
মুম্বই: হঠাৎ আরবিআইয়ের নিষেধাজ্ঞা। নিউ ইন্ডিয়া কোঅপারেটিভ ব্যাঙ্কের আর্থিক লেনদেনের উপরে সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। গ্রাহকরা পড়েছেন মহা সমস্যায়। তারা টাকা তুলতে পারছেন না অ্যাকাউন্ট থেকে। ব্যাঙ্কে জমা রাখা টাকার কী হবে, তা নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন তারা। কিন্তু কেন হঠাৎ একটা ব্যাঙ্কের উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করল আরবিআই? তদন্তে উঠে এল ১২২ কোটি টাকা ‘উধাও’র গল্প।
১৩ ফেব্রুয়ারি রিজার্ভ ব্যাঙ্ক নিউ ইন্ডিয়া কোঅপারেটিভ ব্যাঙ্কের উপরে আর্থিক লেনদেনে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। জানা গিয়েছে, নিউ ইন্ডিয়া কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের এক কর্মীর বয়ানেই রিজার্ভ ব্যাঙ্ক বড় আর্থিক তছরুপের খোঁজ মিলল। তিনি জানিয়েছেন, গত ১২ ফেব্রুয়ারি রুটিন মাফিক অডিট চলছিল, তখনই রিজার্ভ ব্য়াঙ্কের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার ও আধিকারিকরা ব্যাঙ্কের প্রভাদেবী ও গোরেগাঁও ব্রাঞ্চে আর্থিক বেনিয়ম লক্ষ্য করেন।
ব্যাঙ্ক কর্মী অতুল মাহাত্রের কাছ থেকে চাবি নিয়ে ব্যাঙ্কের তৃতীয় তলায় থাকা লকার খোলা হয়। ওই সময়ই আরবিআই-র আরেকটি টিম গোরেগাঁও ব্রাঞ্চের লকারে গিয়ে পৌঁছয়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে টাকা গোনা ও বাকি সম্পত্তির হিসাব করে দেখা যায়, মোটা অঙ্কের টাকা উধাও। এদিকে রেজিস্টারে সেই টাকার উল্লেখ রয়েছে। তাহলে সেই টাকা কোথায় গেল?
এরপরই আরবিআই নিউ ইন্ডিয়া কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের সিনিয়র কর্মীদের তলব করা হয়। জানানো হয়, ব্যাঙ্কের ১২২ কোটি টাকা উধাও। এর কোনও হদিস মিলছে না, অথচ রেজিস্টারে এই বিপুল টাকার উল্লেখ রয়েছে। গোরেগাঁও ব্রাঞ্চ থেকেও টাকা কম পড়ছে। কর্মীরা এই বিষয়ে কিছু জানেন কি না, তাও জানতে চাওয়া হয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তরফে।
পরে ব্যাঙ্কের প্রাক্তন জেনারেল ম্যানেজার হিতেশ মেহতাকে তলব করা হয়। দীর্ঘক্ষণ জেরার পর আরবিআই আধিকারিকদের কাছে অপরাধ স্বীকার করে নেন। জানা যায়, ১২২ কোটি টাকার আর্থিক তছরুপ করেছেন তিনি। করোনাকাল অর্থাৎ ২০২০ সাল থেকে তিনি ব্যাঙ্ক থেকে টাকা সরাতে শুরু করেন। নিজের চেনা-পরিচিতদের টাকা ধার দিতেন। এভাবেই আর্থিক তছরুপ করছিলেন বিগত ৫ বছর ধরে।
প্রথমে দাদার পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়, এরপর মুম্বই পুলিশের ইকোনমিক অফেন্স উইংয়ের হাতে মামলার তদন্তভার হস্তান্তরিত করা হয়। শনিবার তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।