থেকে ঠিক হত। ব্রিটেনেও কোম্পানিগুলির মনোযোগ ব্রিটিশ ইন্ডিয়ার বাজেটের উপর থাকত। তবে স্বাধীনতার পরও ফেব্রুয়ারির শেষদিন বিকেল ৫টায় বাজেট পেশ করার এই পরম্পরা বজায় ছিল।

NDA প্রথম এই পরম্পরা পরিবর্তন করে। যশবন্ত সিনহা বিকেল ৫টায় ব্রিটিশ ইন্ডিয়ার বাজেট পেশের এই পরম্পরাকে ভাঙেন। দেশের নিজস্ব সংবিধান চালু হওয়ার ৫০ বছর পর এই পরম্পরাকে ভাঙা হয়। ২০০০ সালে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী যশবন্ত সিনহা সকাল ১১টায় দেশের কেন্দ্রীয় বাজেট পেশ করে এই ধারাবাহিকতা ভাঙেন। যা সম্পূর্ণ ভারতীয় সময়ানুসার আর ভারতীয় পরম্পরার অনুরূপ ছিল।